খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের চেতনা এখন যত পারো দুর্নীতি করো। যত পারো ব্যাংকের টাকা লুট করো, যত পারো শেয়ার মার্কেট থেকে মধ্যবিত্ত বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস করে দাও।’
তিনি বলেন, ‘এখন এমন একটি শ্রেণি হয়েছে যে তাদের কাছে প্রচুর টাকা, বলাও যায় না যে তাদের এত টাকা কোথা থেকে আসলো, কীভাবে হলো। এক বছরে ৩৭ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে বাইরে গেছে, স্বাধীনতার চেতনা এটি না হলে কী করে হয়! এই টাকাগুলো কারা পাঠিয়েছে? যারা স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে, তাদের মদদপুষ্ট এবং এর অংশীদার।’
৪৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অনির্দিষ্ট কারাবাস, অসহায় বিচার ব্যবস্থা : বাংলাদেশ কোন পথে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সভার আয়োজন করে।
দেশের অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সরকারকে দায়ী করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আজকে দেশের অর্থনৈতিক সংকটের অন্যতম কারণ হলো হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যাওয়া। নির্বাচন সামনে আসলে আরও টাকা বিদেশে চলে যাবে। কারণ তারা জানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের (আওয়ামী লীগের) পরাজয় অবধারিত এবং তারা নিজেদের সেফটির (নিরাপত্তার জন্য) জন্য আগে থেকেই এই ব্যবস্থা করে রাখছে।’
তিনি বলেন, অনেকের আবার সেকেন্ড হোমও রয়েছে। এরা সবাই হলো সরকারি দলের, আওয়ামী লীগের এবং সরকারের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ী ও অর্থনৈতিক দুর্বৃত্ত। সেজন্য এখন স্বাধীনতার চেতনা হলো যত পারো গণতন্ত্রের সব মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দাও, একদলীয় শাসন কায়েম করো, স্বাধীনতার চেতনা হলো আমরাই একমাত্র দেশ চালাবো, বিরোধী দলকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেব, যাতে করে আমরাই দেশ পরিচালনা করতে পারি, বিচারবিভাগের স্বাধীনতার প্রয়োজন নাই, যত পারো মিথ্যা কথা বলো।
‘এই চেতনার কোনো সংজ্ঞা নেই। স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এখন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছে। এসবের চেতনা দেশে গণতন্ত্রের দরকার নাই, বিরোধী দলের কোনো প্রয়োজনই নাই। এটির জন্য কি আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? উনাদের কাছে স্বাধীনতার চেতনা মনে হয় এগুলোই মিন করে-’বলেন মওদুদ।
সরকার যতই কলাকৌশল করুক না কেন বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন উল্লেখ করে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপিল বিভাগ জামিন দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আইনানুযায়ী আমাদের কাজ করতে হবে। দুটি পথ আছে একটি আইনের, আরেকটি রাজপথ। আমরা আইনি লড়াই করব আবার রাজপথেও থাকতে হবে। শুধু আইনি লড়াই দিয়ে এই যুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভবপর হবে বলে আমি মনে করি না।’
মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ