সিয়াম-সাধনা ও আত্মশুদ্ধির মাস পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম রোজায় তরমুজ রাজশাহী মহানগরীর বাজারগুলোতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। এবার সেই তরমুজের দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। যদিও মঙ্গলবার রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত আড়তগুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রতি কেজি তরমুজের দাম ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেই। কিন্তু একদিন পরেই নগরের উপশহর নিউমার্কেট এলাকায় বুধবার সকালে ৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায়। শুধু ওই দোকানেই নয় নগরের অনেক দোকানেই ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে যাওয়ার পর ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রমজানের রোজা ও তীব্র গরমের কারণে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে রসালো ফল তরমুজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
এতে সাধারণ মানুষতো দূরের কথা মধ্যবিত্তরাও তরমুজের ধারে কাছে যেতে পারছেন না। কারণ তরমুজের দাম এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সারাদিন রোজা রেখে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজায় ইফতারের সময় একটি স্বস্তি পেতে অন্যান্য ইফতার সামগ্রীর পাশপাশি রসালো ফল তরমুজ রাখতেন। গরমে ক্রেতাদের চাহিদাকে পুঁজি করেই ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে তরমুজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্ত মাঠ থেকে চাষীর কাছ থেকে পাইকারি ক্রেতা বা মধ্যস্বত্বভোগীরা কম দামে প্রতি পিস তরমুজ কিনছেন। অথচ কম দামে তরমুজ কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। তাও আবার কেজিতে। এ নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রথম রাজশাহীর বাজারে বরিশাল থেকে আমদানি করা তরমুজ উঠে। শুরুতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি তরমুজ বিক্রি হলেও তেমন গ্রাহক ছিলনা। প্রথমে ক্রেতা না থাকলেও পরে বেচাকেনা ভালোই চলছিল। রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে তরমুজ বিক্রি হয়। প্রথম রোজাতে নগর ও বাইরের বাজারগুলোতে অনেক বেশি তরমুজ বিক্রি হয়। একদিকে গরম ও অন্যদিকে রোজা হওয়ার কারণে তরমুজের চাহিদা বাড়তে থাকে। ক্রেতাদের চাহিদাকে পুঁজি করে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী হঠাৎ করেই তরমুজের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেড়ে যায়।
বর্তমানে বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। এনিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, সিন্ডিকেট করে তরমুজের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর মনিটরিং দরকার। শুধু তরমুজের দামই নয় অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
তরমুহ কিনতে আসা রহিম নামের এক ক্রেতা বলেন, কয়দিন আগেও ৩০ টাকা কেজি তরমুজ কিনলাম। এখন কিনতে এসে শুনছি ৬০ টাকা কেজি। এতো দাম বাড়ার কারণ কী তাও বোধগম্য নয়।
আরেক ক্রেতা বলেন, যেসব ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। এদিকে, তরমুজের দাম নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালন করে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত দামে বেশি কেউ নিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম চলে আসার পরে আবারো বিক্রেতারা বেশি দামে তরমুজ বিক্রি করা শুরু করে।
এস/আর