সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: 

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১১তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলে নগরীর মালোপাড় বিএনপি কার্যালয়ে মহানগর যুবদলের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পূণর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। সভা পরিচালনা করেন মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন। অন্যদের মধ্যে জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম হারু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, মহানরগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বাবলু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, জেলা যুবদলের সাংগটনিক সম্পাদক জুলফিকার রহমান ভুট্টো ও মহানগর যুবদলের দপ্তর সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম ডিনপল সহ যুবদলের সাংগটনিক ৩৭টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা বুলবুল বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে দেশের জনগণের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করে দিয়েছে। মানুষের স্বাধীণতা খর্ব করে একনায়কতন্ত্র ও বাকশাল তৈরী করেছে। গণমাধ্যম সহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা হরণ করেছে। তারা পূনরায় অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় আসার জন্য নানা প্রকার কৌশল অবলম্বন করা শুরু করেছে। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ১সেপ্টেম্বর ঢাকার জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিএনপি’র এই জনসমুদ্র দেখে অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মসনদ কেপে উঠেছে। তিনি এখন অসামঞ্জস্য কথা বলা শুরু করেছেন। বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। এই দল অন্যায়ের নিকট কখনো মাথা নত করে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের মানুষকে বাকশাল থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপি প্রতিষ্টা করে গেছেন। তার যোগ্য সহধর্মীনী বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে স্বৈরাচারের কবল থেকে রক্ষা করতে দীর্ঘ সময় সংগ্রাম করেছেন এখনো সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তাঁদেরই সুযোগ্য জ্যেষ্ঠ্য পুত্র আগামীর রাষ্ট্র নায়ক বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুন্যের অহংকার জননেতা তারেক রহমানকে ২০০৭ সালের ৭মার্চ স্বরযন্ত্র করে বাড়ি থেকে তুলে এনে ৫৫৪ দিন কারাগারে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে তৎকালীন তত্বাবধায়ক সরকার। আর এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখে অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারেকসহ তার পরিবারের সকল সদস্যকে হেনস্তা করছে প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, দেশ থেকে জিয়া পরিবার তথা বিএনপিকে নির্মূল করার জন্য বর্তমান সরকার নীলনক্সা একেছিল। কিন্তু বাংলার মানুষের অকুণ্ঠ ভালবাসা ও বিএনপি’র ঐক্যবদ্ধ শক্তি থাকায় তারা কিছুই করতে পারেনি। এখন আবার নুতন করে ২১ আগস্টের গেনেট হামলায় তারেক রহমানকে নতুন করে আসামী করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে এই সরকার। সরকারের এই সকল প্রকার ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য নিয়মতন্ত্রিকভাবে আন্দোলন চললেও এখন আর কোন নিয়ম মানা হবেনা বলে হুঁশিয়ারী দেন বুলবুল। তিনি বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবীতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আর এই আন্দোলনে অংশগ্রহন করার জন্য ফোনের আসায় না থেকে কেন্দ্রের নির্দেশনা মানার জন্য নেতাকর্মীদের আহবান জানান তিনি। সেইসাথে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্থ্যতা করেন বুলবুল।

বিএনপি নেতা মিলন বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেপ্টেম্বর ৩ তারিখ দীর্ঘদিন কারাভোগের পর মুক্ত হন। জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী মানুষ এবং বিএনপি এই দিনটিকে অত্যন্ত ভালভাবে স্বরন করে আসছে। তারেক রহমানকে মেরে ফেলার জন্য ২০০৭সালে আর্মিরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে অসুস্থ করে ফেলে। এছাড়াও তারা বেগম জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে আটক করে একই ভাবে অত্যাচার করে। এই অত্যাচারে অসুস্থ হয়ে পরে তিনি মারা যান। কিন্তু তারেক রহমান এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায়  বিদেশে অবস্থান করছেন। তাকে এই ফ্যাসিস্ট ও অনির্বাচিত সরকার দেশে আসতে দিচ্ছেনা । বিভিন্ন মামলা দিয়ে আটক দেখিয়ে দেশের বাহিরে অবস্থান করতে বাধ্য করছে। সেইসাথে তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্জন কারাগারে রেখে তাঁকেও মেরে ফেলার পাঁয়তারা করছে। বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখে পুণরায় ২০১৪সালের ৫ জানুয়ারীর মত নির্বাচন করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে এই সরকার। তারা ই.ভি.এম পদ্ধতি চালু করে কারচুপির নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট এবং বাংলার মানুষ তাদের এই স্বপ্ন ও ষড়যন্ত্র কঠোর ভাবে দমন করবে বলে জানান মিলন। তিনি আরো বলেন, এই সরকার দেশে খুন, গুম, নির্যাতন করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

দুর্নীতি করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। ব্যাংক ও শেয়ার বাজার লুট করে আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। শেখ হাসিনা রাজশাহীবাসী, রাজশাহীর পুলিশ ও প্রশাসনকে বিশ্বাস করেন না। কারন গত সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতী করে সরকার দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য অন্য জেলা থেকে পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন নিয়ে এসেছিলেন। এমনকি এই সরকারে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর তাদের দলীয় নেতাকর্মীদেরও বিশ্বাস করেনা বলে জানান তিনি। আগামী সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষে নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যুবদলকে আহবান জানান। বিএনপি এই তারুণ্যের জয় জয়কারে সকল প্রকার সহযোগিতা করবে বলে জানান মিলন। তিনি আরো বলেন, কারো নির্দেশ নয় দেশের স্বার্থে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে একসাথে সকলকে এই সরকার পতনের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করার আহবান জানান তিনি। যুবদল নেতৃবৃন্দ তারেক রমহানকে দেশে ফিরিয়ে আনা, আগামী সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ববধায়ক সরকারের অধিনে এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে বিএনপি’র সকল প্রকার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সেইসাথে রাজশাহী থেকে যুবদলই সরকারের পতনের আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুঁমিয়ারী দেন তারা।

খবর২৪ঘণ্টা/এম