খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক:নিউ জিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার নেদারল্যান্ডসের উট্রাখ শহরে একটি যাত্রীবাহী ট্রামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত তিনজন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই হামলাকারী তুরস্কের নাগরিক। এটাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে দেশটির পুলিশ।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসির অনলাইনে বলা হয়েছে, ৩৭ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ওই হামলাকারীর নাম গোকমেন তানিস। হামলার কয়েকঘণ্টা পর তাকে আটক করা হয়। তবে ঠিক কোথা থেকে আটক করা হয়, তা জানা যায়নি। কী উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে তাও পরিষ্কার নয়।
উট্রাখ শহরে হামলার ঘটনাটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর, সেখানকার স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে টুয়েন্টি ফোর অক্তোবেরপ্লেইন জংশনের কাছে হামলার ঘটনা ঘটে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে দেখা যায়। যাতে অন্তত ৩ জন নিহত ও ৯ জন আহত হন। আহতদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী ডাচ পুলিশের সংবাদ মাধ্যম এনওএসকে বলেন, ‘আমি এ ঘটনায় আহত একজনকে চিকিৎসা সেবা দিতে সহযোগিতা করেছি। ওই ব্যক্তি আমার অদূরে ট্রামের পাশেই পড়ে ছিলেন। আমিসহ কয়েকজন তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য গাড়িতে উঠায়। এরই মধ্যে লক্ষ করি, বন্দুকধারী আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। আমি ‘বন্দুকধারী’ ‘বন্দুকধারী’ বলে চিৎকার শুরু করি এবং দৌড়ে পালায়। হামলার পর বন্দুকধারী পালিয়ে যায়।’
এদিকে, পুনরায় হামলার আশঙ্কায় দেশটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর ও মসজিদে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই সন্দেহভাজন ওই হামলাকারীর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় পুলিশ। এর মাধ্যমে জনগণকে সতর্ক করা হয়, ওই ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকতে। ঘটনার পর কাউন্টার টেরোরিজমের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনাটিকে একটি সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ডাচ পুলিশ। তবে সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে একজন আইনজীবী বলেন, ‘পারিবারিক কারণে’ এই হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। হামলাকারীর নাম তানিস বলে চিহ্নিত করছে পুলিশ।
স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বিবিসিকে বলেন, ‘বন্দুকধারী
তানিস তুরস্কের নাগরিক। সে আগে
রাশিয়ার চেচনিয়াতে যুদ্ধ করেছে।’ এই এলাকায়
দীর্ঘদিন ধরে আইএস’সহ জিহাদি গ্রুপগুলো অভিযান চালিয়ে আসছে। ‘আইএসের
সঙ্গে তার যোগসূত্র থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’
দেশটির
প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট ঘটনাটিকে ‘গভীর উদ্বেগের’ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে নানা প্রশ্ন ও গুজব থাকতে
পারে। তবে এই হামলার উদ্দেশ্য কী ছিল, তা এখনও পরিষ্কার
হওয়া যায়নি।’
এ ঘটনায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানসেজ সমবেদনা জানিয়েছেন।
এদিকে, সন্দেহভাজন ওই তুর্কি নাগরিককে আটকের পর, উট্রাখ শহরে হুমকি সতর্কতা কমিয়ে আনা হয়েছে। হামলার পরপরই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়। বিমানবন্দর ও মসজিদে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। উট্রাখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবন বন্ধ রাখা হয়েছে এবং শহরের প্রাণকেন্দ্রের স্টেশনে ট্রেন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কিছু গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।
উট্রাখ নেদারল্যান্ডসের একটি বড় শহর। শহরটিতে প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার মানুষ বাস করে।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন