খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের শহরতলি নয়, ফুটবল জ্বরে কাঁপছে বাংলাদেশও।
উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার পাড়ায় পাড়ায় যেমন আর্জেন্টিনার নীল-সাদার দাপট, বিশ্বকাপ ঘিরে সেই একই রকম দাপট শাহবাগ মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। বাদ যায়নি গুলশান, ধানমণ্ডি, বনানি, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুরের মতো জায়গাও। কলকাতার মতোই মোড়ে মোড়ে বিকোচ্ছে ফ্ল্যাগ, পছন্দের স্টার-ফুটবলারের পোস্টার। এই দোকানগুলোর সামনে তিরিশ মিনিট দাঁড়ালেই বোঝা যাবে, পশ্চিমবঙ্গের মতোই বাংলাদেশেও দেদার বিকোচ্ছে মেসির জার্সি। এবং আর্জেন্টিনার ফ্ল্যাগও। কলকাতা স্টাইলে কোথাও কোথাও জায়েন্ট স্ক্রিন লাগিয়ে মেসির খেলা দেখার ব্যবস্থাও।
তবে শুধু ঢাকার কথা বললে আবেগটা পুরোপুরি ধরা যাবে না। ফুটবল সেলিব্রেশনে মেতেছেন খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রামও। দুই বাংলার ট্রেনে-বাসে-রিকশায় এখন একটাই নাম ‘লিওনেল মেসি’। বিশ্বকাপ ফিভারের যে আগুনটা বাংলাদেশে ধিকিধিকি জ্বলছিল, তাতেই যেন ঘি পড়ল লিও মেসির একটা পোস্টে। পোস্ট ঠিক নয়। বলা ভাল, ৬৫ সেকেন্ডের একটা ভিডিও। তার পরই উত্তাল বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম থেকে সাধারণ মানুষ।
কী দেখা যাচ্ছে ভিডিওয়? এক মিনিট পাঁচ সেকেন্ডের ওই ভিডিওয় বিশ্বের অনেকগুলি দেশের মেসি ফ্যানের উন্মাদনা। সেখানে শুরুতেই জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। মেসিকে নিয়ে দেশের মানুষের উন্মাদনা। একদিনে কয়েক লক্ষ মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন এবং শেয়ারও করেছেন। ভিডিওটি শেয়ার করার পর মেসি লিখেছেন, “২০১৮-র রাশিয়া বিশ্বকাপে লিও-সমর্থকদের মধ্যে আপনার পছন্দের দেশ খুঁজে নিন।” মুহূর্তে ভাইরাল হয় ভিডিওটি। মেসিকে নিয়ে এবার আর সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ট্রোলিং নয়। বলা ভাল, আজ দুই বাংলায় ফুটবল-আবেগ পুরোপুরি কাজ করছে মেসির জন্য।
দুই বাংলায় ফুটবল উন্মাদনা নিয়ে বলতে গিয়ে শ্রীজাত বলছিলেন, “বাঙালিদের ফুটবল নিয়ে একটা চিরন্তন আবেগ কাজ করে। চার বছর অন্তর দু’দেশই লাতিন আমেরিকার এই দেশটার সঙ্গে অনেকগুলো জায়গায় আমাদের আবেগ জুড়ে যায়। এখন আর্জেন্টিনা মানেই মেসি। গত বিশ্বকাপে মেসির হারটা বেশ কষ্ট দিয়েছিল। এবছরও মেসির দিকে তাকিয়ে আমরা।” তিনি আরও জানালেন, দু’দেশের ফুটবল ক্রেজে মেসি ক্যাটালিস্ট মাত্র।
“আমাদের সময় দিয়েগো মারাদোনা। এখন জেন ওয়াইয়ের মেসি। উন্মাদনাটা কিন্তু সেই একই আছে। বিশ্বকাপ ঘিরে সব দেশের সীমান্তের কাঁটাতার অকেজো হয়েছে। ২০১৮-য় দাঁড়িয়ে এর চেয়ে খুশির কিছু হয় না,” বললেন বাংলাদেশের মেহের আফরোজ শাওন।রাজশাহী ইউনিভারসিটির ছাত্র আবিদ আহসান রূপমের কথায়, “ইদের খুশি কাটতে না কাটতেই বিশ্বকাপ হাজির। আর ফুটবল ঘিরে দেশের মানুষের আবেগ সত্যিই দেখার মতো। আর গোটাটাই ওই একটা প্লেয়ারকে নিয়ে। লিও মেসি। হয়তো ওঁর শেষ বিশ্বকাপ এটা। সেই জন্য মানুষজন একটু বেশি ইমোশনাল।”
বাংলাদেশের ফিল্ম ডিরেক্টর গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেছেন, “আজকাল সবাই ক্রিকেটের দিকে একটু বেশি ঝোঁকে। কিন্তু বিশ্বকাপ এমন একটা ইভেন্ট সারা বিশ্ববাসী মেতে থাকেন এই নিয়ে। তবে দুই বাংলায় আর্জেন্টিনাকে নিয়ে উন্মাদনার নেপথ্যে অবশ্যই দিয়েগো মারাদোনা।”
ফুটবল নিয়ে সম্প্রীতির বার্তা শোনা গেল টিম ইন্ডিয়ার মিডফিল্ডার মহম্মদ রফিকের গলাতেও। তিনি জানালেন, “আমিও মেসির ফ্যান। নিজে ফুটবলার হয়ে বলতে পারি, ফুটবল এবং মেসিকে নিয়ে মানুষের মধ্যে এই আবেগ সত্যিই গর্ব করার মতো।” আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। রাত সাড়ে এগারোটায় ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন লিওনেল মেসি। যাঁর জন্য আজ বাজি ধরেছেন স্বয়ং মারাদোনা। মেসি কেমন পারফর্ম করছেন, সেদিকে তাকিয়ে থাকবে বিশ্ববাসী। কিন্তু তার থেকেও অনেক উপরে এই ‘মেসি-আবেগ’। এহেন মেসির জন্য বাঙালি পাগল হবে না তো আর কার জন্য হবে!
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০