মোহনপুর প্রতিনিধি :
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের চাঁদপুর বিলে ভেকু মেশিনে অবৈধভাবে পুকুর খনন শুরু করছেন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। গত শুক্রবার রাত থেকে মৌগাছি ইউনিয়নের নন্দনহাট এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আনোয়ার হোসেন বিলের প্রায় ১৪ বিঘা ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন কাজ শুরু করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চাঁদপুর বিলের বাটুপাড়ার নিচের জমিতে দুটি ভেকু মেশিনে দ্রুত পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে এলাকার কৃষক ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর বিলের জমির বিভিন্ন মালিকের কাছে প্রতিবছর বিঘা প্রতি ২০ হাজার টাকা করে টেন্ডার নিয়ে পুকুর খনন শুরু করেছেন। বিলের প্রকৃত জমির মালিকদের ১০ বছরের চুক্তিতে ইতোমধ্যে জমির লিজের টাকা পরিশোধ করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে রাাতের আধারে দ্রুত গতিতে পুকুর খনন কাজ করার
অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আনোয়ার হোসেনের পুকুর খনন সম্পন্ন হলে তার ভাই মিজানুর রহমান আরো ২০ বিঘার উপর পুকুর খনন শুরু করবেন বলে জানা যায়। ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিলের ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে এলাকার প্রভাবশালীদের যোগসাজোসে পুকুর খনন করছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। এরফলে বিলে ফসলি জমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ওপরও দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এলাকার লোকজন অবিলম্বে পুকুর খননকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।জানা যায়, অধিক লাভের আশায় গুটিকয়েক স্থানীয় প্রভাবশালী লোক পুকুর খনন করে মাছ চাষ করলেও কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন। শুধু রাজশাহীর মোহনপুরই নয়; গত দুই বছরে জেলার তানোর, দুর্গাপুর, পুঠিয়া ও পবা উপজেলাতেও শত শত হেক্টর আবাদি জমি নষ্ট করে পুকুর খন করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের তেমন বড় ধরনের উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, অতিরিক্ত পুকুর খননের কারণে আবাদি জমি পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে। যার কারণে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ অনেকটাই কম। আবাদি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের কারণেই ফসল উৎপাদন কম হওয়া শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষকরা। এলাকার পুকুর খননকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। অবিলম্বে পুকুর খনন বন্ধের জন্য প্রশাসনকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।এবিষয়ে পুকুর খননকারী মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, চাঁদপুর বিলে ১২ বিঘার উপর ১০ বছর মেয়াদে পুকুর খনন শুরু করেছি। কেশরহাট এলাকার শাহ আলম নামের একজন তিনি সবকিছু ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে পুকুর খনন কাজ করছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার হোসেন বলেন শাহ আলমই স্থানীয় প্রশাসনসহ সবকিছু ম্যানেজ করে দিয়েছেন। মৌগাছি ইউনিয়নের
চেয়ারম্যান আলামিন বিশ্বাস বলেন, চাঁদপুর বিলে ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খনন করা হচ্ছে গত শুক্রবার শুনেছি। তবে আমার কাছে এমন কেউ এসে অভিযোগ করেনি। তিনি বলেন, অবৈধভাবে পুকুর খননের বিপক্ষে আমি। পুকুর খনন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শনিবার রাতে টেলিফোনে এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনারুল হালিম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে থাকায় এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীর্জা ইমাম বলেন, চাঁদপুর বিলের জমি খনন করে পুকুর কাটছে এমন কোন অভিযোগ এখনো পায়নি। পুকুর খনন বন্ধের জন্য এলাকার স্থানীয়দের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি জানান। ইউএনও কে এবিষয়ে জানিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আর
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০