নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর উন্নয়নে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। শনিবার সকালে মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলন কক্ষে রাজশাহীর উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই রোডম্যাপ তুলে ধরেন। নিজের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ সময় সাংবাদিকদেরও সহযোগিতা কামনা করেন বাদশা।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশার ঘোষিত রোডম্যাপে রাজশাহীতে শিল্পের বিকাশ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রোডম্যাপে এ অঞ্চলের বেকারদের কর্মসংস্থান নিয়ে সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনার কথাও জানানো হয়েছে। বাদশা মনে করেন, এসব বাস্তবায়ন হলে রাজশাহীকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীকে এগিয়ে নিতে এরই মধ্যে তিনি বন্ধ রেশম কারখানা চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটিতে এখন পরীক্ষামূলকভাবে কাপড় উৎপাদনও শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিক উৎপাদনে যাবে কারখানাটি। তখন কারখানায় একটি শো-রুমও স্থাপন করা হবে। সেখান থেকেই মিলবে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রেশম কাপড়ের পোশাক।
তিনি জানান, কারখানাটি বন্ধের সময় তিনি বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য ছিলেন না। রেশম বোর্ডের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েই তিনি কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নেন। তখন কারখানাটি বেসরকারিকরণ বোর্ডের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। সেখান থেকে তিনি কারখানাটি আবার পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফিরিয়ে এনেছেন।
এমপি বাদশা বলেন, উন্নয়নের জন্য এখন গার্মেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। গার্মেন্টগুলো এখন শুধু ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা অঞ্চলে গড়ে উঠছে। গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা তৈরি পোশাক রফতানিতে পাঁচ শতাংশ শুল্ক ছাড় পান। সরকার এই অর্থ ভুর্তুকি দেয়। তিনি মনে করেন, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে গার্মেন্ট কারখানা গড়ে তুলতে হলে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের জন্য ১০ শতাংশ শুল্ক মওকুফ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম-নারায়ণগঞ্জের মতো এলাকা থেকে পোশাক রফতানির জন্য বন্দর কাছে। কিন্তু রাজশাহী থেকে দূরত্ব বেশি। এই দূরত্ব বিবেচনায় রফতানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া উচিত। তাহলে ঢাকা থেকে শত শত গার্মেন্টস কারখানা রাজশাহী অঞ্চলে উঠে আসবে। কারণ এ অঞ্চলে জনবলের অভাব নেই। এটি ঢাকার চেয়ে সস্তাতেও পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এ অঞ্চলে শিল্পায়নের জন্য দরকার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাও। তাই রাজশাহী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করে কার্গো বিমান ওঠানামার উপযোগী করা দরকার। পাশাপাশি আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রেললাইনকে ডুয়েল গেজ করা প্রয়োজন। তাহলে বিমানবন্দর ও রেললাইন ব্যবহার করে এ অঞ্চলের পণ্য দেশ-বিদেশের যে কোনো প্রান্তে পাঠানো সম্ভব।
তিনি বলেন, রাজশাহীর হরিয়ান সুগার মিলে অনেক জায়গা রয়েছে। তার ভেতর দিয়েই গেছে রেললাইন। সেখানে রেলের কন্টেইনার পোর্ট করা যেতে পারে। তাহলে পাবনার ঈশ্বরদীর বিশেষ অর্থনৈতিক জোনের ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন। এটি করার জন্য তিনি সরকারের কাছে আসছে বাজেটের আগেই প্রস্তাব করবেন।
তিনি জানান, রাজশাহী থেকে ভারতের হাওড়া পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চালুও তার একটি স্বপ্ন। এটি পূরণে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার প্রস্তাবে দুই দেশেরই রেলপথ বিভাগ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চিঠি চালাচালিও চলছে। রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে রাজশাহী।
বাদশা বলেন, আমরা আন্দোলন ছাড়া উন্নয়ন পাই না। এটা অদ্ভুত ব্যাপার। বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেললাইন স্থাপনের জন্যও আন্দোলন করতে হয়েছে। পরিকল্পনা এবং স্বপ্ন ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সুন্দর শহর গড়তে হলে কর্মসূচিরও বিকল্প নেই। তাই তিনি এই রোডম্যাপ এঁকেছেন। এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নে আগামী বাজেটেই তিনি রাজশাহীর জন্য আলাদা বরাদ্দ চাইবেন। রাজশাহী অঞ্চলের সব সংসদ সদস্যরাও তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তার সঙ্গে এ অঞ্চলের অন্য সংসদ সদস্যরাও এ দাবি জানাবেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০