আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার জাতিসংঘের নেই বলে মন্তব্য করেছেন, মিয়ানমারের ক্ষমতাধর সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ চালানোর দায়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ অন্য শীর্ষ জেনারেলদের বিচারের মুখোমুখি করতে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা আহ্বান জানানোর এক সপ্তাহ পর রবিবার সেনা সদস্যের উদ্দেশ্য দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এর মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে প্রতিক্রিয়া দিলেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান।
মিয়ানমারের রাজনীতি থেকে সেনাবাহিনীকে সরে যাওয়ার যে দাবি জাতিসংঘ জানিয়েছে তারও সমালোচনা করেন মিন অং হ্লাইং। তিনি বলেন, ‘একটি দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ করার এবং দেশটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কোনো দেশ, সংস্থা বা গোষ্ঠীর নেই।’
২০১৭ সালে আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সে সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানকে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করে, যা আন্তর্জাতিক আইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ।
রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় ৭ লাখের মতো রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, রাখাইনে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ করছে এবং তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
অবশ্য বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে মিয়ানমার সরকার। বরং রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দমনেই রাখাইনে সেনা অভিযান চালানো হয় বলে দাবি করে তারা।
তবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে তাতে সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘প্রকৃত নিরাপত্তা হুমকির ক্ষেত্রে যথাযথ ও সঙ্গতিপূর্ণ নয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৭ সালের মার্চে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল গঠিত এই মিশনের প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার জন্য পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে বলেও জানানো হয়।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন