রাবির সিন্ডিকেটসহ ৭০টি পদের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বিএনপি-জামায়াত পন্থী সাদা দল - খবর ২৪ ঘণ্টা
প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ১১, ২০২৫, ১২:৪৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ২৪, ২০১৮, ৫:৫০ পি.এম
রাবির সিন্ডিকেটসহ ৭০টি পদের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বিএনপি-জামায়াত পন্থী সাদা দল
রাবি প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সিনেট, সিন্ডিকেট, ডিন, শিক্ষক সমিতিসহ ৭ ক্যাটাগরিতে ৭০ পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোসহ ৩২টি পদে জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক গ্রুপ (সাদাদলের) শিক্ষকেরা জয় পেয়েছে। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলো না পেলেও ৩৭টি পদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দিনভর ভোট গ্রহণ শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার এম এ বারী।
সিন্ডিকেট: সিন্ডিকেটে পাঁচটি পদের মধ্যে প্রভাষক ক্যাটাগরিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছেন হলুদ প্যানেলের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের মসিদুল হক। বাকি চারটির মধ্যে তিনটিই পেয়েছে সাদা প্যানেল। সাদা প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন, প্রাধ্যক্ষ ক্যাটাগরিতে মাদার বখস হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল আলিম, প্রফেসর ক্যাটাগরিতে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মনিরুল হক। সহকারি অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে হলুদ প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ডিন : বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি অনুষদের ডিন পদে নির্বাচনে আইন অনুষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছেন হলুদ প্যানেল থেকে আইন বিভাগের অধ্যাপক আহসান কবির। বাকি আটটির চারটি পেয়েছে সাদা প্যানেল এবং চারটি পেয়েছে হলুদ প্যানেল। সাদা প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন কলা অনুষদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ফজলুল হক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম, কৃষি অনুষদে ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক সাহেলা জেসমিন এবং প্রকৌশল অনুষদে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক একরামুল হামিদ। হলুদ প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন, বিজ্ঞান অনুষদে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খলিলুর রহমান খান, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ূন কবির, জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, চারুকলা অনুষদে চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর তালুকদার।
শিক্ষক সমিতি : এ ক্যাটাগরিতে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ ও সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পদই পেয়েছে সাদা প্যানেল। নিবার্চনে সাদা প্যানেল থেকে জয় লাভ করে সভাপতি হিসেবে ফাইন্যান্স বিভাগের আমজাদ হোসেন, সহ-সভাপতি হিসেবে সমাজকর্ম বিভাগের গোলাম কিবরিয়া ফেরদৌস, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফার্মেসী বিভাগের মামুনুর রশিদ ও সদস্য পদে অর্থনীতি বিভাগের কেবিএম মাহবুবুর রহমান ও ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মামুন-উর-রশীদ খন্দকার । অন্যদিকে হলুদ প্যানেল থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদের মধ্যে শুধুমাত্র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্যাহ আল মারুফ নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি আটটি পদ সদস্য হিসেবে পেয়েছেন। সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক সোমলাল দাস, বাংলা বিভাগের সুজা উদ-দৌলা, আইন বিভাগের মাহফুজুর রহমান (মামুন), ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক হাসনা হেনা, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মামনূর রশিদ সরকার (মাসুদ), ফোকলোর বিভাগের ফারজানা রহমান, গণিত বিভাগের ইলিয়াস হোসেন, নাট্যকলা বিভাগের হাশেম উদ্দিন (সুখন সরকার)।
ফাইন্যান্স কমিটি : বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্স কমিটি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ প্যানেলের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক জাফর সাদিক।
পরিকল্পনা ও উন্নয়ন : অন্যান্য ক্যাটাগরির মত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ প্যানেলে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মহমুদ হোসেন রিয়াজী।
শিক্ষা পরিষদ : শিক্ষা পরিষদের দুইটি ক্যাটাগরিতে ছয়জনই নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ প্যানেল থেকে। নির্বাচিতরা হলেন সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে উদ্ভিদবিজ্ঞানের নাসিরুদ্দিন, শিক্ষা ও গবেষনা ইনস্টিটিউটের রুবাইয়াৎ জাহান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আবু রাসেল মুহা রিপন। সহযোগী অধ্যাপক ব্যাতীত ক্যাটাগরিতে ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আরমানুল হক, মার্কেটিং বিভাগের শেখ শামীমা সুলতানা এবং চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সুজন সেন।
সিনেটে: ৩৩টি পদের মধ্যে ১৯টি বিএনপিপন্থী সাদা প্যানেলের শিক্ষকরা জয়ী হয়েছেন।সাদা প্যানেল থেকে নির্বাচিত শিক্ষকরা হলেন, অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুজ্জামান, ড গোলাম মোর্ত্তুজা, আক্তার আলী, অধ্যাপক আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক আমিনুল হক, অধ্যাপক সাহেদ জামান, অধ্যাপক মো. আসাদুল হক, আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক গোলাম ছাদিক, অধ্যাপক খালেকুজ্জামান, অধ্যাপক ড সালেহ হাসান নকীব, ড মো. জাহাঙ্গীর আলম, ড মো. সালাহ উদ্দিন, ড আব্দুল মতিন তালুকদার, ড মো. মতিয়ার রহমান, ড আওরঙ্গজীব মো. আব্দুর রাহমান, ড মো. শেরেজ্জামান, ড আব্দুল মাজেদ চৌধূরী, ড. মো. শামসুল আলম সরকার। অন্যদিকে সিনেটে হলুদ প্যানেল থেকে ১৪ জন জয়ী হয়েছেন। তারা হলেন, অধ্যাপক ড. আনসার উদ্দিন, ড. মো. মজিবুর রহমান, ড. মো. ফিরোজ আলম, ড. ইসমাইল হোসেন, ড. মো. অহিদুল ইসলাম, ড. আবুল কালাম আজাদ হক, ড. একে এম আখতার হোসেন, ড. মো. আব্দুল গনি, ড মো. ইসতিয়াক হোসেন, ড. মো. মনজুর হোসেন, ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান, ড মো. খাইরুল ইসলাম, ড. মো. আবুল কালাম আজাদ, ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক গ্রুপ (সাদাদলের) দলের (ভারপ্রাপ্ত) আহবায়ক প্রফেসর ড মো. এনামুল হক জানান, ‘দেশে যে একনায়কতন্ত্র শাসন চলছে এতে ক্ষুদ্ধ দেশবাসী এবং শিক্ষক সমাজ। বিশেষ করে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, শিক্ষক নিয়োগে দলীয়করণের চেষ্টা নিয়ে সকল শিক্ষকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ । এ নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি অ-মেধাবী শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান নষ্ট করতেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে সচেতন শিক্ষকরা আমাদেরকে নির্বাচিত করেছেন’।
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহবায়ক জুলফিকর আলী প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যকার দ্বন্দ্বকেই প্রধান কারন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আওয়ামীপন্থী প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে শীতল সম্পর্ক থাকতে পারে। সে জন্যই বিএনপি জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা বেশি ভোট পেয়েছেন বলে মনে করেন’।
উল্লেখ্য যে, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভোটগ্রহনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ১৫০ জন শিক্ষক ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এম এ বারী।খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০