নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মাটিতে ধর্মীয় রীতি ও শেষকৃত্য শেষে চিরনিদ্রায় সমাহিত করা হলো উপমহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী প্লেব্যাক সম্রাট ও কন্ঠরাজ এন্ড্রু কিশোরকে। তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী রাজশাহীতে সমাহিত করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে তাকে রাজশাহী মহানগরীর কালেক্টরেট মাঠের পাশে অবস্থিত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। সেখানে তার মা, বোন ও ভাইয়ের কবর রয়েছে।
এর আগে সকাল ৯টায় তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে নেওয়া হয় রাজশাহী সিটি চার্চে। সেখানে শেষকৃত্যানুষ্ঠান শেষে সর্বজন মানুষ শ্রদ্ধা জানান। এসময় রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ আসেন তাকে শ্রদ্ধা জানাতে। শেষ শ্রদ্ধা জানান তার ভক্ত ও অনুরাগীরা।
গত ৬ জুলাই রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এ অবস্থিত তার বোন ডাক্তার শিখা বিশ্বাসের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্লেব্যাক সম্রাট কন্ঠরাজ এন্ডু কিশোর। তার মৃত্যুর সময় ছেলে ও মেয়ে বাইরে ছিলেন। তবে তার পাশেই ছিলেন স্ত্রী লিপিকা। ছেলে মেয়ে দেশের বাইরে থাকায় তার লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। তখন তার স্বজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয় ছেলে মেয়ে বিদেশ থেকে ফিরলে ১৫ জুলাই শেষকৃত্য শেষে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী রাজশাহীতে সমাহিত করা হবে। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গন সহ দেশের নানা শ্রেণি-পেশার এবং তার অগণিত ভক্তের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি পায় ১৫ হাজার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
গান গেয়ে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৭৭ সালে তিনি চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন। তারপর আর তাকে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক গান গেয়ে দর্শকদের হৃদয় ছুয়ে গেছেন। এজন্যই তিনি প্লেব্যাক সম্রাট উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়। তার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শোক প্রকাশ করতে থাকেন তার অগণিত ভক্ত শ্রোতা। গুণী এই শিল্পী ১৯৫৫ সালে রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন।
গত বছর ব্লাড ক্যান্সারে চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুর যান শিল্পি এন্ড্রকিশোর। সেখানে দীর্ঘ নয় মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অবশেষে ১১ জুন দেশে ফিরেন এই শিল্পী। এরপর দ্রুত রাজশাহীতে চলে আসেন তিনি। রাজশাহীতে আসার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। অবশেষে ৬ জুলাই সন্ধ্যা সাতটার দিকে না ফেরার দেশে চলে যান এই গুনী এই শিল্পী। তিনি চিকিৎসার জন্য তার ফ্ল্যাটও বিক্রি করেছিলেন। তার প্রয়ানে বাংলাদেশ হারাল এক মেধাবী শিল্পীকে। আর রাজশাহী হারাল উজ্জ্বল নক্ষত্রকে। জীবনের গল্প শেষ করে দয়ালের ডাকে চলে গেলেন তিনি।
এমকে
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- k24ghonta@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০