1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
পায়রার কয়লা বিদ্যুৎ বাড়াবে দূষণ, মৃত্যুঝুঁকি, বিষাক্ত হবে ইলিশ: গবেষণা - খবর ২৪ ঘণ্টা
শুকরবার, ১৭ জানয়ারী ২০২৫, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন

পায়রার কয়লা বিদ্যুৎ বাড়াবে দূষণ, মৃত্যুঝুঁকি, বিষাক্ত হবে ইলিশ: গবেষণা

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৬ মে, ২০২০

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: পায়রায় স্থাপিত কয়লা বিদ্যুতের কারণে উচ্চ মাত্রার বায়ুদূষণসহ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের মতো মহামারিতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে আশঙ্কা পকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, দেশে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্পের চলমান বায়ুদূষণে ফলে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষ ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারসহ নানা শারীরিক অক্ষমতায় ভুগছে। অনেকে কেমোথেরাপির মতো চিকিৎসা নিচ্ছে। নতুন মহামারি করোনাভাইরাস এসব রোগীর মৃত্যু আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।

‘বায়ুর মান, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর বাংলাদেশের পায়রায় প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব’ শীর্ষক গবেষণাটি করেছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যাণ্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ)।

মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সিআরইএ।

গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি ২০১৭-এর তথ্য উল্লেখ করে গবেষণায় বলা হয়, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে ১১ শতাংশ ডায়াবেটিস, ১৬ শতাংশ ফুসফুসের ক্যানসার, ১৫ শতাংশ দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ, ১০ শতাংশ হৃদরোগ এবং ৬ শতাংশ স্ট্রোকের জন্য দায়ী।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার প্রধান বিশ্লেষক লরি মিলিভিরতা বলেন, বিশ্বের বেশ কয়েকটি গবেষণায় বায়ু দূষণ ও উচ্চ রক্তচাপ বা ফুসফুসে প্রদাহের মতো দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) রোগের সম্পর্ক মিলেছে। একই সঙ্গে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে ক্রনিক রোগে আক্রান্তরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সহজে সুস্থ হচ্ছেন না। তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বায়ুদূষণ করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যাকে বাড়িয়ে তুলছে এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতকে চরম চাপের মধ্যে ফেলছে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।

তিনি করোনা মহামারিতে আক্রান্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার জন্য পায়রায় সব কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের আবেদন জানান।

তিনি বলেন, পায়রার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পরিকল্পনা শুরুর সময়ই এর সম্ভাব্য দূষণের মাত্রা নিয়ে আলোচনা দরকার ছিল। এ জন্য আরো বেশি করে এ ধরনের গবেষণা হওয়া দরকার।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পটুয়াখালীর পায়রায় প্রস্তাবিত আটটি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবগুলো নির্মাণ করা হলে বাংলাদেশে বায়ুদূষণ আরো বাড়বে। ছোট ওই এলাকার মধ্যে নয় দশমিক আট গিগাওয়াট ক্ষমতার এই আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণপ্রতিরোধী ব্যবস্থাও খুব দুর্বল। শেষ পর্যন্ত যদি সবগুলো কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এখানে নির্মিত হয়, তবে এটি হবে দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশ্বের বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। ভবিষ্যতে এই ‘বিদ্যুৎ হাব’ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবে এবং করোনাভাইরাসের মতো আরেকটি মহামারি এলে অসংখ্য মৃত্যুর কারণ হবে।

গবেষণা অনুসারে, পায়রায় নির্মিতব্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ৩০ বছরের মেয়াদকালের দূষণের কারণে বরিশাল অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারে। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ, ১১ হাজার হৃদরোগ, ৩০০ শিশুসহ প্রায় ৩ হাজার ফুসফুসের প্রদাহ, প্রায় ২ হাজার ফুসফুসের ক্যানসার, প্রায় ৯ হাজার স্ট্রোক এবং প্রায় আড়াই হাজার জন নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইডের ক্ষতিকর প্রভাবের ফলে মারা যেতে পারেন।

গবেষণা মতে, অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ৭১ হাজার বার হাসপাতালে জরুরী চিকিৎসা, শ্বাসকষ্টের নতুন ১৫ হাজার অসুস্থ শিশু, নির্ধারিত সময়ের আগে ৩৯ হাজার শিশুর জন্ম, ২ কোটি ৬০ লাখ অসুস্থতাজনিত ছুটি এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য অক্ষম হওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে বাপা’র জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা আবদুল মতিন বলেন, গবেষণা থেকে এটা স্পষ্ট যে বায়ুদূষণ ও কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে শক্তিশালী যোগসূত্র রয়েছে। বাংলাদেশের উচিত হবে সৌরবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে মনোযোগী হওয়া। এতে যেমন বিদ্যুতের চাহিদা মিটবে, তেমনি পরিবেশ দূষণ কমবে।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, বায়ুদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাবে এ দেশের গড় আয়ু প্রায় দুই বছর কমেছে। দূষিত রাজধানীগুলোর মধ্যে ঢাকা শীর্ষে, এখানে বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম২.৫) পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানের চেয়ে আট গুণ বেশি।

গবেষণায় দেখা গেছে, পায়রার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বছরে ৬০০ থেকে ৮০০ কেজি পারদ বাতাসে নিঃসরণ করবে, যার এক-তৃতীয়াংশ জমা হবে মাটি ও স্বাদুপানির প্রতিবেশে। ফসলি জমি ও জলাশয়ে বেশিরভাগ পারদ জমা হওয়ার ফলে খাবারে পারদের বিষক্রিয়া দেখা দেবে। প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস এমন জায়গায় পারদ জমা হওয়ার এই আশঙ্কা ভীতিকর। এ ছাড়া পায়রা এলাকার নদীগুলো বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের প্রজনন এলাকা ও বিচরণক্ষেত্র। পানিতে পারদ জমা হওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে ইলিশের ওপর।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিছুর রহমান বলেন, পায়রা এলাকার মাটি ও পানিতে বছরে ১৭০ থেকে ২৯০ কেজি পারদ জমা হলে ইলিশ মাছ এক অর্থে বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে বা এটি আর খাওয়ার উপযোগী নাও থাকতে পারে।

তিনি বলেন, এমনকি প্রতিবছর ১২৫ মিলিগ্রাম পারদ জমা হলেও তা মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর অনুপযোগী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী গবেষণাগারের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া দূষণের ফলে ইলিশের প্রজননক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, পায়রাসহ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা মাছসহ জলজপ্রাণীর অন্যতম অভয়াশ্রম ও প্রজননক্ষেত্র। পায়রা, মহেশখালী বা মাতারবাড়ী অঞ্চলে কয়লা বিদ্যুতের পরিকল্পনা মারাত্মক দূষণ সৃষ্টি করবে, যা এখনই বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালনা করেন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।

খবর২৪ঘন্টা/নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST