বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়নের বালানগর গ্রামের ব্রেণ টিউমার আক্রান্ত বাবলুর রহমানের পরিবারের পাশে সহযোগিতার হাত বাহিয়ে দিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। শুক্রবার (৮ মে) ব্রেণ টিউমারে আক্রান্ত বাবলুর রহমানকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। উক্ত সংবাদটি স্থানীয় সাংসদের নজরে আসে। সংবাদটি পড়ার পরু উপজেলা আ’লীগের দলীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্সের করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে চাল, ডাল, সাবান এবং নগদ অর্থ বাবলুর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং এ সময় বাবলুর শারীরিক অবস্থার খোঁজ খরব নেন।
(৯মে) শনিবার সকালে সাংসদের পক্ষ থেকে সহ-দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম এবং প্রেস সচিব জিল্লুর রহমান আরো নগদ ১০ হাজার টাকা বাবলুর রহমানের স্ত্রী এবং বড় মেয়ের হাতে তুলে দেন। সেই সাথে ব্রেণ টিউমারে আক্রান্ত বাবলুর রহমানের সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন তিনি। বাবলুর রহমান যেন সঠিক চিকিৎসা পায় সে জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পা অফিসার ডাঃ গোলাম রাব্বানীকে অবহিত করেন। এদিকে অসুস্থ বাবুলর রহমানকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে তার বাড়িতেই মেডিকেল টিম প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়।
বাবলুর বালানগর গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে। দেশ বিদেশে করোনার ভাইরাসের প্রভাবে ভারত ফেরত বাবলুর রহমানের জীবন দুরারোহ হয়ে পড়েছে। জানাগেছে, গত বছর স্থানীয় চিকিৎসকের চিকিৎসায় সুস্থ না হওয়ায় তাদের পরামর্শে পরীক্ষা-নিরিক্ষার মাধ্যমে জানতে পারে ব্রেণ টিউমারে আক্রান্ত হয়েছে বাবলুর।
অভাবের সংসারে যখন কোন কিছুতেই রোগীর শুশ্রæষা মিলছে না। এতে দেশে চিকিৎসা নিতে তার ঢের টাকা ব্যয় হয়। অবশেষে ডাক্তারদের পরামর্শে ভারতে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু নেই তার অর্থিক স্বচ্ছলতা। বাবলুর নিজের তেমন জমি-জমা নেই। পরের জমিতে চাষ আবাদ করে সংসার চলে তার। ভালো চিকিৎসার আসায় নিজ পৈত্তিক পাওয়া ৭ কাঠা জমি বিক্রি করে স্থানীয়দের সহায়তায় গত ফেব্রæয়ারী মাসে ভারতে চিকিৎসার জন্য পাড়ি জমায়। সেখানে তার ব্রেন টিউমার অপারেশন শেষে দেশে নেয়ার পর পরই দেশ বিদেশে দেখা দেয় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অতিরিক্ত অসুস্থ নিথর অবস্থায় বিছানায় পড়ে।
দুই কন্যার মধ্যে বড় মেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী সেফাতুন নেছা জানান, তার পিতা দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ থাকায় তাকে ভারতের খ্রিষ্টান মিশনারী হাসপাতালে অপারেশন করা হয়েছে। চিকিৎসার পর গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় তাকে দেশে আনা হলেও রয়েছেন শয্যাশায়ী। দেশে আসার পরপরই করোনা ভাইরাসের কারণে পিতাকে নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তারা। এক মাস পারে স্থানীয় এক গ্রাম্য চিকিৎসকের মাধ্যমে মুখের খাবার নল খুলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে মুখে খেতে পারলেও আর্থিক সংকট ও করোনার কারণে কোন ভালো চিকিৎসকের কাছে তাকে নিতে পারছেন না। তাদের অস্বছল পরিবারে মা-বাবা সহ ৪ সদস্যের পরিবার। তাদের একমাত্র উপার্জনকারী পিতা অসুস্থ থাকায় করোনার দুর্যোগকালে সংসারে নানা অভাব অনটানে তারা দুরবস্থায় রয়েছেন।
বিপদ মূহুর্তে এমপি এনামুল হক তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাবলুর স্ত্রী। তিনি বলেন, থাকার ঘরটুকু ছাড়া নেই বলতে আর কিছুই। বিছানোগত স্বামী আর দুই মেয়েকে নিয়ে জীবন যাপন পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে তাদের।
খবর২৪ঘন্টা/নই