নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভার মেয়র বরিউল ইসলাম রবির বিরুদ্ধে এক ব্যক্তির ভোগদখলীয় সম্পত্তি জবরদখল করে ভবন নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজশাহী নগরীর ডিঙ্গাডোবা ঈদগাহ মোড়ের ঈমামুল মার্কেটে আয়েজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উক্ত সম্পত্তির মালিক দাবীদার পুঠিয়া উপজেলার গন্ডগোহালী (পূর্ব ধোপাপাড়া) গ্রামের লাল মোহাম্মদ সিকদার এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে লাল মোহাম্মদ সিকদার বলেন, আমার ক্রয়কৃত প্রায় ২২ বছর ধরে ভোগ দখলীয় বৈধ সম্পত্তিতে ক্ষমতার জোরে পেশী শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে পুঠিয়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র মো. রবিউল ইসলাম রবি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। অথচ বিক্রয় কবলা দলিল মূলে গত ২৮/০২/১৯৯৬ ইং তারিখ থেকে রেজেষ্ট্রিকৃত ৭৯৩ নং ওই সম্পত্তির (.০৬৫৫০ একর) বৈধ মালিক আমি। যার প্রস্তাবিত খতিয়ান নং ১৩৭০, সাবেক খ.নং ২৬৯, এসএ খ.নং ২৬৯/২, আরএস খ. নং ২০০, সাবেক দাগ নং ২৯৬, আরএস দাগ নং ২৪৭, পরিমান .৬২ একর কাত এর .০৬৫০ একর। খারিজ কেস নং- ৮৮৭/৯-১/৯৬-৯৭, তারিখ- ১৯/০৫/১৯৯৭ ইং। এরপর থেকে সরকারী বিধি মোতাবেক খাজনা প্রদান পূর্বক জমি ভোগ দখল করে আসছি।
তার অভিযোগ, হঠাৎ করে গত ১৫ এপ্রিল পুঠিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম রবিসহ তার দলবল গিয়ে আমাকে বলে এই জমি আমি ক্রয় করেছি এবং জমির মালিকের কাছ থেকে বুঝিয়ে নিয়েছি। এখন এখানে আমি বহুতল ভবন করব। তখন এ কথা শুনে আমি রীতিমত হতভম্ব হয়ে যাই। কারণ আমার বৈধ জমি সে ক্রয় করেছে আর আমি জানিনা। প্রতিবাদ করলে মেয়র রবি বলে, আবারো যদি এই জমির মালিক হিসাবে দাবী করিস তাহলে তোর পরিনতি এমন করব যে তোকে দেখে মানুষ ভয়ে আতকে উঠবে। আমার কথায় ইউএনও, ওসি, এসিল্যান্ড উঠে বসে, আমার কথা শুনবে নাকি তোর কথা শুনবে। তারপর ভয় ভীতি দেখিয়ে আমাকে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে লাঞ্চিত করে আমার ২২ বছরের ভোগ দখলীয় ক্রয়কৃত সম্পত্তি থেকে বের করে দেয়। এরপর রবি ওই জমিতে বাড়ি নির্মানের জন্য ইটসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ফেলে।
তখন আমি তার ক্ষমতা ও পেশী শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে গত ১৭ এপ্রিল রাজশাহীর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সরণাপন্ন হই। যার পিটিশন মামলা নং- ২৯০ পি/১৮, ধারা-ফৌ. কা. বি. ১৪৪ এবং প্রসেস নং- ৮৩৯/১৮। এরপর পরবর্তী আদেশ না দেয়া পযর্ন্ত কাজ বন্ধসহ উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। যে মামলার পরবর্তী ধার্য্য তারিখ ২৪/০৬/২০১৮ইং রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞ আদালতের সেই আদেশ অমান্য করে ক্ষমতার জোরে পেশী শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মেয়র রবি বহুতল ভবন নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে পুঠিয়া থানায় বারংবার অবগত করলেও অজ্ঞাত কারণে তারা নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে। যে কারণে ন্যয় বিচারের স্বার্থে বৈধ সম্পত্তি দ্রæত ফিরিয়ে পাবার লক্ষ্যে সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন লাল মোহাম্মদ সিকদার।
সংবাদ সম্মেলনে জমি বিক্রেতা পক্ষ শাজাহান আলী, লাল মোহাম্মদ সিকদারের ছেলে মো. নাহিদ হাসান সিকদার, ভাগনে মো. আবু জাফর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে পুঠিয়া পৌরসভার মেয়র রবিউল ইসলাম রবির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এ ধরণের ঝামেলায় জড়াতে পারি না। উনি যে জমি নিয়ে অভিযোগ করেছেন সেটা ও আমার জমি আলাদা। তার কাগজ তিনি দেখাতে পারছেন না। ওই জমি আমি অনেক আগেই কিনেছি। ভয়-ভীতি দেখানোরও অভিযোগ সঠিক নয়।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে