লালপুর প্রতিনিধিঃ শনিবার নাটোরের লালপুর উপজেলার রায়পুর জাফরিয়া আলিম মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার মাওলানা আব্দুর রহিম নামের এক শিক্ষকের নিকট চাঁদা চাওয়ার প্রতিবাদে ও ওই মাদ্রাসার সুপার আব্দুল করিমের শাস্তির দাবিতে মাদ্রাসায় তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রায়পুর জাফরিয়া আলীম মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রহিম সম্প্রতি সপ্তম শ্রেণীর ফিকাহ্ শ্রেনীতে পাঠদানের এক পর্যায়ে ফরজ গোসল ও যৌন সম্পর্কিত কিছু মন্তব্য করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সুপার আব্দুল করিমের নিকট ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. আবুল কালাম ও কমিটির সদস্যরা আব্দুর রহিমকে শিক্ষার্থীদের নিকট ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষক আব্দুর রহিম শিক্ষার্থীদের নিকট তার মন্তব্যের জন্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। কিন্তু মাদ্রাসা সুপার আব্দুল করিম পরবর্তীতে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক আব্দুর রহিমের ছেলের কাছে মোবাইল ফোনে বিষয়টি সমাধানের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। এই চাঁদা দাবীর কথোপোকথন মোবাইলে রেকডিং আছে বলে দাবী করেছে রহিমের ছেলে সদরুল।
তার এ দাবীর বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি শনিবার সংশ্লিষ্ট ওয়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান, পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ, সুপার ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবগর্কে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য বৈঠক ডাকেন। কিন্তুসুপার প্রতিষ্ঠানে না এসে আত্মগোপন করেন। এতে এলাকাবাসি ও শিক্ষার্থীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মাদ্রসায় তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করে।
এলাকাবাসী ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, রহিম স্যারের বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবার পরেও কেনো সুপার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলেন, আর আজ বিষয়টি সুরাহার জন্য মিটিং ছিলো কিন্তু তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত। তাই আমরা সুপারের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছি ও মাদ্রাসায় তালা লাগিয়েছি।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুর রহিম চাঁদা দাবীর কথা স্বীকার করে জানান, যে বিষয়ের সুরাহা হয়ে গেছে সে বিষয়ে সুপার আমার ছেলের কাছে কেনো ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করলেন তা আমার বোধগম্য নয়।
মাদ্রাসা সুপার আব্দুল করিম তার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার করা হচ্ছে দাবি করে জানান, শিক্ষক আব্দুর রহিমের পাঠদানের সময় বেফাস মন্তব্যের বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। আমি রসিকতার ছলে টাকার কথা বলেছিলাম, বাস্তবি অর্থে নয়, কিন্তু তারা বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ওয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. কালাম আমাকে বিষয়টি সমাধানের জন্য আজ শনিবার মাদ্রাসায় উপস্থিত হওয়ার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু মাদ্রাসা সুপার ফোনে আমাকে নিষেধ করে জানান, বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর, মান-সম্মানের বিষয় জড়িত তাই আপনি না আসলেই ভালো হয়। পরে শুনলাম সুপার মাদ্রাসায় না আসায় শিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসীরা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে তার শাস্তির দাবিতে মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০