খবর ২৪ঘণ্টা ডেস্ক: আগের ম্যাচেই বিদায় নিয়েছে আর্জেন্টিনা। পথচলা থেমেছে ফুটবলের দুঃখী রাজপুত্র লিওনেল মেসির। আলো হারাল বিশ্বকাপ বলতে ঠিক যেটা বোঝায়, কাজান এরিনাতে সেটাই হয়েছে। এবার আরও আলো হারাল রাশিয়া বিশ্বকাপ। সোমবার রাতে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ মিশন থেমে গেল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দল পর্তুগালের। এক রাতেই বিদায় নিলেন দুই মহাতারকা।
রাশিয়ার ফিশ্ট স্টেডিয়ামে সবটুকু আলো কেড়ে নেওয়া এডিনসন কাভানির জোড়া গোলে পর্তুগালকে হারিয়ে ফ্রান্সের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট কাটল উরুগুয়ে। একইসঙ্গে রাশিয়া বিশ্বকাপে অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রাখল সুয়ারেজ-কাভানিরা। চলতি বিশ্বকাপে এটা উরুগুয়ের টানা চতুর্থ জয়। বিশ্বকাপে শুরুর চার ম্যাচে টানা জয় পাওয়ার এমন সাফল্য আর একটিই আছে তাদের। ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপের (১৯৩০) শুরুর চার ম্যাচ জিতেছিল ওই আসরের শিরোপা জেতা উরুগুয়ে।
ফিশ্ট স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধের পুরোটা সময় কেবল উরুগুয়েই খেলে গেছে। একের পর এক আক্রমণ করে গেছে তারা। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের হাতেগোণা কয়েকটি আক্রমণ বাদ দিলে বেশিরভাগ সময় রাজত্ব করেছে সুয়ারেজ-কাভানিরাই। বিশেষ করে বলতে হবে সুয়ারেজের কথা। গোলের দেখা না পেলেও পুরো মাঠ চষে বেড়িয়েছেন বার্সেলোনার এই তারকা স্ট্রাইকার। কাভানিকে দিয়ে গোল করানোর পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করতে সব চেষ্টাই চালিয়ে গেছেন তিনি।
উরুগুয়ে প্রথমার্ধ নিজেদের করে নিলেও ম্যাচের প্রথম আক্রমণটি করে পর্তুগালই। যদিও দুই মিনিটের সময় জোয়াও মারিওর পাস থেকে বল পেয়ে বার্নার্দো সিলভার হেড অনেক উপর দিয়ে চলে যায়। ৬ মিনিটে গিয়ে আবারও পর্তুগালের আক্রমণ। এবার নেতৃত্বে রোনালদো। কিন্তু পর্তুগাল প্রাণভোমরার ডান পায়ের শট সামলে নেন উরুগুয়ের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরা। গোলের খোঁজে থাকা পর্তুগাল শিবিরেই পরের মিনিটে হতাশা নেমে আসে। সুয়ারেজের ক্রস থেকে হেড করে পর্তুগালের জালে বল জড়িয়ে দেন কাভানি।
পিছিয়ে পড়ে হতাশায় ডোবেনি পর্তুগাল। উল্টো আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় পর্তুগাল। ১০ এবং ১১ মিনিটে দুইবার উরুগুয়ের রক্ষণভাগে হানা দেন রোনালদোরা। তবে গোল আদায় করতে পারেনি তারা। ১৬ মিনিটে আরও দুটি আক্রমণ করে পর্তুগাল। এবারও খালি হাতে ফিরতে হয় তাদের। কয়েক মিনিট পর দুটি পাল্টা আক্রমণ করে সুয়ারেজও গোলের দেখা পাননি। প্রথমার্ধের বাকিটা সময় অনেক চেষ্টা করেও কোনো দল প্রতিপক্ষের জালের ঠিকানা করতে পারেনি।
নতুন উদ্যোম নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ খেলতে নামে পর্তুগাল। গোলশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। বল নিয়ে উরুগুয়ের রক্ষণভাগে আছড়ে পড়েতে থাকেন বার্নান্দো সিলভা-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরা। এমন চেষ্টার ফল পেতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ৫৫ মিনিটে পর্তুগাল শিবিরে স্বস্তি ফেরান তারকা ডিফেন্ডার পেপে। রাফায়েল গুয়েরিরোর ক্রস থেকে হেড করে গোল করে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা এই ডিফেন্ডার।
কিন্তু সমতা যেন পছন্দ হলো না উরুগুয়ের ম্যাচ জয়ের নায়ক কাভাবির। ৬২ মিনিটে আবারও লক্ষ্যভেদ করে উরুগুয়েকে এগিয়ে নেন পিএসজির এই তারকা স্ট্রাইকার। রদ্রিগো বেনতানকারের পাস থেকে বল পেয়ে অসাধারণ এক শটে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন কাভানি। ২-১ গোলে এগিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে বেশি সময় মাঠে থাকতে পারেন কাভানি। ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। তবে এতে আফসোস নেই তার। দল ঠিকই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
পিছিয়ে পড়ে বাকিটা সময় চেষ্টার কমতি রাখেননি রোনালদো-কারেসিমারা। কিন্তু উরুগুয়ের রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়াতে পারেননি তারা। বিশেষ করে শেষের দশ মিনিটে অবিরত আক্রমণ করে গেছে পর্তুগাল। বল বেশিরভাগ সময় উরুগুয়ের বিপদ সীমানাতেই থেকেছে। কিন্তু যেটা সন্ধানে ছিল রোনালদো-পেপেরা, সেই গোলের দেখা মেলেনি।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই