দুর্গাপুর প্রতিনিধি:
রাজশাহী মোহনপুরে দৈনিক আলোর ভুবণ নামে অবৈধ র্যাফেল ড্রএর লটারির নামে জুয়া ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায়। এমনকি ওই লটারির ফাঁদে পড়ে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানাযায় মোহনপুর উপজেলার শ্যামপুর হাটে আনছার ক্লাব মাঠে বসন্ত মেলা উপলক্ষে গত এক সপ্তাহ আগ থেকে শুরু হয় মাস ব্যাপি এই মেলা। ওই মেলাতে জয়পুর হাট থেকে আশা দৈনিক আলোর ভুবণ নামের র্যাফেল-ড্রএর লটারির আয়োজন করা হয়। এই মেলায় প্রতিদিন র্যাফেল ড্রর নামে চলছে জুয়া। শুধু মেলা প্রঙ্গণ নয় এ টিকিট মাইকিং ও ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে দুর্গাপুর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আর এই পুরস্কারের মোহে আগপিছ না ভেবে হুমড়ি খেয়ে টিকিট কিনে আর্থিক খতিগ্রস্ত হচ্ছেন মানুষ। আর এতে করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই চক্রটি।
জানা যায়, মোহনপুরে মেলা প্রঙ্গণে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ‘দৈনিক আলোর ভুবণ নামে প্রবেশ টিকিট র্যাফেল ড্র’ নামের লটারির টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এ লটারি টিকেট বিক্রির হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলাতেও। প্রতিদিন মেলার মাঠ থেকে ২২০টির মত চ্যাজার ভ্যান, অটো রিকশায় ও একটি টিকিট বাক্স নিয়ে ছুটে চলছে বিভিন্ন উপজেলার আনাচে কানাচে। সেগুলো থেকে মাইকিং করে চলছে টিকিট বিক্রি। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে টিকিটের বাক্স নিয়ে মোড়ে মোড়ে বসে থেকে বিক্রি করা হচ্ছে লটারির টিকিট। প্রতিটি টিকিটের মূল্য নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা। রাত ১০ টায় মেলা স্থানে শুরু হয় র্যাফেল ড্র। প্রতিদিন বিভিন্ন কোম্পানির একাধিক মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। আর ড্র অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে স্থানীয় আনোয়ার আলীর ‘ড্রিম লাইনে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দুর্গাপুর বাজারে চার্জার ভ্যানগাড়িতে ‘দৈনিক আলোর ভুবন র্যাফেল ড্রর’ টিকিট বিক্রেতা মোহনপুর এলাকার সুমন নামের এক ব্যাক্তি। তিনি চার্ট দেখিয়ে বলেন, সোমবার ১টি মোটরসাইকেলসহ মোট ৪৫টি পুরস্কার দেওয়া হবে। আজ দেওয়া হয়েছে ৪৫টি পুরষ্কার’ প্রতিদিন তারা হাজার হাজার টিকিট বিক্রি করেন। তাদের গ্রুপে প্রায় ২২০জন লোক কাজ করে।
সিংগা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আবদুল মতিন অভিযোগ করে বলেন, পুরস্কারের লোভে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা তাঁদের আয়ের বড় অংশ লটারির টিকিট কিনে শেষ করছে। এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত বাড়ি থেকে বাবার পকেট কেটে টাকা নিয়ে কিংবা টিফিন না খেয়ে টিফিনের সেই টাকায় লটারি টিকিন কিনছে। দুর্গাপুর অটো স্ট্যানে আব্দুল মালেক অটো রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি জানান, গত তিনদিন থেকে সে প্রতিনিদ দৈনিক আলোর ভুবন র্যাফেল ড্রএর নামের লটারী তিনটা করে টিকিক কিনেছেন। প্রতিদিন ৪৫টা করে পুরস্কার দিলেও তার ভাগ্যে কিচ্ছু জুটেনি। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৮০ টাকার টিকিট কিনেছেন। কানপাড়া গ্রামের মুদি দোকানদার আলতাফ হোসেন, যার উপর নির্ভর করে পরিবার, সে চারদিন হলো ৪টা করে লটারীর টিকিট কেটেছেন। জানতে চাওয়া হলে তার কাছে, কিছু না পাওয়ার পরও কেন প্রতিদিন লটারীর টিকিট কাটেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে লটারীর টিকিট কাটা এক প্রকার নেশা হয়ে গেছে। টিকিট না কাটলে মনের ভেতরে অস্থিরতা কাজ করে। এর আগেও রাজশাহীতে বাণিজ্য মেলায় দৈনিক গেইট পাশএর লটারীতে অনেক টিকিট কিনেছিলেনাম।
দুর্গাপুর কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, কয়েকদিন থেকে কলেজে যাওয়ার পথে বাজারে বিভিন্ন স্থানে বাদাম বিক্রি করার মত একটি বাক্স ও লটারির টিকিট নিয়ে বসে আছে। অনেক মানুষ হুমড়ি খেয়ে লটারির টিকিট কিনছে। এলাকার মানুষ লটারির নেশায় পড়ে গেছে। কিছু মানুষ হয়তো লটারিতে পুরস্কার পাচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই টিকিট কিনে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। আর প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্রটি। অতি দ্রুত দৈনিক আলোর ভুবন র্যাফেল ড্রএর নামের জুয়ার লটারি বন্ধের দাবি জানান তারা।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আর
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০