নাটোর প্রতিনিধি: স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পাননি নাটোরের শরিফা ইসলাম (৬২)। তিনি নাটোর শহরের চকরামপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমান খাঁন এর মেয়ে ও নজরুল ইসলামের স্ত্রী । ১৯৭৯ সালে যশোর থেকে নাটোরে আসা নজরুল ইসলামের সংগে শরিফা বিয়ে দেন। শরিফা পাকবাহিনী দ্বারা নির্যাতিত ও ধর্ষেণ হওয়ারপর তিনি ভারতে চলে যান। তার জন্ম ১৯৫৮ সালে পহেলা জানোয়ারী। তিনি বাংলাদেশের নাটোর শহরের স্থায়ী বাসিন্দা।
বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা শরিফা জানান, ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীরা তাকে বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যায় নাটোর সরকারি এন,এস কলেজের পাকিস্থানীর বাহিনীর ক্যাম্পে এবং সেখানে তাকে দল বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে। অতঃপর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকবাহিনী শরিফাকে ক্যাম্পে আটকে রাখে। এক সময় তাকে অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখে যায় তারা। রাস্তায় পড়ে থাকা দেখে এলাকাবসী তাকে উদ্ধার করে মনির ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তারের চিকিৎসায় একদিন পরে তার জ্ঞান ফিরলে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে বাসায় পৌঁছিয়ে দেন।
বীরঙ্গনা শরিফা আরো জানান , নাটোরে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও তাকে বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। বর্তমানে তিনি বৃদ্ধ বয়সে ঢাকায় মানুষের বাসায় কাজ করে পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলেকে মানুষ করছেন । তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দপ্তর,মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় কাউন্সিল মহা-পরিচালক সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছে বীরঙ্গনা স্বীকৃতি ও বীরঙ্গনা ভাতার জন্য । তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান ১৯৭১ সালে নির্যাতিত বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট ভুক্ত করিয়া সম্মান প্রদান করিতেছে তাই বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন বীরঙ্গনা মু্িক্তযোদ্ধা স্বীকৃতি দেয় তার দাবি জানান।
নাটোর সদর উপজেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১ সভাপতি ও যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবুল হোসেন জানান, নাটোর শহরের চকরামপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমান খাঁন , মাতা মোছাঃ রহিমা বেগম এর মেয়ে মোছাঃ শরিফা ইসলাম কে ১৯৭১ সালের নিজ বাড়ি শহরের চকরামপুর থেকে চোখ বেঁধে নাটোর নবাব-সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারী কলেজে ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকবাহিনী শরিফাকে ক্যাম্পে আটকে রাখে। পরে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় ফেলে গেলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ডাক্তার মনিরের কাছে চিকিৎসা করে এক দিন পরে তার জ্ঞান এলে তাকে বাড়িতে পৌছে দেয় তারা।
নাটোর সদর উপজেলার পিজিপাড়া এলাকার তসলিম উদ্দিন ৪৭৮ গেজেট ও একই এলাকার মোঃ হোসেন আলী ৪৮৪ গেজেট এবং শহরের কারাইখালি এলাকার মুনছুর আলী ১২৮ গেজেট নাম্বার তারা তিনজন জানান, মোছাঃ শরিফা ইসলাম কে সত্যি পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায় । তার সাথে যে অমানসিক নির্যাতন ও ধর্ষণ হয় তার স্বাক্ষী দেন এবং তাকে বীরঙ্গনা সম্মানে স্বীকৃতি প্রদান করে ভাতার অন্তরভুক্ত করার জোর দাবী জানান । খবর২৪ঘন্টা/এবি
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০