রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট পৌর আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতার বাড়ির সামনে থেকে ৪০০ বস্তা সরকারী গম উদ্ধারের ঘটনায় সেই আ’লীগ নেতা ও মূল হোতা আতাকে আটক করেছে পুলিশ। প্রতিটি বস্তা ৫০ কেজি ওজনের সরকারী খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহরকৃত ৪০০ বস্তা গম কালোবাজারীর দায়ে তাকে আটক করা হয়। গতকাল বুধবার ভোর ৫টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে তাকে আটক করে কাকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের একটি দল। তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান। আতাউর রহমান আতাকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী জেলা পুলিশের গোদাগাড়ী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক খান। আতা বর্তমান মেয়র একেএম আতাউর রহমানের কাছের লোক হিসেবে পৌর এলাকায় পরিচিত। রয়েছে বিশেষ সখ্যতাও।
উল্লেখ্য, চলতি মে মাসের ৯ তারিখ কাকনহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের রসুলপুর কুমদপুর দিঘিপাড়ায় আতাউর রহমান আতার বাড়ির প্রধান ফটক থেকে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ অনান্য ফোর্স নিয়ে চারটি ট্রলিসহ এই গম উদ্ধার করেন। যার ওজন ২০ টন। এ নিয়ে আতাউর রহমান আতাকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত আরো ১০-১২জনের নামে গোদাগাড়ী মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা হওয়ার পূর্বেই আতা পালিয়ে যায়। এই মামলা হওয়ার পর থেকেই পুলিশ তাকে খুঁজছিলো। গা ঢাকা দেয়ায় তাকে পাওয়া যায়নি। আতা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আতাউরকে। এর সাথে আর কেউ সম্পৃক্ত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য থানায় আতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আতাকে আদালতে সোদর্প করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত বিষয় বের হয়ে আসবে। ঘটনার দিন পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে ট্রলি ড্রাইভাররা পালিয়ে যায়। আর আতাউর এর স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারনেনি। সেদিন রাতেই গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মূল হোতা আতা না এসে তার প্রতিনিধি কাঁকনহাট পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোর্তুজা শেখ, ৬নং ওয়ার্ডের নবাবগত কাউন্সিলর ও পৌর ১নম্বর প্যানেল মেয়র আল মামুন, বর্তমান পৌর মেয়রের ব্যক্তিগত সেক্রেটারী চয়ন ও ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি খাত্তাব পুলিশের কাছে একটি ভূয়া বিল ভাউচার দাখিল করে।
কাকনহাট পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবীর বলেন, আতাউর পৌর আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ, দুর্নীতি ও কালোবাজারীর জন্য তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে। আর এই কাজের সাথে কারা কারা সম্পৃক্ত রয়েছেন বের হয়ে আসলেই দল ব্যবস্থা নেবে। তিনিসহ পৌর আ’লীগের ৭নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি সাইফুর রহমান, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কল্লোল হোসেন ও পৌর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং পৌরবাসীরা বলেন, আতাউর এর পূর্বে সরকারী চাল কালোবাজারী করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়ে।
এস/আর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।