জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার মোহনপুর বাজারে অবস্থিত জেলা পরিষদের জায়গা ইজারা দেওয়ার নাম করে ২ লাখ টাকা গ্রহন ও পরে জায়গা বুঝে দিতে ব্যার্থ হলে তদবিরের টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোর করে সাদা নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক তদবির কারকের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার দুপুরে জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন জেলার আক্কেলপুর উপজেলার আমানপুর গ্রামের মৃত আকবর হোসেনের ভুক্তভোগী জুয়েল ইসলাম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভূক্তভোগী জুয়েলের ভগ্নিপতি হাবিবুর রহমান, মামা সাদ্দাম হোসেন, ভাগ্নে আরিফুল ইসলাম সহ তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
জুয়েল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, জয়পুরহাট জেলা শহরের আরাফাত নগর এলাকার দিলবর আলীর ছেলে তদবির কারক রফিকুল ইসলাম ভুট্টু আক্কেলপুর উপজেলার মোহনপুর মৌজায় অবস্থিত জেলা পরিষদের ৮৯ নং জেএল এর ২১৯ নং খতিয়ানের ৬২ নং দাগের ৯ = ১০= ৯০ বর্গ ফুট জায়গা তার ছোট ভাই উজ্জল হোসেনের নামে স্থায়ী ইজারা দেওয়ার কথা বলে গত ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
পরবর্তীতে জেলা পরিষদের উক্ত জায়গাটি জুয়েলের ছোট ভাইয়ের নামে জেলা পরিষদ কর্তৃক ইজারা দেওয়া হয়েছে, এমন কথা বলে তদবির কারক রফিকুল ইসলাম ওরফে ভুট্টু গত ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ৩’শ টাকা মূল্যের ষ্ট্যাম্পে লিখিত ইজারা নামা তার বাড়িতে পৌঁছে দেন। ওই ইজারা নামায় স্বাক্ষী হিসেবে রফিকের স্বাক্ষর ও জেলা পরিষদের তদান্তিন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোহাম্মদ হোসেন গত ১৫ সালের ৬ ডিসেম্বরে স্বাক্ষর করেন।
তবে ওই ইজারানামা অনুযায়ী কাঙ্খিত জায়গাটি তাকে বুঝে দেওয়া না হলে এ বাবদ পূর্বেই রফিক যে ২ লাখ গ্রহন করেন তা ফেরত লাভের জন্য বারবার অনুরোধ করেন বলেও জুয়েল অভিযোগ করেন। ব্যাপারে বারবার তাগাদা দিলে রফিকুল ইসলাম ভুট্টু টাকাগুলি দিব দিচ্ছি বলে তালবাহানা করতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে গত ১৭ জানুয়ারী বুধবার বিকালে জয়পুরহাটে রফিকের বাসায় গিয়ে জুয়েল টাকাগুলি ফেরত চান।
এ সময় তিনি ফোনে তার সহযোগী কথিত সাংবাদিক রং মিস্ত্রি এনামুল হোসেন, রাসেল বাবু, স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বিক্রেতা কথিত ষ্টাফ রিপোর্টার শামছুল আলম বাহাদুর, আইনজীবি পরিচয়দানকারী আরো একজন অজ্ঞাত ব্যাক্তিসহ কয়েক জন অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে রফিক তার বাসায় ডেকে আনেন জুয়েল আরো জানান, ‘রফিকুল ইসলাম ভূট্টুসহ উল্লেখিত ব্যক্তিরা আমাকে বেদম মারপিট করেন ও প্রান নাশের হুমকি দিয়ে ১শত টাকা মূল্যের ৩টি সাদা নন-জুডসিয়াল ষ্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নেন।’জুয়েল
পরে গত ২১ জানুয়ারী ওই ৩টি সাদা ষ্ট্যাম্প উদ্ধারে তার বিরুদ্ধে জয়পুরহাট নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন জুয়েল। এ অবস্থায় রফিকুল ইসলাম ভূট্টুর কাছে সমন পৌঁছিলে তিনি গত ১৮ ফেব্রুয়ারী আদালতে ষ্ট্যাম্পগুলি দাখিল করেন। সেখানে অভিযুক্ত রফিক জুয়েলকে ২০ লাখ টাকা ব্যাক্তিগত ভাবে ঋণ দিয়েছেন বলে একটি অঙ্গিকার নামা তৈরী করেন। প্রকৃত পক্ষে রফিকের এতগুলো টাকা দেওয়ার মত কোন আয়ের উৎস বা ব্যাংকে জমানো অর্থ কিংবা নগদ লেনদেনের কোন ব্যবসা নাই। এরপরেও তিনি নিজেকে জেলার বড় সাংবাদিক দাবী করে ভূক্তভোগী জুয়েলকে অনবরত হুমকি প্রদান করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন পূর্বক উক্ত রফিকুল ইসলাম ভূট্টুর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবীও করেন জুয়েল।
উল্লেখ্য ইতোপূর্বে রফিকুল ইসলাম রফিক এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জেলার পাঁচবিবি উপজেলার চেঁচরা সিমান্ত এলাকায় চাঁদাবাজী করতে গেলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাকে বেদম প্রহার করেন. এ ছাড়া তদবির, চাদাঁবাজী, চারিত্রিক স্খলনসহ নানা অভিযোগে তিনি জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কৃত হন।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে রফিকুল ইসলাম ওরফে ভুট্টু অভিযোগ অস্বীকারসহ মুদ্রন অযোগ্য ভাষা ব্যবহার করেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ