বাগমারা প্রতিনিধি:
বাগমারার হাটগাঙ্গোপাড়া থেকে বাইগাছা ও মাথাভাঙ্গা হয়ে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত ও খানা খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ এ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এলাকার লোকজনের ও গাড়ী চলাচলের ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও গাফিলতির কারণেই সড়কটিরে এ বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসির অভিযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন রিক্সা, ভ্যান, অটোরিক্স্রা, মোটরসাইকেল ও সিএনজিসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনযোগে হাজার হাজার লোকজন উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ ও রাজশাহী-নওগাঁ জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। এছাড়া ট্রাক ও বিভিন্ন কোম্পানীর গাড়ীযোগে মালামালও সরবরাহ করা হয়। কিন্তু সড়কটি বর্তমানে যানবাহন চলাচলের অযোগ হয়ে পড়লেও বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় এই অঞ্চলের মানুষকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, বাগমারার হাটগাঙ্গোপাড়া থেকে শ্রীপুর-রামনগর ডিগ্রি কলেজের পাশ দিয়ে মাথাভাঙ্গা তিন মাথার মোড় হয়ে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কের উপর দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক, সিএনজি, রিক্সা, অটোরিক্স্রা, ভ্যানগাড়ী, লরি, লছিমন ও মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সম্প্রতি ট্রাক্টরযোগে বৃষ্ট্রির সময় অবৈধভাবে পুকুর খননের মাটি রাস্তা সংলগ্ন বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করায় সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ইটের খোয়া ও পাথর উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত ও খানা খন্দক সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি হয়ওয়া এ সব গর্তে পানি জমে সড়কটি বর্তমানে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে এ সড়ক যোগে সব ধরণের যানবাহন চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে এলাকার লোকজন জানান।
চিকাবাড়ীস্থ বিহেড ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবু বাকার বলেন, সমাজ সেবামুলক কাজে জড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন এ সড়কের উপর দিয়ে তাকে চলাচল করতে হয়। কিন্তু সড়কটির প্রায় ৯০ ভাগ অংশের নষ্ট হয়ে গেছে। সড়কের মাঝে সৃষ্টি হওয়া গর্তগুলোতে পানি জমে কর্দমাক্ততার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পরনের পোশাক কাদা পানিতে ভিজিয়ে প্রতিনিয়িতই দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে তাকে এই সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করতে হয় বলে তিনি জানান। শ্রীরপুর-রামনগর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এম,এ ছালামও একই মস্তব্য করে বলেন, এই দূর্ভোগ থেকে এলাকার জনগনকে রক্ষা করতে হলে সড়কটি দ্রæত সংস্কার করা একান্ত প্রয়োজন। হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকার সিএনজি চালক ইসমাইল হোসেন এবং ভবানীগঞ্জ এলাকার অটো চালক নজরুল ইসলাম, জুয়েল রানা ও হাসেম আলী জানান, এ সড়কটির বিভিন্ন স্থানে গর্তের কারণে প্রায়ই গাড়ী দুর্ঘটনা ঘঠছে। তারা বলেন, হাটগাঙ্গোপাড়া থেকে ভবানীগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত যেতে ১৫-২০ মিটিন সময় লাগলেও বর্তমানে এক ঘন্টাতে পৌঁছতে হচ্ছে। তারা সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।
আউচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার জান মোহাম্মদ লোকজনের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেছেন, সড়কটি দ্রত সংস্কারের দাবি জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেছেন, এ বিষয়ে দ্রত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাগমারা উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেছেন, সড়কটি কয়েক বছর আগেই সংস্কার করা হয়েছিলো। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাক্টরযোগে বৃষ্ট্রির সময় এলাকার প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে পুকুর খননের মাটি রাস্তা সংলগ্ন বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করার কারণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ইটের খোয়া ও পাথর উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই সড়কটি পুন:সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।