রাজশাহী মহানগরীতে নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান মিলেছে। সেই কারখানা থেকে ৭১ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন নামিদামী কোম্পানীর নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে ও এ ঘটনায় জড়িত মূল হোতাসহ ২ জনকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টা থেকে আজ শনিবার বেলা ১১ টা পর্যন্ত নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ছোট বনগ্রাম চন্দ্রিমা আবাসিক-১ এলাকায় অবস্থিত শফিকুল ইসলাম আনিছের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ এ নকল ওষুধ জব্দ করা হয়। এছাড়াও নকল ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত মেশিনটি জব্দ করা হয়েছে।
নকল ওষুধ
আটককৃতরা হলেন, নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ছোট বনগ্রাম চন্দ্রিমা আবাসিক-১ এলাকার আনসার আলীর ছেলে নকল ওষুধ তৈরির মূল হোতা শফিকুল ইসলাম আনিছ (৪৬) ও নগরীর জামালপুর এলাকার আনসার আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৩২)। আটক হওয়ার সময় আনিছ তার নকল ওষুধ কোম্পানী চালাতে সংশ্লিষ্ট চন্দ্রিমা থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, সিটি এসবি ও ৪/৫ জন কথিত সাংবাদিককে নিয়মিত মাসোয়ারা দিতেন বলে জানিয়েছে। মাসে সেই টাকার মোট পরিমাণ ৭০/৮০ হাজার টাকা।
এ নিয়ে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু আলম সিদ্দিক। তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, ক্রেতাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল বাজারে নকল ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। সেই ওষুধ খেয়ে মানুষ আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এমন
[caption id="attachment_116154" align="alignnone" width="1080"] সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আরএমপি কমিশনার[/caption]
অভিযোগ করা হয়। এরপর ডিবিকে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। তারপর থেকে ডিবি নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধানে নেমে পড়ে। শুক্রবার রাতে ডিবির একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ছোট বনগ্রাম চন্দ্রিমা আবাসিক-১ এলাকায় অবস্থিত শফিকুল ইসলাম আনিছের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে স্কয়ার কোম্পানীর নকল সেকলো ১৮৬৪ প্যাকেট, এসবি ল্যাবরেটরীজ কোম্পানীর নকল পাওয়ার-৩০ ৭৬৯ প্যাকেট, নকল পাওয়ার-৩০ মোড়কছাড়া ৫১৮৮ প্যাকেট, নকল পাওয়ার-৩০ সবুজ রংয়ের
[caption id="attachment_116120" align="alignnone" width="960"] নকল ওষুধ তৈরির মেশিন[/caption]
৬৫ পাতা, নকল পাওয়ার-৩০ খোলা ১৬ কেজি, নাভানা কোম্পানীর নকল পিজোফেন ১৩৫৬ পাতা, রিলায়েন্স কোম্পানীর নকল ইলিক্সিম ১২৫ পাতা, নকল রিলামক্স ২২ পাতা, নকল সেকলোর মোড়ক ৬ বক্স, ভেজাল ওষুধ তৈরির মেশিন বিলিস্টার ও কমপ্রেসার। জব্দকৃত মেশিন ও ওষুধের মূল্য প্রায় ৭০ লাখ ৯৭ হাজার ৩০০ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নকল ওষুধ কারখানার মালিক আনিছ জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে কাঁচামাল এনে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির বহুল ব্যবহৃত নকল ওষুধ তৈরি করতো। পরবর্তীতে তার তৈরি নকল ঔষধ বিভিন্ন ফার্মেসীতে পৌঁছিয়ে দিতো এবং দেশের বিভিন্ন স্থানেও সরবরাহ করতো বলে জনায়। তাদের নির্ধারিত ডিলারদের মাধ্যমে এ নকল ওষুধগুলো বাজারজাত করা হতো। রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন ফার্মেসীতেও এই ওষুধ বিক্রি করা হয়েছে।
নকল ওষুধ কারখানার মালিক আনিছ যাদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা গণমাধ্যম কর্মীদের পক্ষ পুলিশ কমিশনারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যাদের নাম এসেছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যারা বিক্রি করেছে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল, পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল হাসান ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০