1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
খবর২৪ঘন্টায় সংবাদ প্রকাশের পরে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ করলো প্রশাসন - খবর ২৪ ঘণ্টা
বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ১০:২৮ অপরাহ্ন

খবর২৪ঘন্টায় সংবাদ প্রকাশের পরে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ করলো প্রশাসন

  • প্রকাশের সময় : বৃস্পতিবার, ৬ মারচ, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীর ঘোষপাড়া মোড়ে অবৈধভাবে পুকুর ভরাটের অভিযোগে প্রশাসন অবশেষে পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল খবর২৪ঘন্টায় সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে এবং পুকুরটি ভরাট রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাজশাহী জেলা প্রশাসন এবং ভূমি অফিসের যৌথ উদ্যোগে পুকুর ভরাট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘোষপাড়া মোড়ের ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি ভেকুমেশিন এর সাহায্যে ধীরে ধীরে ভরাট করা হচ্ছিল। প্রভাবশালীরা রাতের আঁধারে মাটি ফেলে পুকুরটি দখলের চেষ্টা করছিলেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও প্রথমে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে খবর২৪ঘন্টায় বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে এবং দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেয়। উল্লেখ্য নগরের ঘোষপাড়া ফকিরপাড়া মহল্লায় অবস্থিত পুকুরটি ‘জোড়া পুকুর’ নামে পরিচিত। বোয়ালিয়া মৌজায় অবস্থিত এই পুকুর ব্যক্তি মালিকানাধীন।

তবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষণের তালিকায়ও পুকুরটি আছে। এর অংশীদারদের সঙ্গে চুক্তি করে এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কিছুদিন ধরে পুকুরটি ভরাট শুরু করেছিলেন হিকু নামের ওই এলাকারই এক ঠিকাদার। ২০২২ সালের ৮ আগস্ট হাইকোর্ট এই পুকুরগুলো সংরক্ষণসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেন। রাজশাহী শহরে আর কোনো পুকুর যেন ভরাট না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়। পাশাপাশি ভরাট হওয়া পুকুরগুলো পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনারও নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। সিটি মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

কিন্তু ওই নির্দেশনার পরও শহরে একের পর এক পুকুর ভরাট হয়েছে। দীর্ঘ সময়েও একটি পুকুরও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়নি। এই প্রথম ঘোষপাড়া ফকিরপাড়া মহল্লার পুকুরটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। পুকুরটি ভরাট বন্ধের সরকারি নির্দেশনার পর আনন্দ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদীরা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরের সামনে একটি নোটিশও টাঙানো হয়েছে। এতে লেখা, ‘এই পুকুর ভরাট করা নিষিদ্ধ। ময়লা-আবর্জনাসহ অন্য যেকোনোভাবে পুকুর ভরাট করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদেশক্রমে সহকারী কমিশনার, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।’ পুকুরটির পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত থেকে পুকুর ভরাট শুরু হয়েছিল। দুই প্রান্তে বেশ কয়েকজন শ্রমিক পুকুরটি পুন:উদ্ধারের কাজ করছেন। তারা পুকুরে ফেলা ভরাট মাটি কেটে কেটে পাড়ে আনছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী। তারা জানান, প্রায় সাড়ে তিন বিঘা আয়তনের এই পুকুরটইর দুই পাড়ে প্রায় ১০ কাঠা পরিমাণ জায়গা ভরাট করে ফেলা হয়েছে। খতিয়ানে যে অংশটুকু পুকুর, সেটুকু তারা উদ্ধার করবেন।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকার জানান, “পুকুরটি ভরাট হওয়ার খবর পাওয়ার পর আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করি এবং পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেই। যেসব জায়গায় মাটি ফেলা হয়েছে, সেগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “আমরা যদি পুকুর ভরাটের খোঁজ পাই, তাহলে আগামীতেও অবশ্যই এই কার্যক্রম চলবে।”

রাজশাহীতে একসময় প্রায় ২,৫০০ পুকুর ও জলাশয় ছিল, যা বর্তমানে মাত্র ৫০০-এর মতো রয়েছে। পুকুর ও জলাশয় ভরাটের কারণে শহরের তাপমাত্রা বাড়ছে, জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো পুকুর বা জলাশয় ভরাট করা বেআইনি হলেও বাস্তবে এসব আইন মানা হচ্ছে না।

এলাকাবাসী প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। ঘোষপাড়ার বাসিন্দা রনি বলেন, “সংবাদ প্রচার না হলে হয়তো এই পুকুরটিও বিলীন হয়ে যেত। আমরা চাই, প্রশাসন যেন রাজশাহীর অন্যান্য অবৈধভাবে ভরাট হওয়া পুকুরগুলোও রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।” হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘পুকুর উদ্ধার হচ্ছে, এটা খুব ভালো খবর। আমাদের যে চাওয়া, তার বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে।’

তিনি বলেন, ‘আইনে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। তারপরও রাজশাহী শহরের পুকুরগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পুকুর ভরাট যেন না হয় সেই নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। যে পুকুর ভরাট হয়েছে, সেগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনারও নির্দেশনা আছে। তার পরও এত দিন কিছুই হয়নি। এত দিন পর এ কাজটা অবশ্যই ভালো হচ্ছে।’

পরিবেশবাদীরা মনে করছেন, খবর২৪ঘন্টার প্রতিবেদনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে গণমাধ্যম জনস্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রশাসন যদি এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, তাহলে নগরীর পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।

তারা মনে করেন, রাজশাহীর মতো জলবায়ু পরিবর্তনপ্রবণ শহরে পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। দৈনিক বাংলাদেশের আলো-এর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ফলে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা ভবিষ্যতে জলাশয় রক্ষায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

বিএ..

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST