খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৭ লাখ রোহিঙ্গার সবাই স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে চাইলে তাদের সবাইকে ফিরিয়ে নিতে রাজি মিয়ানমার। শনিবার সিঙ্গাপুরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলন শাংরি-লা সংলাপে এমন কথাই জানিয়েছেন মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন। খবর রয়টার্সের।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হামলার পর সেখানকার জনগোষ্ঠীর ওপর সামরিক অভিযানের নামে ব্যাপক সহিংসতা চালায় মিয়ানমার। এ অভিযানে সেনাবাহিনীর সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি দফায় দফায় আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে প্রত্যাবাসন চুক্তিও। তবে রোহিঙ্গারা কবে নিজ ভূমিতে ফিরতে পারবে তা এখনও অনিশ্চিত। এতোদিন মিয়ানমার বলে আসছিল, যেসব রোহিঙ্গা নিজেদের দেশটির বাসিন্দা হিসেবে প্রমাণ দিতে পারবে কেবল তাদেরকেই ফিরিয়ে নেয়া হবে।
রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি কি মিয়ানমারকে জাতিসংঘের আরটুপি (রেসপন্সসিভিলিটি টু প্রটেক্ট) ফ্রেমওয়ার্ক চালুর দিকে নিয়ে যাবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে নিরাপত্তা সম্মেলনে মিয়ানমারের উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, স্বেচ্ছায় যদি ৭ লাখকে ফেরত পাঠানো যায় তাহলে আমরা তাদের গ্রহণে আগ্রহী।
প্রসঙ্গত, এই আরটুপি ফ্রেমওয়ার্কটি ২০০৫ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে গ্রহণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে নিজ দেশের জনগণকে রক্ষা এবং এই প্রতিশ্রুতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে এক দেশ অন্য দেশকে সহায়তা করবে।
রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলা যায় কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে থাউং তুন বলেন, সেখানে কোনো যুদ্ধ চলছে না, তাই এটা যুদ্ধাপরাধ নয়। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টি কিছুটা বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমাদের অকাট্য প্রমাণ লাগবে। এই গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হতে হবে এবং তা নিয়ে হালকাভাবে আলোচনা করা উচিত নয়।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এই নিপীড়নকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রও এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তবে বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার।
থাউং তুন জানান, রাখাইনের যে পরিস্থিতি তুলে ধরা হচ্ছে তা ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর’। তিনি বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে যে মানবিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে মিয়ানমার তা অস্বীকার করে না। রাখাইনের মুসলিম জনগোষ্ঠী যে ভুক্তভোগী সে বিষয়টিও অস্বীকার করা হচ্ছে না। সেখানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরাও কম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
মিয়ানমারের এই উপদেষ্টা জানান, দেশকে রক্ষার অধিকার রয়েছে সেনাবাহিনীর। তবে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেলে পদক্ষেপ নেবে মিয়ানমার সরকার।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০