ফেরি আমানত শাহ পাটুরিয়া ৫নং ঘাটে ডুবে যাওয়া তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। একই সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড এবং বিআইডাব্লিউটিএর ডুবুরি দলের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধারকারী জাহাজ হামজার কমান্ডার এস এম ছানোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ডুবে যাওয়া ফেরিতে তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। সবশেষ তথ্যানুযায়ী ডুবে যাওয়া ফেরিতে আরও চারটি পণ্যবাহী ট্রাক এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল রয়েছে। সেগুলো উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ১০টি ট্রাক ও একটি মোটরসাইকেল ওই ফেরি থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই নারায়ণগঞ্জ থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে প্রত্যয় নামের উদ্ধারকারী জাহাজ। স্রোতের বিপরীতে জাহাজটি ঘণ্টায় মাত্র সাড়ে তিন থেকে পৌনে চার কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রম করতে পারে। পাটুরিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জের নৌপথ দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। সেই হিসেব অনুযায়ী কবে নাগাদ উদ্ধারকারী জাহাজ পাটুরিয়া ঘাটে এসে পৌঁছাবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
হামজার কমান্ডার আরও জানিয়েছেন, মুন্সীগঞ্জের পদ্মা-মেঘনা মোহনা এলাকায় রয়েছে প্রত্যয়। উদ্ধারকারী ওই জাহাজটি হামজার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি শক্তিশালী। কাজেই উদ্ধার অভিযানে ওই জাহাজটি সংযুক্ত হলে উদ্ধার অভিযান সহজ হবে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৫ নাম্বার পন্টুন এলাকায় এসে ১৪টি ট্রাক ও কিছু মোটরসাইকেল নিয়ে ডুবে যায় আমানত শাহ নামে বড় একটি ফেরি। অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
গত বুধবার পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি আমানত শাহ ৪১ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলাচল করছিল। ছিল না ফিটনেসও। বারবার ডকইয়ার্ডে নিয়ে মেরামত করা হতো। সম্প্রতি ফেরিটির তলদেশ ফুটোও হয়েছিল। এরপরও লক্করঝক্কর এই ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছিল।
তবে দিনে ২ থেকে ৩ বারের বেশি ওই ফেরি আসা-যাওয়া করতে পারতে না। প্রায়ই অকেজো হয়ে পাটুরিয়ায় নোঙ্গর করে থাকত।
অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি নৌযানের নিবন্ধনের মেয়াদ ৩০ বছর হয়। বিশেষ জরিপের (ফিটনেস) মাধ্যমে এরপর দুবার পাঁচ বছর করে নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো যায়। তবে ৪০ বছরের বেশি সময় কোনোভাবেই কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) নৌযানের তালিকা অনুযায়ী, ফেরি আমানত শাহ ১৯৮০ সালে তৈরি। ৩৩৫ জন যাত্রী ও ২৫টি যানবাহন বহন করতে পারে এটি। ৮০৬ দশমিক ৬০ টন ওজনের ফেরিটি সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারে।
জানা গেছে, বুধবারের দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া গিয়েই ওই দিনই পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে ফেরিটি মেরামত করার কথা ছিল। কিন্ত তার আগেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সকালে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর মাঝনদী পার হওয়ার পর ফেরিতে পানি উঠতে শুরু করে। পরে ফেরিটি পাটুরিয়া ঘাটে নোঙ্গর করা হয়। এরপর যানবাহন আনলোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেরিটি এক পাশে কাত হয়ে ডুবে যায়।
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- k24ghonta@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০