খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: ভারতের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) কোনো প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে না বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। তিনি বলেছেন, এনআরসি নিয়ে বাংলাদেশ কোনো সমস্যায় পড়বে না। তাই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশকে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে বলেন তিনি।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেল ‘বাংলাদেশ এবং ভারত: একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভবিষ্যৎ’-শীর্ষক সেমিনারে এনআরসি নিয়ে এমন আশ্বস্ত করেন তিনি। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিস) এই সেমিনারের আয়োজন করে।
ভারত সরকার গত বছরের ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) করার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-সংঘর্ষের আগুন জ্বলে উঠে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে করা হয় সিএএ। হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা আছে এ আইনে। তবে মুসলিমরা এতে না থাকায় আইনটি সাম্প্রদায়িক বলে তীব্র সমালোচনা হয়ে আসছে।
এই সংশোধনের কারণ ব্যাখ্যা করে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হিন্দুসহ এসব ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বিভিন্ন সময়ে নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
তার আগে আসামে নাগরিকপঞ্জি প্রণয়ন করা হয়, যাতে ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যটিতে নাগরিকের তালিকা থেকে বাদ পড়েন বহু মানুষ। আসামের অনেকের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে গিয়ে অনেকে ওই রাজ্যে আবাস গড়েছেন।
নাগরিকত্ব আইন সংশোধন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ভারতে ব্যাপক ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়। বিভিন্ন রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় এতে বেকায়কায় রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার।
ভারতের এনআরসি ইস্যু সমস্যার শুরু থেকে বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। তবে ভারতের শীর্ষ পর্যায় থেকে বারবার বাংলাদেশকে বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে আশ্বস্ত করা হয়। তবে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির অনেক নেতার বক্তব্যে বাংলাদেশের মধ্যে উদ্বেগের বার্তা দিচ্ছে। যার কারণে বাংলাদেশ আশ্বস্ত হতে চেয়েও শঙ্কামুক্ত থাকতে পারছে না।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করছি, এনআরসি নিয়ে আপনাদের কোনো চিন্তা করতে হবে না। আপনারা চিন্তামুক্ত থাকুন। ভারতের আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ীই এনআরসি হচ্ছে। তবে আমরা এটাও আশ্বস্ত করছি যে, ভারতের কোনো সংখ্যালঘু এতে বিপদে পড়বে না।’ এনআরসি ইস্যুর বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও মন্তব্য করেন শ্রিংলা।
মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর চূড়ান্ত করতে সকালে ঢাকায় আসেন শ্রিংলা। দুই দিনের সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে তার। দুই দিনের সফর শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে শ্রিংলার।
খবর২৪ঘন্টা/নই