নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিচার না পেয়ে ক্ষোভে ও লজ্জায় নোট লিখে ১০ম শ্রেণীতে পড়–য়া এক স্কুলছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। ওই স্কুলছাত্রী পুঠিয়া উপজেলার পালোপাড়া এলাকার বাসিন্দা। চলতি মাসের ২০ তারিখ নিজ বাড়িতে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই স্কুলছাত্রী। পরে তাকে পরিবারের লোকজন পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ছাত্রীর মামা মতিউর জানান অভিযোগ করে জানান, চলতি মাসের ১৮ তারিখ রাতে তার ভাগ্নিকে নিজ বাড়িতে রেখে তার বাবা-মা পাশের গ্রামে ইসলামী জলসা শুনতে যায়। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে একই গ্রামের বাসিন্দা তার ভাগ্নির চাচা আমরুল সর্দারের ছেলে সুজন (২২) মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। তার ভাগ্নি দরজা না খুলতে চাইলে সে অনুরোধ করে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর সুজন তার ভাগ্নির কাছ থেকে মুড়ি খেতে চায়।
তার ভাগ্নি পাশের রুমে মুড়ি আনতে গেলে সুজনও সেই রুমে গিয়ে তাকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে। কিন্ত মেয়েটি তার কাছ থেকে ছাড়া পেতে চেষ্টা করলে দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় হঠাৎ তার বাবা বাড়িতে চলে আসলে সুজন মোটরসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে মীমাংসার জন্য গ্রামের সবাই জড়ো হলেও ছেলে পক্ষের কেউ না আসায় মীমাংসা বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। ছেলে পক্ষ মাগরিবের পর মীমাংসায় বসবে বলে জানায়। রাতে মীমাংসার সময় ছেলে পক্ষ টাকা দিয়ে প্রায় দুই শতাধিক লোক ভাড়া করে নিয়ে আসে। অথচ তারা জানিয়েছিল মীমাংসা বৈঠকে ৮/১০ জন লোক থাকবে। মেয়ের পক্ষ থেকে বিয়ের দাবি উঠালে ছেলে পক্ষ তা না মেনে নিয়ে হট্টগোল শুরু করে। এ কারণে সমঝোতা ছাড়াই লোকজন ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। মীসাংসা না হওয়ায় মেয়ের বাবা বাদী হয়ে ওই রাতেই পুঠিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে
মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ২০ তারিখ সকালে তার ভাগ্নি বিচার না পেয়ে ক্ষোভে অভিমানে নোট লিখে আত্মহত্যা করার জন্য বিষপান করে। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। দু’দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, ছেলে পক্ষ জোর জবরদস্তি করে টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে। তারা মীমাংসা বৈঠকেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জোরপূর্বক চলে যায়। আমরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ ও ন্যায্য বিচার দাবি করছি। সেই সাথে আসামীর কঠোর শাস্তি দাবি করছি। এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ওসি শাকিল উদ্দিন বলেন, থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এখন মামলা রেকর্ড করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আরএস