নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী অঞ্চলে এবার কালোজিরা আদা ও গোলমরিচ এবং লবঙ্গ খেলে করোনা না হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। রাতের মধ্যেই গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার পর রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকায় আদা, কালোজিরা, গোলমরিচ লবঙ্গ খাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। মানুষের মধ্যে কে বা কারা ফেসবুকে বা মোবাইল ফোনে মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে দেয়। এই গুজবটি ছড়িয়ে পড়ার পর রাজশাহীতে আদা, কালোজিরা ও গোলমরিচ গভীর রাতে খাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়।
জানা গেছে, কে বা কারা বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে একটি একটি সদ্য জন্ম নেয়া শিশু মরণঘাতী করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আদা কালোজিরা ও গোলমরিচ এবং লবঙ্গ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এরপর শিশুটি মারা যায়। আবার এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সদ্য জন্ম নেয়া একটি শিশু আদা, কালোজিরা ও গোলমরিচ খেতে বলেছে। এগুলো খেলে করোনা ভাইরাস থেকে দূরে থাকবে। কে বা কারা এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে দেয়ার পর একজন থেকে আরেকজন এক আত্মীয় থেকে আরেক
আত্মীয় পর্যন্ত বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। গভীর রাতে এক আত্মীয় তার অন্য আত্মীয় ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে এসব খাওয়ার পরামর্শ দেয় এবং এক প্রতিবেশী এগুলো সে অন্যকে খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি শুরু করে। এ নিয়ে রাতভর ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে গোলমরিচ, আদা ও কালোজিরা খাওয়ার হিড়িক পড়ে যাই। মোবাইল ফোনেও আত্মীয়দের কলে একই কথা শোনা যায় তবে একজনের কথা একেক ধরনের ছিল। কেউ কেউ আবার গুজবের সত্যতা জানতে চায় আবারব অনেকে কল দিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বাঘচর হাট এলাকার এক পরিচিত মুদি দোকানি গভীর রাতে প্রতিবেদককে কল দিয়ে বলেন, ভাই অনেক রাতে প্রায় অর্ধেক গ্রামবাসী দোকান খোলার জন্য অনুরোধ করে আদা, কালোজিরা ও গোলমরিচ লবঙ্গ কিন্তে চায়। তাদের অনুরোধে বিক্রি করেছি। ভাই শুনেছি নাকি রাজশাহী মেডিকেলে এক শিশু জন্ম নেওয়ার পর এসব পরামর্শ দিয়েছে। এসব খেলে নাকি করোনাভাইরাস হবে না ঘটনা সত্যি? তাকে এসব গুজব জানালে তিনি বলেন, আমাদের গ্রাম্য এলাকায় এটি নিয়ে হুলুস্থুল পড়ে গেছে।
শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ নয় রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় এ গুজব ছড়িয়ে পড়ে গভীর রাতে এক প্রতিবেশী ডাক দিয়ে গোল মরিচ আদা ও কালোজিরা খেতে বলে।
পরে প্রতিবেশীরা সবাই মিলে এই জিনিসগুলো খায় এবং খাওয়ার পরামর্শ দেয়। গুজব জানালেও কান দেয়নি তারা। সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক ঘেঁটে দেখা যায়, বিভিন্ন আইডি থেকে এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে অসংখ্য মেসেজ দেওয়া হয়েছে এসব খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে। যদিও রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব গুজব রোধে জনগণকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সেই সাথে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।
কিন্তু রাজশাহী অঞ্চলে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ার পর থেকে একের পর এক গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। এসব গুজব কে বা কারা ছড়াচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান সচেতন মানুষ। উল্লেখ্য, এর আগে ও প্রায় একই সমসাময়িক সময়ে দুনিয়া কিয়ামত হবে এমন গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে অনেক মেসেজ করা হয়। এজন্য কিছু কিছু মসজিদে গভীর রাতে আজান শোনা গেছে বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেক মানুষ পোস্ট করে এর নিন্দা জানাতে থাকে।
এমকে
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০