বাগমারা প্রতিনিধি: অসহায় গরীব বয়লার শ্রমিকের মেয়ে মৌসুমী আকতার মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েও লেখা পড়ার অনিশ্চিত এমন সংবাদ স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ায় সাড়া দিলেন রাজশাহীর বাগমারার ইউএনও জাকিউল ইসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে তাকে ডেকে ভর্তির টাকার সহায়তা দিলেন। এছাড়া অদম্য এই মেধাবীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য বৃত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গত বুধবার জাতীয় পত্র পত্রিকা, অনলাইনে ও স্থানীয় পত্রিকায় হতদারিদ্র বাগমারার মৌসুমী আকতার মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার অনিশ্চিয়তা নিয়ে একটি সংবাদ ছাপা হয়। বিষয়টি প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যম পোস্টের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এছাড়া স্থানী বিভিন্ন্ন অনলাইন পোর্টে কপি হয়। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয়দের।
পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ভবানীগঞ্জ কলেজের উপাধ্যক্ষ আলহাজ আব্দুস সোবহানের মাধ্যমে মৌসুমীকে ডেকে পাঠান। তিনি তার দপ্তরে ডেকে নিয়ে ভর্তির জন্য নিজের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন দানশীল ও দাতা সংস্থার সঙ্গে কথা বলে নিয়মিত বৃত্তির ব্যবস্থা করবেন বলে মৌসুমীকে আশ্বাস দেন। বিষয়টি নিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে মৌসুমী আকতারের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও জাকিউল ইসলাম। এছাড়াও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ইসলামী ব্যাংকের ভবানীগঞ্জ শাখা ১০ হাজার টাকার সহয়তা দেয়। এদিকে বিষয়টি সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, বাগমারার দেওয়ান ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন সহায়তার কথা জানিয়েছেন।
গতকাল আর্থিক সহায়তার টাকা প্রদানে বিকাশের মাধ্যমে ইউএনও’র কাছে বেশ কিছু সংস্থা টাকা পাঠানোর প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন বলে সে সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি। আগামী ২০ আক্টোবর মৌসুমীকে গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ ভর্তির জন্য যাবে এমনটি শুনে তাকে ওই দিনের আগে তার সাথে স্বাক্ষাতের কথা বলেন ইউএনও।
মৌসুমী আকতার বলেন, ইউএনও স্যার আমাকে জানতে চাই ভর্তি হতে কত টাকা লাগবে। এতে আমি ২২ হাজার টাকার মত লাগবে বলে জানিয়েছি। আমার কাছে ৮ হাজার সংগ্রহ আছে। বাকি ১৫ হাজার টাকা তৎক্ষনিক ভাবে বাগমারার ইউএনও প্রদান করেন। একই ভাবে উপজেলার ইসলামী ব্যাংক শাখার মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা তাকে শিক্ষা সহায়তা দেয়া হয়। মৌসুমী জানান, আর্থিক অবস্থা তাদের কিছুই নেই। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া আমার ডাক্তার হওয়া সম্ভব নয়। তার পাশে থাকার জন্য বাগমারার ইউএনও কে ধন্যবাদ এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন।
মৌসুমীর মা বয়লার শ্রমিক আমেনা বলেন, এরকম ভাবে সহযোগিতা পেলে মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য তিনি বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান। সকলের সাহস ও আর্থিক সহায়তায় মৌসুমীর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ইউএনও জাকিউল ইসলাম বলেন, মৌসুমী মেডিকেলে পড়ার খরচ বহনের জন্য বিভিন্ সংস্থা বিত্তবানদের সাথে কথা হয়েছে তার লিখা পড়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে ইন্নসাল্লাহ বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন। তার প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবেন বলেও জানান তিনি। এছাড়া একই ভাবে উপজেলার বাগমারার পূর্বপাড়া গ্রামের হতদারিদ্র ভ্যান চালক আহসান হাবিবের মেয়ে জান্নাতুন নেছার ভর্তির ব্যাপারে তিনি সহয়তা দিয়েছেন বলে জানান। এদিকে দরিদ্র মেধাবী ছাত্রী মৌসুমী খাতুন ও জান্নাতুন নেছার ব্যাপারে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় যে সকল সাংবাদিকরা সংবাদটি প্রকাশ করে তাদের পাশে দাড়িয়েছে এজন্য তিনি সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানান।
খবর২৪ঘণ্টা, /জেএন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০