ওমর ফারুক, রাজশাহী :
আর মাত্র দুই দিন পর উদযাপিত হবে মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে রাজশাহী মহানগরীর মানুষ সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করছেন বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই। অন্য বছরের মতো এবার আগে কেনাকাটা শুরু না হলেও গত সপ্তাহ থেকে ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মার্কেটগুলো। ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরাও। সরকারী ছুটির দিনে পবিত্র ঈদুল আযহার কেনাকাটায় আরো বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নগরবাসী। সরজমিনে রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রত্যেকটা মার্কেটে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কাপড়ের মার্কেট থেকে শুরু করে কসমেটিকস্ ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে সরকারী ছুটির দিনে বছরের অন্য দিনগুলোতে বাইরে খুব বেশি মানুষ দেখা যায় না। কিন্তু শুক্রবারের
চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। সপ্তাহের প্রত্যেক শুক্রবার নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজারের দোকানগুলো বন্ধ থাকে। ঈদ আসন্ন হওয়ায় এদিন একেবারেই ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে এদিন। সকাল থেকেই সাহেব বাজারের মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করতে আসে প্রচুর মানুষ। সকাল গড়িয়ে বিকেল হতেই ভিড় বাড়তে থাকে ক্রেতাদের। কাপড় ও কসমেটিকস্র দোকানের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ঈদুল ফিতরের থেকে ঈদুল আযহায় মুসলমানরা তুলনামূলক কম কেনাকাটা করলেও গত কয়েকদিন ধরেই ব্যাপক লোক
সমাগম হচ্ছে বাজারে। ক্রেতারা যেসব জিনিস কেনাকাটা করছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, শাড়ি, থ্রি-পিচ, উড়না, রেডিমেট জামা, স্কার্ফ, প্লাজো, চুরি, ফিতা, লিপস্টিক, মেকাপ সামগ্রী, ছেলেদের শার্ট, গেঞ্জিসহ বিভিন্ন পোশাক। শেষ সময়ে এসে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরাও। তাদের যেন দম ফেলার সময় নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই ক্রেতাদের পছন্দের জিনিস
দেখিয়ে বিক্রি করছেন। ক্রেতারাও পছন্দ অনুযায়ী পোশাকসক অন্যান্য জিনিস কিনছেন। সাহেব বাজার কাপড়পট্টিতে শাড়ি কিনতে আসা শামিমা নাসরিন নামের এক নারী বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে মার্কেটে সবার জন্য পোশাক কিনতে এসেছি। প্রতি ঈদেই পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করা হয়। এই দিনটি মুসলমানদের জন্য আনন্দের দিন। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে কাপড় কিনতে মার্কেটে আসা। যাতে খুশি মনে ঈদ উদযাপন করতে পারে। ঈদের কেনাকাটা করতে আসা রফিকুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই ঈদে বড়দের জন্য তেমন কিছু
কেনাকাটা করা হয় না। কিন্ত ছোট বাচ্চাদের জন্য প্রত্যেক ঈদেই কেনাকাটা করা লাগে। শিশুরা হাসিখুশিতে থাকলে বাবা-মায়েরও ভাল লাগে। আমার দুই ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে জামা কিনতে এসেছি। এবার একটু দাম বেশি মনে হচ্ছে। গত ঈদের থেকে এ ঈদে দাম বেশি ধরা হচ্ছে। কসমেটিকস্ সামগ্রী কিনতে আসা রেহেনা নামের এক তরুণীর সাথে কথা হলে সে জানায়, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে
সাজুগুজু করার কোন বিকল্প নেই। তাই বাবা-মায়ের সাথে কসমেটিকস্ সামগ্রী কিনতে এসেছি। ঈদের দিনে অনেক মজা হবে।সাহেব বাজারে সাইফ নামের এক কাপড় ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আযহায় কেনাবেচা একটু কম হয়। আগে তেম ক্রেতার দেখা মেলেনি। কিন্তু কয়েকদিন থেকে একটু করে বেচাকেনা হচ্ছে। শুক্রবারেই বেশি গ্রাহক এসেছে মার্কেটে। তাই একটু বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও রাজশাহীর অত্যাধুনিক থিম ওমর প্লাজা, নগরীর সাহেব বাজার ছাড়াও নিউমার্কেট, বিভিন্ন ব্রান্ডের শোরুম, হড়গ্রাম নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার অনেক পরে মার্কেটে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। শেষ সময়ে এসে ভালোই বিক্রি হচ্ছে।
আর/এস