সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকারবিবার , ২৮ জুলাই ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীতে প্রতারণার আশ্রয়ে টাকা আদায় , বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত সাহায্য প্রার্থীরা

omor faruk
জুলাই ২৮, ২০১৯ ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীতে সাহায্য চাওয়ার নামে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতারণা করে টাকা আদায় করছে একটি চক্র। এরা চক্রের বয়ষ্ক সদস্যকে নিজের বাবা সাজিয়ে অথবা মা সাজিয়ে প্রতিনিয়ত নগরবাসীর কাছে সাহায্য চেয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা। এতে প্রকৃত সাহায্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে রাজশাহী মহানগরীতে ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েছে। তবে ভিক্ষুকের থেকে এখন মেয়ের বিয়ে, অসুখ, সবকিছু হারিয়ে বাড়ি যেতে পারছেনা, স্বামীর অপারেশন, সাথে থাকা সঙ্গী প্রতারণা করে সবকিছু কেড়ে নেওয়ায় নিরুপায় হয়ে সাহায্য চাওয়া এমন মানুষের সংখ্যা

বেড়েছে কয়েকগুন। কারণ ভিক্ষা চাওয়ার থেকে বিভিন্ন উছিলায় সাহায্য চাওয়ার কথা বললে বেশি টাকা পাওয়া সম্ভব। এ জন্য এখন একটি চক্র ভিক্ষুক না সেজে সাহায্য চাওয়াকেই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা। এরমধ্যে কিছু মানুষ প্রকৃত সাহায্য প্রার্থী রয়েছেন। যারা সত্যি বিপদে পড়ে মানুষের কাছে সাহায্যের জন্য যান। আর কিছু মানুষ এই সাহায্য চাওয়াকে ব্যবসা হিসেবে নিয়ে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা। সরজমিনে নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে মানুষ চা খাচ্ছে বা বসে গল্প করছে সেখানেই এরা গিয়ে সাহায্য চাচ্ছে। একজন যেতে না যেতেই আরেকজন। এভাবে সকাল থেকে শুরু গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের থেকে টাকা তুলছে সাহায্য প্রার্থী

প্রতারকরা। এরমধ্যে কিছু প্রকৃত সাহায্য প্রার্থীও রয়েছেন। যারা বিপদে পড়ে মানুষের দ্বারস্থ হন। সম্প্রতি এই প্রতিবেদক ও তার বন্ধু নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রানীবাজারে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। এ সময় প্রায় ৩০ বছর বয়সি এক যুবক তাদের কাছে এসে জানায়, তার বাড়ি পাবনা। আরেকজনকে সাথে নিয়ে রাজশাহী শহরে কাজ করতে এসেছিল। বিকেলে তার সেই সঙ্গীর কাছে টাকা-পয়সা রেখে পুকুরে গোসল করতে নামলে সে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। তার কাছে খাওয়া বা বাড়ি যাওয়ার টাকা নেই। তাই পাবনার যাওয়ার মতো বাড়ি ভাড়া দিলে তার উপকার হবে। অথচ রাতে খাওয়ার টাকা। এভাবে শুধু এই প্রতিবেদকের কাছেই নয় অন্য আরো লোকজনের কাছে সাহায্য চাইলো। সবাই সরল

মনে তার কথা বিশ্বাস করে যে যার মতো সাহায্য করলো। কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ নয়। তার মাত্র একদিন পরে নগরীর রেলগেট এলাকায় ওই পাবনা বাড়ি বলে জানানো যুবক একজন বয়ষ্ক মানুষকে সাথে নিয়ে বোনের বিয়ে বলে সাহায্য চেয়ে বেড়াচ্ছে। রেলগেটে বসে থাকা অন্য মানুষের সাথে সাথে এই প্রতিবেদকের কাছে বয়ষ্ক মানুষটিকে নিজের বাবা পরিচয় দিয়ে বোনের বিয়ের খরচের জন্য টাকা সাহায্য চায়। এই সময় তাকে রানীবাজারের ঘটনা মনে করিয়ে দিলে সে সাথে সাথেই প্রতিবেদকের কাছে ক্ষমা চেয়ে এমন প্রতারণা করবেনা বলে জানায়। শুধু ওই যুবকই নয় তার মতো অনেক মানুষ সহজ পথে টাকা আয়ের জন্য এই প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। যারা প্রতিনিয়ত নগরবাসী ও নগরে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষের সাথে প্রতারণা করে টাকা আদায় করে নিচ্ছে। আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, একই ব্যক্তি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলে

সাহায্য চাচ্ছে। এরা ভিক্ষুক নয় বরং নিজেদের বিপদের কথা বলে সাহায্য দাবি করে। এদের জন্য প্রকৃত সাহায্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী। রাহিদুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, এক নারী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয় ও সমস্যার কথা বলে টাকা আদায় করে। তার মতো অনেক নারীকেই তিনি প্রতারণার আশ্রয় নিতে দেখেছেন বলে জানান তিনি। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একব্যক্তি বলেন, এভাবে যারা মিথ্যে কথা বলে সাহায্যের নামে টাকা চায় তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা একই চক্রের সদস্য। খোঁজ নিলে সত্যতা বের হয়ে আসবে। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, যারা এসব প্রতারণা করে তাদের টাকা আদায় করছে তাদের চিহ্নিত করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুই/একজনকে ধরে আইনি ব্যবস্থা নিলে বাকিগুলো শহর ছাড়তে বাধ্য হবে।

আর/এস

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।