সাইবার অপরাধ দমনে পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহার না করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ আর মুক্তমত প্রকাশ দমনে ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা। দুই বছরে এই আইনে লেখক এবং সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগ তৈরি করেছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে হুমকির মধ্যে ফেলছে, এমন মত সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক গোলাম রহমান ও বিএফইউজের সহ সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার।
ডিজিটাল বাংলাদেশে নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ হয়। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আইনটি হ্যাকিং, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের অর্থ চুরি, জঙ্গি মতাদর্শ প্রচার বা নারী বিদ্বেষ ছড়ানোর মতো অপরাধ দমনে যতটা ব্যবহার হচ্ছে তার চেয়ে বেশি প্রয়োগ হচ্ছে ভিন্নমত দমনে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল ১৯ এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ আইনে ৪১টি মামলায় ৭৫ জন গণমাধ্যমকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩২ জন।
এই বিষয়ে তথ্য কমিশনারের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, মানুষের মতপ্রকাশের যে অধিকার তা এখন হুমকির মুখে পড়েছে। বিচার করার আগেই যদি মৃত্যু হয়, তাহলে তা মেনে নেওয়া যায় না।
একই বিষয়ে বিএফইউজের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ডিজিটাল আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে। এই আইনের সুযোগ নিচ্ছে দুর্নীতিবাজরা, অনিয়মকারীরা; আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুষ্কৃতকারীরা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যারা কটূক্তি করছে তাদের চেয়ে বেশি মামলা হচ্ছে সাংবাদিক, সাধারণ লেখক ও সংস্কৃতিকর্মীদের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে সরকারের সচেতন হওয়া দরকার। আর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনটি সংশোধন না করলে তা বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য বাধা হয়ে থাকবে।
এছাড়া অপপ্রয়োগ রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮, ২৯ ও ৩১ নম্বর ধারা বাতিল করার দাবি জানান গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা।
জেএন