খবর২৪ঘন্টা বিনোদন ডেস্কঃ
অস্কার বিজয়ী ভারতীয় সংগীত ব্যক্তিত্ব এ আর রহমান। অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসা যেমন পেয়েছেন, তেমনি তার ঝুলিতে জমা হয়েছে ‘পদ্মশ্রী’ ও ‘পদ্মভূষণ’সহ দেশি-বিদেশি অনেক পুরস্কার। কিন্তু এক সময় হতাশায় ভুগে আত্মহত্যার কথাও ভাবতেন তিনি।
কয়েকদিন আগে প্রকাশিত হয়েছে তার জীবনী ‘দ্য অথরাইজড বায়োগ্রাফি অব এ আর রহমান’। বইটি লিখেছেন কৃষ্ণা তিলক। এ উপলক্ষে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এ আর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘অন্তত আমার ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত আত্মহত্যার কথা ভাবতাম। অধিকাংশ মানুষই ভাবতেন, আমি খুব ভালো মিউজিক কম্পোজার নই। তার উপর ছোটবেলাতেই বাবা মারা যান। পার্থিব অনেক কিছুর জন্য পুরোপুরি হতাশায় ডুবে থাকতাম।’
‘সবাই আশ্চর্য হতো, আমি কীভাবে বেঁচে আছি। আমার বয়স তখন ২৫ বছর। মনে হতো, যেন সব কিছুই খাচ্ছি, অথচ শরীরে কোনো চেতনা নেই। দৈনন্দিন কাজকর্মের কিছুই ভালো লাগত না। আমি ওগুলো করতেই চাইতাম না। তবে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টাতে থাকে বাড়ির পেছনে যখন নিজের সংগীত স্টুডিও ‘পঞ্চথন রেকর্ড ইন’ তৈরি করি।’ বলেন এ আর রহমান।
এ আর রহমানের বাবার নাম আর কে শেখর। তিনিও ছিলেন মিউজিক কম্পোজার। অনেক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু মাত্র নয় বছর বয়সেই বাবাকে হারান তিনি। তখন তার বাবার সংগীতের সরঞ্জাম ভাড়া দিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। জীবনের এই কঠিন বাস্তবতা থেকেই নির্ভয় হওয়ার শিক্ষা নিয়েছেন এ আর রহমান। তার সঙ্গে ছিল তার পিতৃদত্ত নাম। এটা অনেকেই জানেন না, রহমানের ছোটবেলার নাম ছিল ‘দিলীপ কুমার’। এটা ছিল তার অন্যতম অপছন্দের বিষয়। কারণ তিনি সব সময় চাইতেন, নিজের পরিচয়ে বাঁচতে, কোনো নায়কের নামে তিনি বাঁচতে চাইতেন না।
এ আর রহমানের জীবনের এই কঠিন সময়, নামের প্রতি বিতৃষ্ণা তাকে বরং প্রেরণা দিয়েছিল। এই কঠিন সময় কাটাতে কাটাতেই মনি রত্নমের ‘রোজা’ সিনেমার মাধ্যমে তার উত্থান শুরু। কার্যত সংগীতের সব গ্রামার ভেঙে এমন এক সুর-তাল-লয় সৃষ্টি করেছিলেন যে, তখন তাকে বলা হতো বলিউডে প্রবেশ করেছে এক ‘ওয়ান্ডার কিড’। তারপর এ আর রহমানের স্বপ্নের যাত্রা আর থামেনি। এ আর রহমান বলেন, ‘আগে নিজেকে বুঝতে হবে, আমি কি। মনের কথা শুনতে হবে। আর সেটা একবার শুনতে পেলে আপনি হারিয়ে যাবেন এবং নিজেকে ভুলে ওই অন্তরের জগতে ঢুকে পড়বেন।’
খবর২৪ঘন্টা / সিহাব