চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চল নাচোলে আমন ধানের সবুজ মাঠে ঢেউ খেলানো ধান ক্ষেত দেখে কৃষকের মন জুড়িয়ে গেলেও ইঁদুরের আক্রমনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
খেতে ইঁদুরের আক্রমন ঠেকাত টোটকা পদ্ধতি ব্যবহার করছে কৃষকেরা। প্রতিকারের জন্য বালাইনাশক দিয়েও সুফল পাচ্ছেনা। অনেক টোটকা(লোকমুখে প্রচলিত) পদ্ধতি প্রয়োগ করতে বাধ্য হচ্ছে।
কৃষকরা ধান ক্ষেতে কলার বাইগড়্যা, পলিথিন, ইঁদুর মারা বিভিন্ন কোম্পানীর (কীটনাশক) বিষ, ও বিষটাপ ব্যবহার করছে। ছুটির দিনেও ইঁদুরের আক্রমন প্রতিরাধে মাঠে মাঠে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তাগণ।
ইঁদুর নিধনের সাথে সাে পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষেতের মধ্যে পার্চি পদ্ধতি (কঞ্চি গ্রাথিত করা)প্রয়ােগ ও ধান ক্ষেতে ফাঁড়ি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ধানের থোড় এসেগেছে। এ সময় পচন ও কারেট পোকার আক্রমন হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে, তাই কৃষকদেরকে পরিমিত ও সঠিক সময়ে কীটনাশক বিশেষ করে জৈব বালাইনাশক প্রয়োগ করার জন্য নিজ নিজ ব্লক পর্যায়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ।
এদিকে ইঁদুরের আক্রমনে দিশেহারা সদর ইউনিয়নের হাঁকরইল গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের জানান, তার তিন বিঘা জমিতে ইঁদুরের আক্রমন ঠকাতে কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছেনা। ঝিকড়া গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান জানান, ইঁদুরের আক্রমন সিনজেনটা, বায়ার কোম্পানীর বিষ এমনকি সুরমা বিষ দিয়েও কাজ হচ্ছেনা।
নজোমপুরের কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান, ইঁদুরর ধানকাটা প্রতিরাধ করতে যতরকমের বিষ লাগে সবই দিয়েছি কিছুতই কাজ হচ্ছেনা।
সূর্যপুর গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, ক্ষেতে পানির মধ্যেও ইঁদুরে ধান কাটছে। ক্ষেতের মধ্যে কলাগাছের সাথুড়কা, পলিথিন, সুতলী ও বিষটাপ দিয়েও কাজ হচ্ছেনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মেদ জানান, চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার ৫২০ হেক্টর ধরে সারের জন্য চাহিদাপত্রের বিপরিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ব্রী-৭৫,৮০, ৮৭ ও বীনা-১৭ জাতের এবং সেই সাথে ব্রী-৫১ ও পারিজা জাতের প্রায় ২৩ হাজার হেক্টর রোপা আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শমসের আলী জানান, ধানের বাজারমূল্য ভাল থাকায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর আম বাগানেও ধানের আবাদ হয়েছে। তাই এবছরে ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী আবাদ হয়েছে। এদিকে উপজলা কষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মদ তাঁর ভেরিফায়ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম(ফেসবুক)’র মাধ্যমে ‘কৃষি পরামর্শ’ দিয়ে যাচ্ছেন।
বিএ/