রাজশাহী মহানগরীতে বন্ধুর উপুর্যপরি ছুরিকাঘাতে আনসার বাহিনীর এক সদস্য ও ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় মিজানুর রহমান মিজান (৩৫) নিহত হয়েছেন। তিনি আনসার বাহিনীর হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড়। গত শনিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যার পরে নগরীর হেতেমখাঁ এলাকায় ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের ভেতর আনসারদের একটি কোয়ার্টারের সামনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত আনসার সদস্য নগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকার মন্টুর ছেলে। এ ঘটনার মূল আসামী ও সুদ ব্যবসায়ী মাধবকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ১১টার দিকে তাকে রাজশাহী পুঠিয়া বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়। আটক মাধবের বাড়ি হেতেমখাঁ এলাকায়। তিনি মিজানের বন্ধু ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের পাশে রেজা নামে একব্যক্তির একটা দোকান আছে। লকডাউন চলার কারণে মিজানুর ওই দোকানীকে লাইট বন্ধ করে ব্যবসা করতে বলেন। কিন্তু কেন লাইট বন্ধ করতে হবে এই প্রশ্ন তুলে মিজানুরের সঙ্গে তর্কে জড়ান মাধব। এ সময় তাদের দুজনের হাতাহাতিও হয়। তখন অন্য বন্ধুরা তাদের থামান। এরপর মিজানুর প্লান্টের ভেতরের এলাকায় ঢুকে আনসারদের কোয়ার্টারের সামনে সেখানকার সদস্যদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর মাধব সেখানে গিয়ে তাকে হঠাৎ ছুরিকাঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মিজানুরকে মৃত ঘোষণা করেন। তারপর মাধব পালিয়ে যান। পরে অভিযুক্ত মাধব সরকারকে পুঠিয়া থেকে শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টায় গ্রেফতার করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। মিজানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা মাধবের বাড়িতে হামলার প্রস্তুতি নেন। কেউ কেউ গিয়ে বাড়ির গেট ধাক্কাধাক্কি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ সেখানে মোতায়েন ছিল। এ সময় এলাকার লোকজন রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেন। তারা মাধবকে আটকের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। ছুরিকাঘাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত মিজানুর রহমান খেলোয়াড় কোটায় আনসার
বাহিনীতে চাকরিতে ঢুকেছিলেন। তিনি ভালো হ্যান্ডবল ও বাস্কেটবল খেলতেন। বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসেও তিনি আনসার বাহিনীর দলে ছিলেন। খেলা শেষে ছুটিতে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। এসেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন।
নগীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ছুটিতে মিজানুর রহমান রাজশাহীতে এসেছিলেন। সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ ভবনের পাশের গলিতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইলের লাইট বন্ধ করা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এর সূত্র ধরে খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আনসার সদস্য মিজানকে হত্যার ঘটনায় মূল আসামীকে আটক করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এস/আর
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০