দিয়াগো ম্যারাডোনা অতীত হয়ে গেলেও তার স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে রেখে যাওয়া জার্সিগুলো। হাতি নাকি মরলেও লাখ টাকা, বাংলার এই প্রবাদটার মতোই হলো আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার জার্সির নিলাম।
২২ জুন, ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল যে জার্সি পরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন, সেই ম্যাচে ‘হ্যান্ড অব গড’ ও ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’ উপাধি পাওয়া ম্যাচে ম্যারাডোনার পরা সেই জার্সিটি নিলামে ওঠানো হয়েছিল সম্প্রতি। নিলামে তুলেছিলেন সাবেক ইংলিশ ফুটবলার স্টিভ হজ।
দিয়াগো ম্যারাডোনার জার্সি নিয়ে যে কাড়াকাড়ি হবে সেটিই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। তাতেই হয়ে গেল রেকর্ড! বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়া একটি অনলাইন নিলামে হ্যান্ড অব গড গোলের ম্যাচে পরিহিত ম্যারাডোনার জার্সিটি বিক্রি হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৭ কোটি ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকার কিছু বেশি টাকায় (৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ পাউন্ড)।
যা শুধু কোনো ফুটবলারের জার্সির নিলামের রেকর্ড ভাঙেনি, ভেঙেছে ক্রীড়া জগতে এর আগে যত নিলাম হয়েছে তার সব রেকর্ড। ফুটবলারদের মাঝে এতদিন পেলের জার্সির দাম ছিল সবচেয়ে বেশি ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যা ছিল ১৯৭০ বিশ্বকাপে ব্রাজিল-চেকোস্লোভাকিয়া ফাইনাল ম্যাচে পেলের পরিহিত জার্সিটি। সেটি নিলামে তুলেছিলেন স্লোভাক ফুটবলার।
এছাড়া ক্রীড়া জগতে এর আগে সবচেয়ে দামি জার্সির রেকর্ড ছিল বেসবল কিংবদন্তি বেব রুথের। নিউইয়র্ক ইয়াঙ্কিসে খেলার সময় বেব রুথের পরিহিত জার্সিটি নিলামে বিক্রি হয়েছিল ৫৬ লাখ ডলারে।
ম্যারাডোনার জার্সিটি নিলাম থেকে কে নিয়েছে তার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে এখনও। নিলামে তোলা স্টিভ হজ ছিলেন ইংল্যান্ড দলের মিড ফিল্ডার। ম্যাচ শেষে ম্যারাডোনার সঙ্গে জার্সি অদল-বদল করেন হজ। নিলামে তোলার আগে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল জাদুঘরে রেখে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নিয়েছিলেন এই ইংলিশ মিড ফিল্ডার।
গত মাসে স্ট্রিটওয়্যার ও মডার্ন কালেক্টেবল ‘সোথেবি’ জার্সিটি বিক্রির ঘোষণা দেওয়ার পর ম্যারাডোনার পরিবারের লোকেরা সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন যে ১০ নম্বর জার্সিটি ছিল ওই ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে পরিহিত জার্সি। তবে নিলাম কারী প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, জার্সির সত্যতা স্পোর্টস মেমোরাবিলিয়া ফটো ম্যাচিং ফার্ম রেজোলিউশন ফটোম্যাচিং দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং সোথেবির প্রধান কর্মকর্তাও নিশ্চিত করেছেন।
হেড অব স্ট্রিটওয়্যার ও মডার্ন কালেক্টেবলের প্রধান ব্রাহাম ওয়াচটার বলেছেন, ‘জার্সিটি শুধু ক্রীড়ার ইতিহাসে নয়, বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সবচেয়ে বড় স্মারক।’