নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক সাজা প্রদানের প্রতিবাদে এবং দেশমাতার নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে সোমবার বেলা ১১টায় নগরীর মালোপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কে মাননববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পূণর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, বাগামারা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর।
অন্যদের মধ্যে রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, কাউন্সিলর শাহজাহান আলী, ইকবাল হোসেন দিলদার ও বেলাল হোসেন, রাজশাহী মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হাসনাইল হিকল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর তারেক খালেদ, তাঁতী দলের সভাপতি আরিফুল শেখ বনি ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপিকা সখিনা খাতুন, নাসিরা খানম, জরিনা ও গুলশান আরা মমতা, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিন আহম্মেদ ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কনক সহ রাজশাহী মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠন এবং সাংগঠনিক ৩৭টি ওয়ার্ডের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি নেতা মিনু বলেন, এই অবৈধ সরকারের শেষ সময় হয়ে এসেছে। সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিজেও বুঝতে পেরেছেন যে, আগামীতে তিনি বা তার দল আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী সহ তাঁর দলের সকল সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও নেতারা সিমাহীন দুর্নীতি, গুম,. খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, একতরফা নির্বাচন এর মূল কারণ। দেশের মানুষের সাথে অন্যায় করেছে। অন্যায়ভাবে জনগণকে এবং বিএনপি ও ২০দলীয় জোটের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে এবং সাজানো রায়ে কারাগারে পাঠাচ্ছে। শুধু নেতাকর্মীদের নয় বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে পরিত্যাক্ত ও নির্জন কারাগারে রেখেছে। এছাড়াও সেই কারাগারে সম্পূর্ন অবৈধভাবে আদালত বসিয়ে বেগম জিয়ার মামলা পরিচালনা করছে। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হলেও তাঁকে চিকিৎসা না করে তিলে তিলে কারাগারে মেরে ফেলার জন্য এই সরকার নীলনক্সা এঁকেছে। সরকারে এই সকল আচরনের ধিক্কার জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার ইচ্ছানুযায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার দাবী জানান মিনু।
তিনি বলেন, বর্তমান অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর এক সময় কারাগারে ছিলেন। সেখান থেকে চিকিৎসার নামে লন্ডলে পালিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া জনগণকে ভালবেশে এদেশ থেকে পালিয়ে যাননি। তিনি আমৃত্যু পর্যন্ত এই দেশেই থাকবেন বলে ঘোষনা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারনেই পুণরায় দেশে ফিরে আসতে পেরেছিলেন। কিন্তু এই প্রধানমন্ত্রীই শত্রæতা করে বেগম জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে আপামর জনসাধারণকে নিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন। আর এই স্বাধীন দেশে বর্তমান সরকার নৈরাজ্য চালাচ্ছে। বিচার বিভাগকে কুলশীত করেছে। নিরপেক্ষ বিচার ও রায় দেওয়ার জন্য সাবেক প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহাকে দেশ থেকে বিতারিত করেছে। ছাত্রলীগের মধ্যে থেকে নিযুক্ত পুলিশ বাহিনীর সদস্য দিয়ে দেশে অরাজকতা, ভোট জলিয়াতী, বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, খুন ও গুম করাচ্ছে এই সরকার। এই সকল পুলিশ সদস্য ও প্রশাসনের অতিউৎসাহী সদস্য ও কর্মকর্তাদের আগামীতে বিচারের কাঠগড়ায় নিয়ে আসা হবে। সেইসাথে বতর্মান প্রদানমন্ত্রীও ছাড় পাবেন না বলে জানান মিনু। তিনি বলেন, এখন আর কোন শান্ত আন্দোলন নয়। বেগম জিয়ার মুক্তি, এই সরকারের পতন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সেইসাথে রাইিজং টাইগারদের মত ঝাপিয়ে পড়ে জেলের তালা ভেঙ্গে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে হুঁশিয়ারী দেন মিনু।
বিএনপি নেতা বুলবুল বলেন, বক্তৃতা দেওয়ার সময় শেষ। এখন সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশে সরকার পতনের অনেক আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করে সরকারের ভীত নড়িয়ে দিয়েছে। অথচ এই সকল শিক্ষার্থীদের নৈতিক দাবী থাকলেও এখন তাদের আইনশৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে গ্রেফতার করে জেল হাজতে এবং কিছু কিছু শিক্ষার্থীকে গুম ও হত্যা করছে এই সরকার। এই সরকারের কাছে শিশুসহ অন্যান্য জনগণ কেউ নিরাপদ নয়। তিনি পুলিশের এই আচরনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, এখন রাস্তায় বেড় হলে ঘরে ফেরার কোন নিশ্চয়তা নাই।
বুলবুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ট্রেন থামিয়ে রাস্তায় নেমে সম্পূর্ন নিয়ম বহির্ভূতভাবে জনসভা করেছেন। তিনি অনেক নাটক করেছেন, এখন আর নাকট দেখার সময় নেই। সরকারের এই সকল মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তারা ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের মত আবার নির্বাচন করতে চাচ্ছে। কিন্তু বেগম জিয়াকে মুক্তি না দিলে এদেশে কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবেনা। রক্ত দিয়ে হলেও বেগম জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচন করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী দেন। তিনি আরো বলেন, সিটি কের্পারেশনের ন্যায় আর কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবেনা। সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথ দখল করে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এদেশে সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করে নির্বাচন করা হবে বলে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেন। সেইসাথে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচীতে সকল নেতাকর্মীদের নগরীর ভূবনমোহন পার্কে উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান তিনি।
বিএনপি নেতা মিলন বলেন, এই সরকারের ফ্যাসিস্ট আচরণ ও দর্নীতি দেখে তাজুল ইসলামের ছেলে সোহেল তাজ স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে বিদেশে চলে গেছেন। আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাÐকে তিনি ঘৃনার চোখে দেখেন। শুধু তাজ নয় দেশে ষোলকোটি মানুষ এখন এই সরকারকে ঘৃনা করে। কারণ বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের সাথে বেইমানী করেছে। স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ভোট জালিয়াতী ও ডাকাতী করে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সরকারের এই সকল আচরণ দেখে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে। যে কোন সময়ে জনবিস্ফোরণ হতে পারে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, সরকার ভীত হয়ে এখন তৃনমুল পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদেরে গণগ্রেফতার শুরু করেছে। মামলা না
থাকলেও পুলিশ নিজেই বোমা ফাটিয়ে এবং বোমা ও মাদকদ্রব্য নেতাদের বাড়িতে গোপনে রেখে মাদকদ্রব্য ও নাশকতার মামলা দিয়ে আটক করছে। সেইসাথে আটক বাণিজ্য তারা শুরু করেছে। পুলিশকে এই সব অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তিনি। বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে মদদ দিচ্ছে উল্লেখ করে মিলন আরো বলেন, এই সরকারের অধিনে দেশে কখনো শান্তি ফিরে আসবে না। এখনই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহবান জানান। সেইসাথে সন্ত্রাসী, নির্যাতনকারী, খুনী, হাসিনার পতন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নিদর্লীয় নিরপেক্ষ তত্ববধায়ক সরকারের দাবীতে দ্রæত কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আর এই আন্দোলনের মাধ্যমে জীবন দিয়ে হলেও দাবী আদায় করা হবে বলে তিনি জানান।
উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সিনিয়র নেতাদের বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে যেকোন ধরনের আন্দোলনে একসাথে রাজপাথে থাকার প্রতিশ্রতি দেন।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০