সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী ২৭ নভেম্বর বৈঠকের সময় চেয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (২২ নভেম্বর) ই-মেইলের মাধ্যমে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি সিইসির কাছে বৈঠকের সময় চেয়ে মেইল করেন।
এদিকে নির্বাচন পর্যেবক্ষণের জন্য পাঁচজন বিশেষজ্ঞ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ অবস্থান করবেন এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনার মূল্যায়ন করবেন বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার ই-মেইলের মাধ্যমে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি সিইসির কাছে বৈঠকের সময় চেয়ে মেইল করেন। ই-মেইলে হোয়াইটলি লিখেছেন-সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইতোপূর্বে মতবিনিময় করায় আপনাকে ধন্যবাদ। নির্বাচন কমিশনের বর্তমান কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে আপনার দপ্তরে একটি যৌথ সভায় অংশ নিতে সুযোগ চাই। আগামী ২৭ নভেম্বর বিকেল ৩টায় বৈঠকের জন্য আপনার সময় হবে কি? মতবিনিময়ের জন্য আপনার সম্মতির জন্য আমি উন্মুখ হয়ে আছি।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, চার্লস হোয়াইটলির চিঠি নথিতে উত্থাপন করা হয়েছে। তবে এখনও কমিশন বা সিইসি তাদের সময় দেননি। অধিকাংশ নির্বাচন কমিশনার ঢাকার বাইরে নির্বাচনের মাঠ পর্যেবক্ষণে বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করছেন।
ফলে সাক্ষাতটি ২৭ নভেম্বর নাও হতে পারে। এর আগে ইইউ এ পর্যন্ত যতবার সময় চেয়েছে, তাদের দেওয়া হয়েছে। এবারও হয়তো পাবে। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠাবেন তারা।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যেবক্ষণের জন্য পাঁচজন বিশেষজ্ঞ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ অবস্থান করবেন। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনার মূল্যায়ন করবেন। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের দুটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) গত সোমবার (২০ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। ওই চিঠিতে বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যেবক্ষণে পাঁচজন বিশেষজ্ঞ পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
চিঠিতে এনডিআই ও আইআরআই ইসিকে জানিয়েছে, বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে চারজন বিশেষজ্ঞ এবং একজন বিশেষজ্ঞ সমন্বয়কারী পাঠানো হবে। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ কাজ করবেন। তারা নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন।
চিঠিতে যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছেন এনডিআইয়ের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় কর্মসূচির পরিচালক জেমি স্পাইকারম্যান এবং আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক স্টিফেন চিমার।
এতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী, তার প্রভাব মূল্যায়ন করা। ভবিষ্যতে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা কমাতে ওই মিশন প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। এনডিআই ও আইআরআইয়ের বিশেষজ্ঞরা তাদের মূল্যায়ন জনসমক্ষে প্রকাশ করবেন। পাশাপাশি ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
কূটনৈতিক সূত্রে আরও জানা যায়, বিশেষজ্ঞরা নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনা মূল্যায়ন করবেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের মধ্যে সহিংসতা, অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণে সহিংসতা, নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা, অনলাইনে হয়রানি ও হুমকি ইত্যাদি বিষয় তারা খতিয়ে দেখবেন। এসব পরিস্থিতিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও মূল্যায়ন করবেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গত অক্টোবরে ঢাকায় এসেছিল এনডিআই ও আইআরআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল। তারা মন্ত্রিসভার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশি কূটনীতিকসহ অংশীজনদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন।
ওয়াশিংটনে ফিরে ওই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাধান এবং বাস্তবসম্মত, দীর্ঘস্থায়ী ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে খোলামনে আলোচনার আহ্বানসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করে।
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- k24ghonta@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০