বিশেষ প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা মাঠ ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে অবস্থিত কারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আবর্জনার ভাগাড়ের কারণে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে আসা ময়লা-আবর্জনা এই ভাগাড়ে জমা হয়। আর রাতে সেই অবর্জনাগুলো সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্ত তিন রাস্তার মাথায় এই ভাগাড় হওয়ার কারণে তা আশেপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এ কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা নাকে কাপড় দিয়ে চলাচল করে আবার কেউ কেউ
ভাগাড়ের পাশে পৌঁছালে দৌড়ে পার হয়। তবে বেশি সমস্যার মধ্যে পড়ে কারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই ভাগাড় পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয় আর ভাগাড়ের পাশেই প্রায় ৪/৫ ঘণ্টা সময় কাটাতে হয়। বাতাস বয়ে গেলে তা পুরো বিদ্যালয়েই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। দুর্গন্ধে অনেক শিক্ষার্থীর ক্লাস করতে সমস্যাও হয় বলে অভিযোগ করা হয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। এ কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের পাশ থেকে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়টি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের কাছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে রাজশাহী
কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে প্রতিষ্ঠিত হয় কারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন কারাগারে কর্মরতদের ছেলেমেয়ে ও অন্যান্য শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়টির অবস্থান সবুজে ঘেরা ও রাজশাহীর মানুষের বিনোদনের অন্যতম প্রধান পদ্মা নদীর পাশে হলেও ভাগাড়ের কারণে তা ম্লান হয়ে গেছে। যেখানে ভাগাড় রয়েছে সেই জায়গাটিও সবুজে ঘেরা। গাছপালা রয়েছে অনেক। কিন্ত ভাগাড়ের কারণে সেই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। শিক্ষার্থী ও পথচারীরা সেই স্বাস্থ্যকর সুন্দর পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেখানে
দাঁড়ানোতো দুরের কথা হেঁটে রাস্তা পার হওয়ায় মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পথচারীরা ওই রাস্তা দিয়ে একবার গেলেও শিক্ষার্থীরা দিনে বেশ কয়েকবার যাতায়াত করে। স্কুলে যাওয়া ও বাড়ি ফেরার সময় কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে ভাগাড় থেকে
ময়লা-আবর্জনা নিয়ে যাওয়া হলেও ভালোভাবে পরিস্কার করা হয়না। এ কারণে আরো বেশি দুর্গন্ধ ছড়ায়। সোহান নামের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, এখানে ভাগাড় থাকার কারণে স্কুলে যাতায়াতে খুব কষ্ট হয় আমাদের। দুর্গন্ধে সমস্যার মধ্যে পড়ি। স্কুলে পৌঁছে গেলেও অনেক সময় দুর্গন্ধ লাগে। বাতাস
আসলেই দুর্গন্ধে ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। আকাশ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুলের পাশে ভাগাড় থাকার কারণে আমার প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হই। তাই ভাগাড়টি এখান থেকে অপসারণ করার দাবি জানাচ্ছি। আয়েশা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এদিক দিয়ে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রচুর দুর্গন্ধ হয়। এতে আমাদের সমস্যা হয়। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ভাগাড়ের কারণে দুর্গন্ধে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় বাচ্চাদের। এখানে ভালো কোন ব্যবস্থা করলে পাঠদান ও স্কুলে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের সুবিধা হবে।
স্কুলে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, এমন মনোরম
পরিবেশ ও বিদ্যালয়ের পাশে ভাগাড় থাকা দুঃখজনক। ভাগাড়টি এখান থেকে অপসারণ করলে শিক্ষার্থী ও পথচারীদের সুবিধা হবে। এই সুন্দর পরিবেশে বিরতির সময় ও ক্লাস বন্ধ থাকলে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করতে পারবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরশের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মামুন বলেন, সেই ভাগাড়ের কাছে একটি অত্যাধুনিক সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন হবে। এটি হয়ে গেলে আর সমস্যা থাকবে না। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে।
আর/এস
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- k24ghonta@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০