1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
ডিসি অফিসে নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা সাংবাদিক আরিফের - খবর ২৪ ঘণ্টা
শুকরবার, ১০ জানয়ারী ২০২৫, ১১:৩ অপরাহ্ন

ডিসি অফিসে নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা সাংবাদিক আরিফের

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৫ মারচ, ২০২০

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: ‘আমি আকুতি মিনতি করি। আল্লাহর কসম দেই। সন্তানের কসম দেই। প্রাণভিক্ষা চাই তাদের কাছে। এরপরও তারা ক্ষান্ত হচ্ছিলেন না। তারা আমাকে বারবার কলেমা পড়তে বলছিলেন। এ সময় আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার, রাজস্ব) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

রাতের বেলা বাসা থেকে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর এক দিন পর মুক্তি পেয়ে সাংবাদিক আরিফ এভাবেই তাকে নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

রবিবার কুড়িগ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কুড়িগ্রামের বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম। বর্ণনা দেন শুক্রবার গভীর রাতে তাকে তুলে নেওয়ার ঘটনার, তার ওপর চালানো ভয়ানক নিগ্রহের। এ সময় নিজের নিরাপত্তার দাবি করেন রাষ্ট্রের কাছে।

তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে খেয়ে শুয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় দরজায় ধাক্কার শব্দ পান। পরিচয় জানতে চাইলে, ওপাশ থেকে বলা হয়, ‘থানা থেকে আসছি।’ আরিফুল বলেন, ‘এ সময় আমি সদর থানার ওসিকে ফোন দিই। ওসি বলেন, থানা থেকে কাউকে পাঠানো হয়নি। ফোন দেওয়ার কথা শুনে বাইরে থাকা আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার, রাজস্ব) নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল লোক দরজা ভেঙে বাসায় ঢোকে। এ সময় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমাও ছিলেন। তবে রিন্টু চাকমা কোনো আঘাত করেননি। ঘরে ঢুকেই আরডিসি নিজাম উদ্দিন আমার মাথায় কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। মারতে মারতে আমাকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে চোখ-হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর আমাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে এনকাউন্টার দিতে চায়। আমাকে বারবার বলেন, আজ তোর জীবন শেষ। তুই কলেমা পড়ে ফেল, তোকে এনকাউন্টার দেওয়া হবে।’

আরিফুল জানান, এ সময় কান্নাকাটি করে প্রাণ ভিক্ষা চান তিনি। তিনি বলেন, পরে তারা আমাকে গাড়িতে করে একটি ভবনে নিয়ে যায়। আমি চোখের কাপড় একটু খুলে বুঝতে পারি এটা ডিসির কার্যালয়। এবার আমি একটু আশ্বস্ত হই যে আমাকে এনকাউন্টারে দেওয়া হবে না।

তিনি আরও জানান, তাকে হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করে অমানুষিক নির্যাতন ও তার ভিডিও ধারণ করা হয়।

আরিফ বলেন, ‘নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে আমাকে একটি কক্ষে নিয়ে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করা হয়। নিজাম উদ্দিন বলেন, তোর ভিডিও করে রাখছি। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। একপর্যায়ে নিজাম উদ্দিন বলেন, তোর বাবার নাম কী। আমি বলি, স্যার, আমার বাবা তো মারা গেছেন। তখন নিজাম উদ্দিন আবার পেটাতে পেটাতে বলেন, বল, ডিসি আমার বাবা, ডিসি আমার বাবা। আরডিসি বারবার আরেকজনকে বলছিলেন, ডিসি স্যারকে ফোন দাও, মেসেজ দাও। কী করব, সেটা বলতে বলো?’

আরিফ বলেন, ‘মারধরের সময় আমি বারবার জানতে চেয়েছি, আমার অপরাধ কী? তখন নিজাম উদ্দিন বলেন, তুই আমাদের অনেক জ্বালাচ্ছিস। ডিসির বিরুদ্ধে লিখিস। তুই বড় সাংবাদিক হয়ে গেছিস। আজ তোর সাংবাদিকতা ছোটাব।’

তিনি বলেন, এরপর চোখ বাঁধা অবস্থায় আমার কাছ থেকে জোর করে চারটি কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়। পরে তাড়াহুড়ো করে আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আমাকে যে নির্যাতন করা হয়েছে তার আঘাতের চিহ্ন আমার শরীরে আছে।

ডিসির অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে তার সঙ্গে এমন অমানবিক ও আইনবিরুদ্ধ আচরণ করা হয় বলে জানান আরিফুল ইসলাম।

বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন সাংবাদিক আরিফুল। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রেদওয়ান ফেরদৌস সজিব জানান, আরিফুল ইসলাম রিগান বর্তমানে ভালো আছে। তার শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। এসব রিপোর্ট হাতে এলে প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।

রবিবার সকালে সাংবাদিক আরিফের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। দুপুর ১২ টার দিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন।

এদিকে আরিফুলকে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ড দেয়ার ঘটনায় আলোচিত কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করছে সরকার। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বিভাগীয় ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

রবিবার দুপুরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ওই ঘটনার তদন্ত করে ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাকে প্রত্যাহার করা হবে। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। কর্ম অনুযায়ী তার শাস্তি হবে।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন করলে ডিসিকে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

খবর২৪ঘন্টা/নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST