নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপি’র জোয়ার দেখে সরকার দলীয় প্রার্থী ভীত হয়ে পড়েছে। তিনি এখন নির্বাচন বাদ দিয়ে বিএনপি দমনে উঠে পড়ে লেগেছেন। আইনশৃংখলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছেন। নিজের প্রতি আত্ম বিশ্বাস না থাকায় তিনি এই ঘৃন্য পথ বেছে নিয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে নগরীর ২৯নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ কালে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতকারে এই কথাগুলো বলেন। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে হাইব্রিড নেতাকর্মীরা থাকায় আসল নেতারা লিটনের পক্ষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দিন দিন তার জনপ্রিয়তা শুন্যের কোটায় এবং ভোট জামানত হারানোর পথে এগুচ্ছে বলে জানান বুলবুল।

বর্তমান সরকারের নির্যাতন, মানষিক ও শারীরিক অত্যাচারে এবং দেশকে একটি তলাবিহিন ঝুড়িতে পরিণত করায় সাধারণ জনগণ এমনকি খোদ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী এই সরকারের প্রতি অনাস্থা এনেছে। স্বাধীন একটি দেশে জনগণের কোন স্বাধীনতা নেই। মুক্তভাবে কেউ সরকারে সমালোচনা করতে পারেনা। নিজের মত করে কথা বলতে পারেনা। দেশটাকে তারা আমেরিকার গুয়াতোনামা কারাগারে পরিণত করেছে। বিএনপি যখন দেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পরিণত করতে চাচ্ছে তখন আওয়ামী লীগ ৭১সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের মত রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে। তারা দেশ ও জাতিকে সমুদ্রের তলদেশে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে ভাল ও শক্তিশালী রেফারির দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। সেইসাথে এইচ.টি ইমামের তিনি কঠোর সমালোচনা করেন। বুলবুল বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করে বিএনপিকে ঠেকানো যাবেনা। বিএনপি মাঠে থেকে নির্বাচন করবে এবং ৩০ তারিখে ভোট জোয়ারের মাধ্যমে ধানের শীষ বিজয়ী হবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সেইসাথে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের ভীত না হওয়ার পরামর্শ ও সাধারণ ভোটারদের সাহস ও শক্তি নিয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে ধানের শীষে ভোট প্রদান করার অনুরোধ করেন।

বুলবুল জনগণের উদ্যেশ্যে বলেন, বিএনপি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং রাজশাহী নগরীর একমাত্র উন্নয়নের রুপকার। বিএনপি মেয়রগণ এই নগরীকে সুন্দর, গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি, হেলদি সিটি ও এডুকেশন সিটিতে পরিণত করেছেন। নগরীর জনগণের চলাচলের জন্য প্রসস্থ রাস্তা এবং পাড়া মহল্লার রাস্তা সংস্কার এবং প্রসস্থ করা হয়েছে। শহরকে আরোকিত করার জন্য আধুনিক লাইট সংযোগ ও সৌর বিদ্যুৎ প্লান্টের আওতায় আনা হয়েছে। সেগুলো কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং নগরবাসী ইতিমধ্যে এর সুফল পেতে শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, রাজশাহী নগরীকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও নতুন ভাবে চলমান রাস্তার নির্মান কাজ বাদেও নগরীতে আরো ১২-১৪টি নতুন করে প্রসস্থ রাস্তা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেইসাথে বেকার সমস্যা দুরীকরণে নানবিধ কর্মসূচি গ্রহন করা হবে বলে জানান বুলবুল। এই সকল কার্যক্রম ও প্রকল্প সমুহ বাস্তবায়নে পুণরায় তাঁকে ভোট প্রদান করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সহায়তা করার অনুরোধ জানান তিনি।

বিএনপি নেতা মিনু বলেন, নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পুলিশ বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিদিন গ্রেফতার করা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টুকে গ্রেফতার করেছে। বিনা ওয়ারেন্টে এবং কোন মামলা ছাড়াই অতি উৎসাহী হয়ে সরকার দলীয় প্রার্থীর নিদের্শে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। তিনি আরো বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী মনে করছে গ্রেফতার করে বিএনপিকে নির্বাচনী মাঠশুন্য করবে। বিএনপি’র যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের নৌকা ভেসে পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। নগরবাসী নৌকাকে সারা জীবনের জন্য আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে।

সারা জীবন তপস্যা করে ও আর তীরে আসতে পারবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিএনপি মাঠে আছে এবং নির্বাচনের বিজয়ী হয়ে মাঠ ছাড়বে। আর বিজয়ের মধ্যে দিয়ে দেশের মানুষের এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং এই সরকারের পতনের কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিতারিত করে বেগম জিয়া সহ আগামী সংসদ নির্বাচন করা হবে এবং বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদ গঠন করবে বলে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।

গণ সংযোগের সময় ভোটারদের মধ্যে প্রানের সঞ্চার ফিরে আসে। বিএনপি নেতাদের দেখে তারা উচ্ছোসিত হয় এবং মহে সাহস পায়। তারা স্বত:স্ফুর্তভাবে ধানের শীষে ভোট প্রদান করবে বলে জানান। সেইসাথে অনেক ভোটার ধানের শীষের প্রার্থীর জন্য রোজা রাখতে শুরু করেছেন বলে জানান তারা। যতই হুমকী ও নির্যাতন তাদের উপর হোক তারা ধানের শীষের পক্ষে অবিচল থাকবে এবং ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তারা।

গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, সাবেক সংসদ সদস্য জাহান পাান্না, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সভাপতি মনিরুজ্জামান শরীফ, তানোর পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান, ১৯নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আকতার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তাইনেসুর রহমান, সংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম,

১৯নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিন আহম্মেদ সহ অত্র ওয়ার্ডের বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারাণ সম্পাদক, শুধিজন, সমাজসেবক, বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং শত শত সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।

খবর২৪ঘণ্টা/এমকে