নাহিদ ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক: ভালোবাসা ক্ষণিকের নয়, ভালোবাসা চিরন্তন। ভালোবাসা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা বা শুধু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেই নয়। এ ভালোবাসা বয়সের ফ্রেমে বাঁধা নয়, এটা প্রসারিত হয় বন্ধু-বান্ধব,পরিচিতজনসহ সবার মাঝেই। তবে ভালোবাসা দিবসে যুগলদের মনের উচ্ছ্বাসকে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।
ভালোবাসার গানে, ভালোবাসার অনুভূতির কাছে নিজেকে নিশ্চিন্তে সঁপে দিতে এসেছে ভালোবাসার বিশেষ দিবস বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বিশ্বে আজকের এ দিনটি সব যুগলের জন্য একটু বেশিই বিশেষ। ঋতুরাজ বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসে বাঙালি মনের ভালোবাসা আর উচ্ছ্বাসের কোনো কমতি নেই। ফলে রাজশাহী জুড়েই তরুণ-তরুণী, যুগলের ঢল নেমেছে। সব মিলিয়ে বসন্ত আর ভালোবাসার বহুমাত্রিক রূপ-সৌরভে ভরপুর রাজশাহীর চারদিক। এ ভালোবাসা যেমন মা-বাবার প্রতি সন্তানের, তেমনি মানুষে-মানুষে ভালোবাসাবাসির দিনও এটি।
যেহেতু আজ শুধু ভালোবাসা দিবসই নয় ঋতুরাজ বসন্তেরও প্রথম দিন। প্রকৃতিতে এখন নতুন উন্মাদনা। এবার ভালোবাসার হাত ধরেই এসেছে বসন্ত। মেয়েরা বাসন্তি আর লাল শাড়ি, সেই সঙ্গে লাল গোলাপ হাতে আর ছেলেরা বাহারি পাঞ্জাবী পরে ভালোবাসার জোয়ারে ভাসছে। সবার হাতেই আছে বাহারি দৃষ্টিনন্দন ফুল।
ভালোবাসার উৎসবে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা রাজশাহী। উৎসবের ছোঁয়া লেগেছে গ্রাম-বাংলার জনজীবনেও। মোবাইল ফোনের মেসেজ, ই-মেইল অথবা অনলাইনের চ্যাটিংয়ে পুঞ্জ পুঞ্জ ভালোবাসার কথার পরিস্ফুটিত হচ্ছে। কেক, চকোলেট, পারফিউম, গ্রিটিংস কার্ড, প্রিয় পোশাক, খেলনা অথবা বই উপহার দিচ্ছেন প্রিয়জনকে। তাই, সকাল থেকে নগরীর উপহার সামগ্রীর দোকানগুলোর বেচা-কেনাও জমে উঠেছে।
রাজশাহীর পদ্মাপাড়, কেন্দ্রীয় উদ্যান, জিয়া পার্ক, টি-বাঁধ, ভদ্রার শহীদ মনসুর রহমান পার্ক, পদ্মা গার্ডেনসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিনোদনপ্রেমীরা। কেউ বন্ধুদের নিয়ে, কেউ প্রিয়তম, কেউ আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে আসছেন এসব স্থানে। বেলা যত গড়াচ্ছে ভিড় ততই বাড়ছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা মিললো একদল বন্ধু-বান্ধবীর। তারা সবাই ঘুরতে এসেছেন এখানে। তাদের মধ্যে একজন ফারজানা আক্তার। তিনি বলেন, ভালোবাসা দিবস শুধু প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য নয়। বন্ধুদের জন্যও তাই তো আমারা সব বন্ধুরা মিলে বেরিয়েছি দিনটা উপভোগ করার জন্য। বসন্তের সঙ্গে ভালোবাসা দিবস মিলিয়ে একটা আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে। তাই তো সবাই বাসন্তি রঙের শাড়ি আর বন্ধুরা পাঞ্জাবি পড়ে ঘুরতে বেরিয়েছি।
সকাল থেকে নগরীর ফুলের দোকানগুলোতে তরুণ-তরুণীদের ভিড় লক্ষ্যণীয়। মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট এলাকার ফুল ব্যবসায়ী নবাব বলেন, বছরে এ দিন ফুলের চাহিদা কয়েকগুন বেড়ে যায়। যে কারণে আমাদেরও আগে থেকেই প্রস্তুতি থাকে। তবে অন্য সময় গোলাপ ৫/১০ টাকায় বিক্রি হলেও আজ সেটা ৪০ থেকে থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রজনীগন্ধার স্টিক ২০ টাকা, প্রতিটি গাঁদার মালা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, জারবেরা ফুল ৩০-৪০ টাকা, অর্কিড স্টিক ৬০ টাকা, গ্লাডিওলাস রংভেদে ২০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা বছরের অন্য সময় প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হয়।
ক্রেতা আহসান হাবিব বলেন, একসঙ্গে বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস হওয়া ফুলের দোকানগুলোতে দামের দিক থেকে আগুন লেগেছে। তবুও উৎসব এবং ভালোবাসা প্রেমী তরুণ তরুণীরা অতিরিক্ত দামেই ফুল কিনতে বাধ্য হচ্ছি। মোটামুটি দ্বিগুন দামেই সব ধরনের ফুল এখানে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, মহানগীরতে আজ শোভাযাত্রা, আবীর ও ফুলের প্রীতিবন্ধনীর পাশাপাশি নাচ ও গানের আয়োজন চলবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। নগরীর ফুদকিপাড়া উন্মুক্ত মঞ্চসহ বিভিন্ন স্থানে এ জন্য নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। পুলিশের পাশাপাশি টহল দিচ্ছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা।
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০