খবর২৪ঘন্টা ডেস্ক: বাংলাদেশ এখন দুর্নীতির জন্য সারা বিশ্বের কাছে রোল মডেল দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এরা স্বর্ণের মেডেল থেকে স্বর্ণ চুরি করে। করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত মানুষের জন্য বরাদ্দ ত্রাণের চাল চুরি করে। নকল মাস্কের ব্যবসায়ও রোল মডেল হয়েছে। এখন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ওপর ২০০ টাকা ফি আরোপ করার সিদ্ধান্তও বিস্ময়কর।’
শনিবার (৪ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয় থেকে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘করোনা ভাইরাস মহামারির চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব রাষ্ট্রের। বিশ্বের কোথাও সরকারিভাবে কোভিড টেস্টে অর্থ নেওয়া হয় না। সবচেয়ে বেশি কোভিড টেস্টের রেকর্ড দক্ষিণ কোরিয়ার। তারা দিনে এক লাখের ওপর মানুষের কোভিড টেস্টও করেছে। এমনকি এন্টিবডি টেস্টও করেছে।
তাদের সমস্ত টেস্টই বিনামূল্যে করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে গরিব দেশ আফগানিস্তানে কোভিড টেস্ট বিনামূল্যে করা হচ্ছে। এমনকি বিশ্বের সবচয়ে গরিব দেশ পশ্চিম আফ্রিকার বুরকিনা ফাসোতে কোভিড টেস্ট বিনামূল্যে করা হয়। আমাদের প্রতিবেশী কোনো দেশেই টেস্ট করতে ফি নেয় না।
উপরন্তু প্রায় প্রতিটা দেশের সরকার স্বেচ্ছাসেবীদের ঘরে ঘরে পাঠাচ্ছে নমুনা সংগ্রহে। টেস্ট করাতে জনগণকে উৎসাহিত করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। আর আমাদের দেশের শাসকগোষ্ঠী এ মহামারিকেও বানিয়েছে মুনাফা অর্জনের উপলক্ষ। এরা কতটা অমানবিক তার নিকৃষ্টতম প্রমাণ এ ফি ধার্য।’
তিনি বলেন, ‘এমনিতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সরকার নির্ধারিত সাড়ে তিন হাজার টাকায় কোভিড টেস্ট করছে না। যে যার মতো পাঁচ-ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত জনগণের পকেট কেটে নিচ্ছে। সরকার তা নিয়ন্ত্রণের কোনো চেষ্টাই করছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমস্ত মনোযোগ দুর্নীতি আর লুটপাটে।’
রিজিভী বলেন, ‘কোনো নাগরিক যদি টাকার অভাবে টেস্ট করতে না পেরে নিজ দেহে করোনা ভাইরাস বহন করে বেড়ান তাহলে তিনি শুধু নিজেরই ক্ষতি করছেন না, অন্যের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবেন।
এ কারণেই বিষয়টি নাগরিকদের দায়-দায়িত্বের ওপর ছেড়ে না দিয়ে বরং এটি রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব, জনস্বার্থে রাষ্ট্র নিজ উদ্যোগে নাগরিকদের বিনামূল্যে করোনা ভাইরাস টেস্ট করানোর সুযোগ সহজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে ফি বাতিল করে বিনামূল্যে নাগরিকদের করোনা ভাইরাস টেস্টের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। অবিলম্বে সারা দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও করোনা টেস্টের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। এককভাবে না পারলে প্রয়োজনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা নিন। জনগণের জীবন নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না।’
খবর২৪ঘন্টা /এএইচআর