নিজস্ব প্রতিবেদক :
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ইতোমধ্যেই প্রার্থীরা নিজ দলের পক্ষ থেকে ভোটে অংশগ্রহণ করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীও এর ব্যতিক্রম নয়। রাজশাহীর ছয়টি আসন ঘিরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রত্যেকটি দলের প্রার্থী ব্যাপক উৎসাহ আর উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য নিজ নিজ নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজও শুরু করেছেন প্রার্থীরা। ভোট নিয়ে দলের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যেও আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু দলের নেতাকর্মীরা নন সাধারণ মানুষও নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু করেছেন। আগামী নির্বাচনে কোন দল সরকার গঠন করবে, নির্বাচন সুষ্ঠ পরিবেশে হবে কিনা, পছন্দের প্রার্থী বিজীয় হতে পারবে কিনা, এবার সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবে কিনা? এমন বিভিন্ন বিষয় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষ কি ভাবছেন সে বিষয় নিয়ে দৈনিক নতুন প্রভাতের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে তাদের ভাবনার কথা জানা গেছে। সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দলের নেতারা জানিয়েছেন তাদের ভাবনার কথা।
আগমী সংসদ নির্বাচন কেমন হওয়া প্রয়োজন সে বিষয়ে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে কথা বলা হয়েছে আলফাজ নামের এক পথচারীর সাথে। তিনি সংসদ নির্বাচন নিয়ে বলেন, অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠ পরিবেশে হতে হতে হবে। যাতে সাধারণ মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে। কারণ অনেক দিন তারা ভোট দিতে পারেন নি। ভোট দেওয়ার জন্য তারা মুখিয়ে আছেন।
রাইসুল নামের এক রিক্সাচালকের সাথে কথা হলে তিনি নতুন প্রভাতকে বলেন, দেশে অনেক দিন ভোট হয়নি। তাই এবার ভোট দিতে চাই। কেমন জনপ্রতিনিধি তিনি চান এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সুষ্ঠ পরিবেশে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবো। যে এমপি হয়ে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। এলাকার রাস্তা-ঘাটসহ সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। নির্বাচিত এমপির কাছে দলমত নির্বিশেষে সবাই সাক্ষাত করতে পারবে। দলের উর্দ্ধে উঠে সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করবে এমন প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই।
শরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটের মাঠে যাতে সকল দলের প্রার্থী যাতে সমান সুযোগ পায় সেই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো দলের প্রার্থীর নির্বাচনী কর্মীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি নজর দিতে হবে। সুষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে জনগন সৎ ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি হয়ে আছে। আমরা সুষ্ঠ পরিবেশে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারি তার দাবি জানাচ্ছি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হবে প্রত্যাশা রেখে রাজশাহী মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, এবার সকল দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে দেখে ভালো লাগছে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও যে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় তা এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করবেন। কেমন এমপি নির্বাচিত হওয়া প্রয়োজন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যারা দীর্ঘদিন রাজনীতি করেন তারা মনোনয়ন পেলে জনগন কি চায় সেটি তারা বোঝেন কিন্তু বিএনপি-আ’লীগ দুই দলের পক্ষ থেকে কোন অরাজনৈতিক ব্যক্তি যদি হঠাৎ করেই মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন তাহলে জনগনের প্রত্যাশা সঠিকভাবে পুরণ হয় না। সাধারণ জনগণ ভোট দিয়ে সৎ যোগ্য প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-৩ আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী এ্যাড. শফিকুল হক মিলন বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ পরিবেশে চাই। যাতে মাঠে সকল দলের প্রার্থী সমান সুযোগ পায়। ভোটারদের ভোটাধিকারের পরিবেশ নিশ্চিতকরণে নির্বাচন কমিশন সচেষ্ট থাকবেন বলে আশা করছি। জনগন এবার সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক জনপ্রতিনিধি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবে। কারণ জনগন অনেকদিন ভোট দিতে পারেনি। ভোটের পরিবেশ ভাল থাকবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবে এমন প্রত্যাশা করে রাজশাহী জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে নির্বাচন উৎসবের মতো। রাজশাহীও তার ব্যতিক্রম নয়। এবার উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। জনগন সৎ ও মেধাবীদের নির্বাচন করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে জনগন তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এর কোন ব্যতয় ঘটবে না। ভোট সুষ্ঠ হবে বলে আপনি মনে করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটতো ১০০% সুষ্ঠ হবে। এটার কোন সমস্যা নাই।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে