খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: ঢাকার সাভার থানার ভাটপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ছয় সক্রিয় সদস্যকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (২৪ জুলাই) ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এ তথ্য জানা যায়।
তারা হলেন- ওমর ফারুক ওরফে রুবেল ওরফে সানী (২৮), হাবিবুর রহমান ওরফে বাদশা (৪৮), সাইদুর রহমান ওরফে সাইদুর (৫৫), মাহবুবুর রহমান ওরফে দুদু (৫৫), শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক (৩৭) ও গোলাম মোস্তফা (৫১)।
আদালতের সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাজাদী তাহমিদা তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার (২০ জুলাই) তাদের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। সাভার মডেল থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাজাদী তাহমিদা দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শনিবার (১৮ জুলাই) দিবাগত রাতে র্যাব-৪ এর একটি দল তাদের গ্রেফতার করে।
র্যাব-৪ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, গ্রেফতার জেএমবি সদস্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, লিফলেট, সাময়িকী, ডিজিটাল কনটেন্টসহ মোবাইল, টর্চ লাইট, ভ্রমণ ব্যাগ, নিত্য ব্যবহার্য পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার ওমর ফারুক সানী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি পেশায় মাদরাসা শিক্ষক। জামালপুর জেলার ঘোড়াধাপ এলাকার জেএমবির শীর্ষ নেতা হাবিবুর রহমান ওরফে বাদশার সঙ্গে পরিচয় সূত্রে জেএমবির দাওয়াত পান। তিনি একজন শীর্ষস্থানীয় জেএমবি নেতার কাছ থেকে বিভিন্ন এনক্রিপটেড সফটওয়্যার ও মোবাইল অ্যাপ সম্পর্কে শিক্ষাগ্রহণ করেন। তিনি পাঁচ বছর ধরে জেএমবির সঙ্গে জড়িত। তার মোবাইল থেকে জেএমবির বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
হাবিবুর রহমান ওরফে বাদশা জামালপুর সদর থানার ঘোড়াধাপ এলাকায় জেএমবির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। গত ১০ বছর ধরে জেএমবির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত তিনি। সহযোগীদের নিয়ে গোপনে মোটিভেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তিনি। আর ১৯ বছর ধরে জেএমবির সঙ্গে জড়িত সাইদুর রহমান একজন সক্রিয় সদস্য। গোপনে জেএমবিকে আরও শক্তিশালী করতে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও অসচ্ছল সদস্যদের মনোবল ধরে রাখতে তিনি বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তা করে থাকেন।
মাহবুবুর রহমান ঘোড়াধাপ এলাকার জেএমবির নেতৃত্বদানকারী একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি জেএমবি সদস্যদের মাঝে জঙ্গি সংক্রান্ত বই, ম্যাগাজিন গোপনে বিতরণ করেন। শফিকুল ইসলাম জামালপুর জেএমবির সক্রিয় সদস্য। তিনি ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত থেকে দীর্ঘদিন ধরে জেএমবির সঙ্গে যুক্ত।
গোলাম মোস্তফা জেএমবির একজন প্রশিক্ষিত ও সক্রিয় সদস্য। ২০০৪ সালে জেএমবি কর্তৃক জামালপুরে মুসলিম থেকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত আলোচিত গনি গোমেজ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র তিনি সরবরাহ করেন বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
খবর২৪ঘন্টা/নই