করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে এ জন্য ৭ দিনের লকডাউনের প্রথম দিনে প্রায় স্বাভাবিক ছিল রাজশাহীর জনজীবন। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাস চলাচল ছাড়া রিক্সা, অটোরিক্সাসহ সব ধরণের যান চলাচল ছিল। তবে অন্যদিনের তুলানায় কিছু কম ছিল। প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষের আনাগোনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। চলাচলকারী অটোরিক্সা ও অন্য ছোট ছোট যানবাহনগুলোতে ছিলনা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার তোয়াক্কা। অন্যদিনগুলোর মতোই অটোরিক্সায় যাত্রী গাদাগাদি করে বসে চলাচল করে। এদিন বড় বড় মার্কেট ছাড়া প্রায় দোকান খোলা ছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথেই রাস্তায় লোকজনও বাড়ছিল। নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্রæত করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা রোধে সরকার
প্রথম দফায় ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করে। যদিও জরুরী সেবা লকডাউনের আওতামুক্ত ছিল এমন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগের দিন থেকেই অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হওয়া, আড্ডা না দেয়া ও অযথা ঘোরাঘুরি না করার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালানো ও মাইকিং করা হয়। সেই সাথে প্রয়োজনীয় কাজে বের হলেও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য আহবান জানানো হয়। কিন্ত সোমবার সকাল থেকেই নগরে ঘরের বাইরে মানুষকে যেতে দেখা যায়। কারো মুখে মাস্ক ছিল আবার অনেকের মুখেই মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। এদিন, সকাল থেকেই অটোরিক্সা ও চলাচল করতে দেখা যায়। রিক্সায় ২/১ জন চড়লেও অটোরিক্সায় পূর্বের মতোই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে যাত্রী উঠানাম করতে দেখা যায়। আবার অনেক চালকের মুখে মাস্ক দেখতে পাওয়া যায়নি।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এদিন বাইরে প্রয়োজনীয় কাজে আসা মানুষ বেশি আসতে না পারলেও অনেককেই ছোট ছোট যানবাহনে করে আসতে দেখা যায়। বিশেষ করে নগরের লক্ষীপুর এলাকায় চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ ছিল চোখে পড়ার মতো। অটোরিক্সা পাশপাশি মাইক্রোবাস, ট্রাক ও লেগুনা এবং সিএনজি চলতে দেখা যায়। তবে এদিন অন্য দিনের মতোই যাত্রীদের ভাড়া স্বাভাবিক ছিলনা। যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে চালকরা। নগরের বাইরে যাওয়ার জন্য অটোরিক্সা ও সিএনজি এবং ব্যক্তিগত যানবাহনই ছিল ভরসা। বাইরে যাতায়াতকারী মানুষের কাছ থেকেও বেশি ভাড়া আদায় করা হয়েছে বলে যাত্রীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল। নগরের অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হওয়া মানুষকে ব্যক্তিগত যানবাহনে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। এ ছাড়াও বড় বড় মার্কেট ও শোরুম বন্ধ থাকলেও এদিন হোটেল, কনফেকশনারী ও অন্যান্য দোকান খুলে রাখতে দেখা যায়। এসব দোকানিরা একদিকের সার্টার বন্ধ রেখে ব্যবসা করছিল। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সার্টার বন্ধ করে ভেতরে কাজ করেছে বলেও খবর রয়েছে। অন্যদিনের মতো এদিনও পুলিশ সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালায়। যদিও গত বছরের লকডাউনের মতো বিপুল পরিমাণ পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মাঠে দেখা যায়নি। যদিও নগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, থানায় যারা দায়িত্ব পালন করেন তারাই কৌশলগত কারণে লকডাউনের সময় রুটিন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিপনি বিতান, শপিং মল, গণপরিবহন বন্ধ ছিল। সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাঁচা বাজার যেহেতু খোলা সেজন্য যারা বাজার করতে এসেছে তারা যদি অটোরিক্সায় চড়ে যায় তাহলে সেখানে কি বলা আছে। লকডাউনের প্রথম দিন সকাল থেকে ও বিকেল থেকে নগরের দুটি করে মোবাইল কোর্ট সচেতনতায় কাজ করেছে। প্রথম দিন কোনো জরিমানা করা হয়নি। মঙ্গলবার থেকে আরো কঠোর হবে লকডাউন। মোবাইল কোর্ট নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এস/আর
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০