1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
দুর্ভোগে ৫০০ পরিবার, খাটিয়া মাথায় সাঁতরে নিতে হয় লাশ - খবর ২৪ ঘণ্টা
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন

দুর্ভোগে ৫০০ পরিবার, খাটিয়া মাথায় সাঁতরে নিতে হয় লাশ

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৯ ফেব্ুয়ারী, ২০২০

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: দুর্গম জনপদ ‘থোয়াংগেরকাটা শিয়াপাড়া’ কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়ন ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের একটি সীমান্ত গ্রাম। সীমান্ত গ্রাম হওয়ায় উন্নয়নের জোয়ারেও চরম অবহেলিত গ্রামটি।

দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, পার্বত্য ও সমতল এলাকার এমপি, উপজেলা কিংবা জেলা পরিষদের কর্তা ব্যক্তিদের নজরে আসেনি গ্রামটি। এজন্য গ্রামের যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি যুগের পর যুগ। এ অবস্থায় একটি সেতুর অভাবে মরদেহবাহী খাটিয়া মাথায় নিয়ে সাঁতার কেটে খাল পার হয়ে দাফন করতে যেতে হয় স্বজনদের।

গ্রামটির মানুষের কাছে এমন ঘটনা পুরাতন হলেও সম্প্রতি স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধার মরদেহবাহী খাটিয়া মাথায় নিয়ে খালে সাঁতার কেটে দাফন করতে নিয়ে যাওয়ার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। দেখে আদি যুগের ঘটনা মনে হলেও এই গ্রামের প্রত্যেক মানুষের মরদেহ এভাবেই খালে সাঁতার কেটে দাফন করতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অহরহ দেখা যায়।

কয়েকদিন আগে খালে সাঁতার কেটে মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ মুজারোর মরদেহ গর্জনিয়ার ৩নং ওয়ার্ডের থোয়াংগেরকাটা শিয়াপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় মারা যান তিনি। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পারিবারিক কবরস্থানসংলগ্ন মসজিদ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদ মাঠে মরদেহ আনতে খাটিয়া মাথায় সাঁতার কেটে খাল পার হতে হয় স্বজনদের।

গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আবদুল জব্বার বলেন, মোজাফ্ফর আহমদের পুরো পরিবারের শিয়াপাড়ার গর্জনিয়ায় আদিবাস হলেও তিনি বাইশারী সীমানার নারিশবুনিয়া অংশে আবাসন গড়েছেন। সেখানে মারা গেলেও বাপ-দাদা ও স্বজনদের সঙ্গে সমাহিত করতে তাকে গর্জনিয়ায় আনা হয়। মরদেহ আনতে এলাকার হরিণখাইয়া নামক খাল পার হতে গিয়ে বিপাকে পড়েন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। কারণ খালের ওপর স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি করা সাঁকো থাকলেও মরদেহ নেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। বাধ্য হয়ে খালের পানিতে সাঁতরে খাটিয়া মাথায় মরদেহ পার করতে হয়।

আবদুল জব্বার মেম্বার বলেন, দীর্ঘদিন যোগাযোগের পর কয়েক মাস আগে রামু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের একজন প্রকৌশলী এ স্থান পরিদর্শন করেন। এরপরও কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

থোয়াংগেরকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য আবদুল আলিম বলেন, বান্দরবানের সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় গ্রামটি অবহেলিত। দীর্ঘদিন এলাকাবাসী এখানে সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেননি জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা। ফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এখানে দুই পারের হাজার হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদের কারণে পানিভর্তি থাকে খাল। ফলে বর্ষা ও শুষ্ক উভয় মৌসুমে মরদেহ নেয়া এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ে গ্রামবাসী।

রামু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসউদ রানা সায়েম বলেন, হরিণখাইয়া খালের স্থানটি দুই মাস আগে দেখতে গেছি। কিন্তু ওখানে সংযোগ সড়ক নেই। ফলে বিধি অনুযায়ী সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে খালের দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে সেতু নির্মাণ সম্ভব।

এদিকে খালের পানিতে সাঁতার কেটে খাটিয়া পারাপারের হৃদয়বিদারক দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সেই সঙ্গে অবহেলিত জনপদের জনদুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে জানতে গর্জনিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। খুদেবার্তা পাঠিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলেও কোনো উত্তর দেননি চেয়ারম্যান নজরুল।

একইভাবে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি কক্সবাজার-৩ আসনের এমপি সাইমুম সরোয়ার কমল। ফলে বিষয়টি নিয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, আমি সেদিন মুক্তিযোদ্ধা মুজারোর জানাজায় অংশ নিয়েছিলাম। মোজাফ্ফর আহমদরা দুই ভাই আমার ইউনিয়নের নারিশবনিয়ায় বাড়ি করেছেন। কিন্তু পারিবারিক আচার-অনুষ্ঠান পুরোনো বাড়িতে করেন তারা। তাই দাফনও সেখানে হয়। হরিণখাইয়া খালের দক্ষিণে গর্জনিয়া-উত্তরে বাইশারির নারিশবনিয়া। গর্জনিয়া এলাকার প্রায় ৫০০ পরিবার খাল পার হলে নারিশবনিয়া বাজারে যাওয়া-আসা করে। রামু উপজেলার অধিবাসী হলেও গর্জনিয়ার এ এলাকার মানুষগুলো বাইশারি ও নারিশবনিয়া বাজারের ওপর নির্ভরশীল।

তিনি বলেন, আমার এলাকার প্রায় সকড়-উপসড়ক পাকা এবং বড়-ছোট খালের ওপর সেতু করে দিয়েছেন পার্বত্যবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর। খালটি পার হয়ে আমার এলাকার লোকজনের গর্জনিয়া অংশে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যদি প্রয়োজন পড়ত তাহলে হরিণখাইয়া খালে এতদিনে একটি সেতু করে দিতাম। খালটির ওপর ৪০-৪৫ ফুটের একটি সেতু ও উভয় পাশে সড়ক নির্মাণ করা গেলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলত গ্রামের বাসিন্দাদের।

খবর২৪ঘন্টা/নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST