নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বনবেলঘড়িয়া এলাকায় আদম ব্যবসায়ী বাবা ছেলের খপ্পরে সর্বশান্ত হয়েছেন দরিদ্র পরিবারের এক যুবক। শুধু তাই নয়, দেশে ফিরে ঐ প্রতারিত যুবক যেন কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারে সেজন্য আদম পাচারকারীরাই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী যুবক এবং তাঁর বাবার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা গেছে,বছর দুই আগে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার আদম ব্যবসায়ী জাকির হোসেন মজুমদার মিরাজ শহরের বনবেল ঘড়িয়া এলাকায় জায়গা কিনে দ্বোতলা বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করা শুরু করে । এসময় আদম ব্যবসায়ী মিরাজ তাঁর সাইপ্রাস প্রবাসী দুই ছেলে ফরহাদ হোসেন পলাশ ও শাহাদত হোসেন কাজলের মাধ্যমে বেকার তরুণদের মোটা বেতনে সাইপ্রাসে ভিসা ও চাকরি দেবার লোভ দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করা শুরু করে ।
এসময় শহরের দক্ষিণ বড়গাছা এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান তৌহিদকে সাইপ্রাসে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকুরি এবং ভিসা দেবার লোভ দেখিয়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় জাকির হোসেন মজুমদার মিরাজ এবং সাইপ্রাস প্রবাসী দুই ছেলে কাজল ও পলাশ । টাকা নেওয়ার সময় বাবা ও দুই ছেলে মোটা টাকা বেতন এবং ভিসার আশ্বাস দেয় ।এদিকে টাকা প্রদানের মিজানুর রহমান তৌহিদকে সাইপ্রাসে নিয়ে গেলেও সেখানে একটি অস্তিত্বহীন ক¤পানির নামে ভিসা প্রদান করা হয়। ফলে তিনি চরম বিপাকে পড়েন। এ সময় এর কারণ জানতে চাইলে তাকে একটি কক্ষে আটক করে রেখে নির্যাতন শুরু করে। পরে তাকে সাইপ্রাসে ফুটপাতের হোটেলে কাজ দেয়া হলেও বেতন তুল নিতেন আদম ব্যবসায়ীর ছেলে কাজল । সাইপ্রাসে পাঁচ মাস থাকার পর সেখানকার পুলিশ কাজের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় আটক করে দেশে পাঠিয়ে দেয় । দেশে আসার সকল খরচ মিজানুর রহমান তৌহিদের পরিবারকেই বহণ করতে হয় । পরে দেশে ফিরে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ও ১০ ডিসেম্বর দুই দফা আদম ব্যবসায়ী বাড়িতে জাকির হোসেন মজুমদার মিরাজের বনবেলঘড়িয়ার বাসায় গিয়ে তৌহিদকে টাকা দাবী করলে দেবো দিচ্ছি বলে ঘুরাতে থাকে । এক পর্যায়ে প্রতিবেশি এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যকে বাড়ি বিক্রির দায়িত্ব দিয়ে তারা রাতারাতি বাসার সকল জিনিসপত্র নিয়ে পুরো পরিবার পালিয়ে যায় । পরে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর প্রতারণার শিকার যুবক মিজানুর রহমান তৌহিদ বাদী হয়ে আদম ব্যবসায়ী এবং প্রবাসী দুই ছেলের নামে নাটোর অতিরিক্ত চীফ জুডিয়াশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করে । কিন্তু মামলা করার কথা শুনেই চলতি বছরের ২ ফেব্রয়ারী আদম ব্যবসায়ী মিরাজ চাঁদপুর জেলা সদরের হামকর্দি গ্রামের জনৈক মাসুদ মজুমদারকে বাদী হয়ে মিথ্যা বানোয়াট গল্প সাজিয়ে চাঁদপুর আমলী আদালতে মিজানুর রহমান তৌহিদ এবং তার বাবা মজিবর রহমানের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে । পিতাপুত্র জীবনে চাঁদপুর না গেলেও মিথ্যা মামলা দায়ের করেন ।
ভুক্তভোগীরা জানান, চক্রটি একই পন্থায় আরো অনেক যুবকের সর্বনাশ করেছে। ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জমি কিনে বাসা নির্মাণ করে বেকার তরুণদের বিদেশে মোটা অংকের বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়া মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি চ¤পট দেয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়। কিন্তু এভাবেই উল্টো মামলাসহ জটিলতা সৃষ্টি করে তারা বেঁচে যাচ্ছে।আর হুয়রানির শিকার হয় বেকার তরুণ এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ।
খবর২৪ঘন্টা/নই