আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে চলতি মাসের ১১ তারিখে শেরপুর উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহন হবে। চেয়ারম্যান প্রর্থীরা তাই ছুটছে ভোটরদের দাড়ে দাড়ে। এমন সময় নানা প্রতিশ্রুতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে তাদের। ভোটারদের দাবি তারা চেয়ারম্যানের কাছে ভাত কাপড় চাননা। চায় পাকা সড়ক। বিগত ১২ বছরে প্রায় তিনশ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ হলেও বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ৩৪৬ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক এখনো কাঁচা রয়েছে। ফলে বৃষ্টি হলেই এসব রাস্তায় মানুষ জন ও যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) শেরপুর উপজেলা অফিস সুত্রে জানা গেছে, শেরপুর উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নে এলজিইডির সর্বমোট রাস্তা রয়েছে ৬৫৫.৮৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা হয়েছে ৩০৯ কিলোমিটার। আর কাঁচা সড়ক রয়েছে ৩৪৬.২৪ কিলোমিটার। ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে
প্রায় ২শ কিলোমিটার গ্রামীন সড়ক পাকা হয়েছে বলে অফিস সুত্রে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে বিগত ১২ বছরে সবচেয়ে বেশি গ্রামীণ সড়ক পাকা হয়েছে বিশালপুর, খানপুর,সুঘাট, গাড়ীদহ ও ভবানীপুর ইউনিয়নে। এসব এলাকায় নতুন নতুন সড়ক পাকা হওয়ায় বদলে গেছে এলাকার চিত্র। শহরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজতর হয়েছে। রাস্তা পাকা হওয়ায় নতুন নতুন যানবাহন চলাচলসহ উন্নয়নের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। কিন্তু উপজেলার কুসুম্বী, খামারকান্দি, মির্জাপুর, সীমাবাড়ী ও শাহবন্দেগী ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক এখনও কাঁচা রয়েছে। ফলে বর্ষাকালে এসব
রাস্তায় চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উদয়কুড়ি গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, দীর্ঘদিনেও আমাদের এলাকার তিনকিলোমিটার রাস্তা পাকা না হওয়ায় আমরা বর্ষাকালে চরম সমস্যায় ভুগি। রাস্তা না থাকায় আমাদের ফসলের ন্যায্য মূল্যও পাই না। আমরা ভাত কাপড় চাই না আমরা চাই পাকা রাস্তা। উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামের আজাহার উদ্দিন জানান, মদনপুর থেকে রাজবাড়ী সড়কের কিছু অংশ পাকা হয়েছে। কিন্তু বাকিটুকু কাঁচা থাকায় ১০
গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। লালমাটিতে বৃষ্টি হলেই কাদা হওয়ায় পায়ে হেঁটেও চলা যায় না। শাহবন্দেগী ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ মাহাতো জানান, দীর্ঘদিনেও আমাদের রাস্তা পাকা না হওয়ায় ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষেরা চরম দুর্ভোগে রয়েছি। বিদ্যুত পেলেও রাস্তা না থাকার কারণে এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে না। সীমাবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুনছুর রহমান আকন্দ জানান, টাকাধুকুরিয়া থেকে নলুয়া হয়ে ঘাসুরিয়া গ্রামের রাস্তা এখনো কাঁচা রয়েছে। ফলে
এলাকার শত শত মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঞ্জু জানান, বিগত ৫ বছরে ইউনিয়নের প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ হয়েছে। আরও কাজ চলমান রয়েছে। শেরপুর উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে উপজেলায় ৩০টি গ্রামীণ সড়কের ৪৮.২৫ কিলোমিটার পাকাকরণ হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ১৮টি রাস্তার ৩৭.৪০ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ হয়েছে।
এছাড়া গাড়ীদহ থেকে ঝাঁজর পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার এবং সুবলী থেকে খাগা হয়ে মির্জাপুর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ কাজ চলমান রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী নূর মোহাম্মাদ জানান, এই উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন সড়কের ১০৪.৯৩ কিলোমিটার রাস্তার সবই পাকা। ৫৪টি ইউনিয়ন রোডের ২৩৯ কিলোমিটারের মধ্যে ৮২.৭৫ কিলোমিটার কাঁচা রয়েছে। এছাড়া গ্রামীণ সড়কের ১৯০টি সড়কের ৩১১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২৬৩.১ কিলোমিটার সড়ক এখনো কাঁচা রয়েছে। তবে তিনি জানান, পর্যায়ক্রমে উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলো পাকাকরণের কাজ চলছে। ধীরে ধীরে সব রাস্তায়ই পাকা হয়ে যাবে।
জেএন