1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
নুসরাত হত্যায় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন আটক - খবর ২৪ ঘণ্টা
রবিবার, ১২ জানয়ারী ২০২৫, ০১:৪৯ অপরাহ্ন

নুসরাত হত্যায় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন আটক

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৯

খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক: মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ও সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুক্রবার বিকাল চারটার দিকে সোনাগাজী উপজেলা শহরের উত্তর চর চান্দিয়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। রুহুল আমিনকে ফেনী পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ন শেষে হত্যার পর থানা-পুলিশ ম্যানেজের দায়িত্বে ছিলেন রুহুল আমিন। হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন শামীম গত ১৪ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

পুলিশ, আইনজীবী, আদালত ও পিবিআইর একাধিক সূত্র জানায়, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ২৫ থেকে ২৬ জন জড়িত। দুই আসামির জবানবন্দিতে আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মুকছুদ আলম, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার দুই ছেলেও জড়িত ছিল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনার আগ থেকে তারা বিষয়গুলো জানতেন। আদালতে শাহাদাত হোসেন শামীম ২৫ পৃষ্ঠা এবং নুর উদ্দিন ৩০ পৃষ্ঠার জবানবন্দি দেন।

জানা যায়, ২৭ মার্চ মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ওই মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন। পরে জনরোষে তিনি অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরদিন সোনাগাজী জিরোপয়েন্টে মাদরাসার অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে কাউন্সিলর মুকছুদ আলমের নেতৃত্বে যে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয় তাতেও ইন্দন দেন রুহুল আমিন।

অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নানা অপকর্মের ঢাল হিসেবে ব্যবহার হতেন রুহুল আমিন। মাদরাসার নানা অনিয়ম-দুর্নীতি প্রভাব খাটিয়ে রফাদফা করতেন তিনি। দুই মাস আগে ওই মাদরাসার আরেক ছাত্রীকে অধ্যক্ষের যৌন হয়রানির ঘটনাও রুহুল আমিন-মুকছুদই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়েছেন। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মাদরাসা ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠলেও প্রভাব খাটিয়ে পরবর্তীতে ভুয়া ভাওচার দিয়ে পাস করিয়ে নেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার নানা দুর্নীতি ছাড়াও জমি দখল, পদবাণিজ্য, টেন্ডারবাজি ও অবৈধ বালু উত্তোলনসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্বভাবে ভালো মানুষ রুহুল আমিনের রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। সেই বাহিনী দিয়ে এসব অপকর্ম করে বেড়ালেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হন না।

অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ায় ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরীন ফেরদৌসির বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। পরবর্তীতে সেই মামলা প্রত্যাহার করেন। দলে প্রভাব খাটিয়ে পদবাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। একইভাবে সোনাগাজী উপজেলার সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে মোটা অংকের উপরি নিয়ে অপেশাদারদের হাতে তুলে দেন। দলের প্রভাব খাটিয়ে উপজেলার চরচান্দিায়া পূর্ব বড়ধলি মৌজায় শতাধিক ভূমহীনের জমি দখল করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

সঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তাকে যৌন নিপীড়ন করে বলে অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে নুসরাতের পরিবারতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।

গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যায় নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। তাকে মামলা তুলে নেওয়া কথা বলে ভয় দেখানো হয়। পরে সেখানে বোরকা পরিহিত ৪/৫ ব্যক্তি নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার

শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ১০ এপ্রিল তিনি মারা যান। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে নুসরাতকে দাফন করা হয়।

আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। তারা হলো– অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো.

শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ ও হাফেজ আবদুল কাদের। এর মধ্যে চার জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।

খবর২৪ঘণ্টা, জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST