জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রায় যুদ্ধের রূপ ধারণ করে ফেলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর গত ৬ মে মধ্যরাতে বাস্তবিকই পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ আশেপাশের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও। দুদেশ থেকেই ভেসে আসছে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার খবর।
এ অবস্থায় পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। তাদের আশঙ্কা, চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে যেকোনো মুহূর্তে ইমরান খানের কারাগারে ড্রোন হামলা চালাতে পারে ভারত। এছাড়া, দেশের পরিস্থিতি নিয়ে দিন-রাত উদ্বেগে ভুগছেন তিনি। এজন্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্যারোলে মুক্তি চেয়ে আবেদন করেছে দলটি।
শুক্রবার (০৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সামা টিভি।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের প্যারোলেমুক্তি চেয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) একটি আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইমরান খানের জীবন গুরুতর নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরের পক্ষে এই আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খানকে নিজের ‘সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ’ হিসেবে দেখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাই তাকে লক্ষ্য করে আদিয়ালা জেলে ড্রোন হামলা চালাতে পারে ভারত। ইমরান খান বর্তমানে এই কারাগারে আটক রয়েছেন।
আবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতের সাম্প্রতিক ড্রোন হামলার প্রেক্ষাপটে ইমরান খানের জীবন কারাগারে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মেয়াদকালে ইমরান খান আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে মোদির সমালোচনা করেছিলেন, যা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, পিটিআই নেতার কারাবাস রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার ফল এবং এটি তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, যদি একজন বন্দির জীবন বা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে থাকে, তবে তাকে প্যারোলে মুক্তির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
আলী আমিন গান্দাপুর আবেদনে উল্লেখ করেন, কারাগারে ইমরান খানের আচরণ প্রশংসনীয় ছিল এবং তিনি কখনও কারা আইন ভঙ্গ করেননি। ইতোমধ্যে পাঞ্জাব হোম ডিপার্টমেন্টে প্যারোলের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক আবেদন দাখিল করা হয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
আবেদনে পাকিস্তানের সংবিধান, আন্তর্জাতিক আইন এবং দেশটির কারাবিধির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে, যা ইমরান খানের শর্তসাপেক্ষ মুক্তির দাবি সমর্থন করে।
বিএ..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।